কবিতা

বুকে তব সুরপরী বিরহবিধুর গেয়ে যায়, হে জলধি, মায়ার মুকুর! কোন্‌ দূর আকাশের ময়ুর-নীলিমা তোমারে উতলা করে! বালুচরসীমা উলঙ্ঘি তুলিছ তাই শিরোপা তোমার,- উচ্ছৃঙ্খল অট্টহাসি-তরঙ্গের বাঁকা তলোয়ার! গলে মৃগতৃষ্ণাবিষ, মারীর

চোখদুটো ঘুমে ভরে ঝরা ফসলের গান বুকে নিয়ে আজ ফিরে যাই ঘরে! ফুরায়ে গিয়েছে যা ছিল গোপন- স্বপন কদিন রয়! এসেছে গোধূলি গোলাপীবরণ-এ তবু গোধূলি নয়! সারাটি রাত্রি তারাটির সাথে

ওরে কিশোর, বেঘোর ঘুমের বেহুঁশ হাওয়া ঠেলে পাতলা পাখা দিলি রে তোর দূর-দুরাশায় মেলে! ফেনার বৌয়ের নোন্‌তা মৌয়ের মদের গেলাস লুটে, ভোর-সাগরের শরাবখানায়–মুসল্লাতে জুটে হিমের ঘুণে বেড়াস খুনের আগুনদানা জ্বেলে!

কুহেলির হিমশয্যা অপসারি ধীরে রূপময়ী তন্বী মাধবীরে ধরণী বরিয়া লয় বারে-বারে-বারে! -আমাদের অশ্রুর পাথারে ফুটে ওঠে সচকিতে উৎসবের হাসি,- অপরূপ বিলাসের বাঁশি! ভগ্ন প্রতিমারে মোরা জীবনের বেদীতটে আরবার গড়ি, ফেনাময়

যে কামনা নিয়ে মধুমাছি ফেরে বুকে মোর সেই তৃষা! খুঁজে মরি রূপ, ছায়াধূপ জুড়ি, রঙের মাঝারে হেরি রঙডুবি! পরাগের ঠোঁটে পরিমলগুঁড়ি- হারায়ে ফেলি গো দিশা! আমি প্রজাপতি-মিঠা মাঠে মাঠে সোঁদালে

‘মমী’র দেহ বালুর তিমির জাদুর ঘরে লীন- ‘স্ফীঙ্ক্‌স-দানবীর অরাল ঠোঁটের আলাপ আজি চুপ! ঝাঁ ঝাঁ মরুর ‘লু’য়ের ফুঁয়ে হচ্চে বিলীন-ক্ষীণ মিশর দেশের কাফন্‌ পাহাড়-পিরামিতের স্তুপ! নিভে গেছে ঈশিশের রই বেদীর

হাড়ের মালা গলায় গেঁথে – অট্টহাসি হেসে উল্লাসেতে টলছে তারা,—জ্বলছে তারা খালি ! ঘুরছে তারা লাল মশানে কপাল—কবর ঘেঁসে , বুকের বোমাবারুদ দিয়ে আকাশটারে জ্বালি পাঁয়জোরে কাল মহাকালের পাঁজর ফেড়ে

ধূম্র তপ্ত আঁধির কুয়াশা তরবারি দিয়ে চিরে সুন্দর দূর মরীচিকাতটে ছলনামায়ার তীরে ছুটে যায় দুটি আঁখি! -কত দূর হায় বাকি! উধাও অশ্ব বগ্লাবিহীন অগাধ মরুভূ ঘিরে পথে পথে তার বাধা

চুলিচালা সব ফেলেছে সে ভেঙে, পিঞ্জরহারা পাখি! পিছুডাকে কভু আসে না ফিরিয়া, কে তারে আনিবে ডাকি? উদাস উধাও হাওয়ার মতন চকিতে যায় সে উড়ে, গলাটি তাহার সেধেছে অবাধ নদী-ঝর্ণার সুরে;

জয়, তরুণের জয়! জয় পুরোহিত আহিতাগ্নিক, জয় জয় চিন্ময়! স্পর্শে তোমার নিশা টুটেছিল, উষা উঠেছিল জেগে পূর্ব তোরণে, বাংলা আকাশে , অরুণ-রঙিন মেঘে; আলোকে তোমার ভারত, ইশয়া-জগৎ গেছিল রেঙে। হে