কবিতা

যে শালিখ মরে যায় কুয়াশায়

যে শালিখ মরে যায় কুয়াশায়-সে তো আর ফিরে নাহি আসে: কাঞ্চনমালা যে কবে ঝরে গেছে;-বনে আজো কলমীর ফুল ফুটে যায়-সে তবু ফেরে না, হায়;-বিশালাক্ষ্মী: সেও তো রাতুল চরণ মুছিয়া নিয়া

যদি আমি ঝরে যাই একদিন

যদি আমি ঝরে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায়; যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে-ক্ষেতে ম্লান চোখ বুজে, যখন চড়াই পাখি কাঁঠালীচাপাঁর নীড়ে ঠোঁট আছে গুজে, যখন হলুদ পাতা মিশিতেছে খয়েরি পাতায়,

যতদিন বেঁচে আছি

যতদিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে অপরাজিতার মতো নীল হয়ে-আরো নীল-আরো নীল হয়ে আমি যে দেখিতে চাই;- সে আকাশ পাখনায় নিঙড়ায়ে লয়ে কোথায় ভোরের বক মাছরাঙা উড়ে যায়

যখন মৃত্যুর ঘুমে শুয়ে রবো

যখন মৃত্যুর ঘুমে শুয়ে রবো — অন্ধকারে নক্ষত্রের নিচে কাঁঠাল গাছের তলে হয়তো বা ধলেশ্বরী চিলাইয়ের পাশে — দিনমানে কোনো মুখ হয়তো সে শ্মশানের কাছে নাহি আসে — তবুও কাঁঠাল

মানুষের ব্যথা আমি পেয়ে গেছি

মানুষের ব্যথা আমি পেয়ে গেছি পৃথিবীর পথে এসে — হাসির আস্বাদ পেয়ে গেছি; দেখেছি আকাশে দূরে কড়ির মতন শাদা মেঘের পাহাড়ে সূর্যের রাঙা ঘোড়া; পক্ষিরাজের মতো কমলা রঙের পাখা ঝাড়ে

মনে হয় একদিন আকাশের

মনে হয় একদিন আকাশের শুকতারা দেখিব না আর; দেখিব না হেলেঞ্চার ঝোপ থেকে এক ঝাড় জোনাকি কখন নিভে যায়; দেখিব না আর আমি পরিচিত এই বাঁশবন, শুকনো বাঁশের পাতা-ছাওয়া মাটি

তোমার বুকের থেকে একদিন চলে যাবে

তোমার বুকের থেকে একদিন চলে যাবে তোমার সন্তান বাংলার বুক ছেড়ে চলে যাবে; যে ইঙ্গিতে নক্ষত্রও ঝরে, আকাশের নীলাভ নরম বুক ছেড়ে দিয়ে হিমের ভিতরে ডুবে যায়, – কুয়াশায় ঝ’রে

ভেবে ভেবে ব্যথা পাব

ভেবে ভেবে ব্যথা পাব: মনে হবে, পৃথিবীর পথে যদি থাকিতাম বেঁচে দেখিতাম সেই লক্ষ্মীপেঁচাটির মুখ যারে কোনোদিন ভালো করে দেখি নাই আমি — এমনি লাজুক পাখি, — ধূসর ডানা কি

ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ দুপুর

ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ-দুপুর — চিল একা নদীটির পাশে জারুল গাছের ডালে বসে বসে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে; পায়রা গিয়েছে উড়ে তবু চরে, খোপে তার; — শসাতাটিকে, ছেড়ে গেছে

বাতাসে ধানের শব্দ শুনিয়াছি

বাতাসে ধানের শব্দ শুনিয়াছি — ঝরিতেছে ধীরে ধীরে অপরাহ্নে ভরে; সোনালি রোদের রঙ দেখিয়াছি — দেহের প্রথম কোন প্রেমের মতন রূপ তার — এলোচুল ছড়ায়ে রেখেছ ঢেকে গূঢ় রূপ —

গত ৩ মাসের...