কবিতা

আমি যদি হতাম

আমি যদি হতাম বনহংস; বনহংসী হতে যদি তুমি; কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারে ধানক্ষেতের কাছে ছিপছিপে শরের ভিতর এক নিরালা নীড়ে; তাহলে আজ এই ফাল্পুনের রাতে ঝাউয়ের শাখার পেছনে

আমাকে তুমি

আমাকে তুমি দেখিয়েছিলে একদিন; মস্ত বড় ময়দান — দেবদারু পামের নিবিড় মাথা — মাইলের পর মাইল; দুপুরবেলার জনবিরল গভীর বাতাস দূর শূন্যে চিলের পাটকিলে ডানার ভিতর অস্পষ্ট হয়ে হারিয়ে যায়;

আবহমান

পৃথিবী এখন ক্রমে হতেছে নিঝুম। সকলেরই চোখ ক্রমে বিজড়িত হ’য়ে যেন আসে; যদিও আকাশ সিন্ধু ভ’রে গেল অগ্নির উল্লাসে; যেমন যখন বিকেলবেলা কাটা হয় ক্ষেতের গোধূম চিলের কান্নার মতো শব্দ

অবশেষে

এখানে প্রশান্ত মনে খেলা করে উঁচু উঁচু গাছ। সবুজ পাতার পরে যখন নেমেছে এসে দুপুরের সূর্যের আঁচ নদীতে স্মরণ করে একবার পৃথিবীর সকাল বেলাকে। আবার বিকেল হলে অতিকায় হরিণের মতো

অন্ধকার

গভীর অন্ধকারের ঘুম থেকে নদীর চ্ছল চ্ছল শব্দে জেগে উঠলাম আবার; তাকিয়ে দেখলাম পান্ডুর চাঁদ বৈতরণীর থেকে তার অর্ধেক ছায়া গুটিয়ে নিয়েছে যেন কীর্তিনাশার দিকে। ধারসিড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়েছিলাম

অঘ্রান প্রান্তরে

‘জানি আমি তোমার দু’চোখ আজ আমাকে খোঁজে না আর পৃথিবীর’ পরে- বলে চুপে থামলাম, কেবলি অশত্থ পাতা পড়ে আছে ঘাসের ভিতরে শুকনো মিয়োনো ছেঁড়া;- অঘ্রান এসেছে আজ পৃথিবীর বনে; সে

বনলতা সেন

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে, সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;

মোহর্‌রম

নীল সিয়া আসমা লালে লাল দুনিয়া,– ‘আম্মা ! লাল তেরি খুন কিয়া খুনিয়া’। কাঁদে কোন্ ক্রদসী কারবালা ফোরাতে, সে কাঁদনে আঁসু আনে সীমারেরও ছোরাতে ! রুদ্র মাতম্ ওঠে দুনিয়া দামেশকে–

বধূ-বরণ

এতদিন ছিলে ভূবনের তুমি আজ ধরা দিলে ভবনে, নেমে এলে আজ ধরার ধূলাতে ছিলে এতদিন স্বপনে! শুধু শোভাময়ী ছিলে এত দিন কবির মানসে কলিকা নলিন, আজ পরশিলে চিত্ত- পুলিন বিদায়

দারিদ্র্য

হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান্‌। তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীষ্টের সম্মান কন্টক-মুকুট শোভা।-দিয়াছ, তাপস, অসঙ্কোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস; উদ্ধত উলঙ্গ দৃষ্টি, বাণী ক্ষুরধার, বীণা মোর শাপে তব হ’ল তরবার! দুঃসহ

গত ৩ মাসের...