কবিতা

কত ভোরে—দু’-পহরে

কত ভোরে—দু’-পহরে – সন্ধ্যায় দেখি নীল শুপুরির বন বাতাসে কাঁপিছে ধীরে;—খাঁচার শুকের মতো গাহিতেছে গান কোন এক রাজকন্যা—পরনে ঘাসের শাড়ি—কালো চুলে ধান বাংলার শালিধান—আঙিনায় ইহাদের করেছে বরণ, হৃদয়ে জলের গন্ধ

কত দিন ঘাসে আর মাঠে

কত দিন ঘাসে আর মাঠে আমার উৎসাহে প্রাণ কাটে খড় খুঁটি—অশ্বথ্থের শুকনো পাতা চুপে উল্টাই দু’একটা পোকা যদি পাই আমারে চেনো না নাকি: আমি যে চড়াই। কতদিন তোমাদের ভোরের উঠানে

কখন সোনার রোদ নিভে গেছে

কখন সোনার রোদ নিভে গেছে — অবিরল শুপুরির সারি আঁধারে যেতেছে ডুবে — প্রান্তরের পার থেকে গরম বাতাস ক্ষুধিত চিলের মতো চৈত্রের এ অন্ধকার ফেলিতেছে শ্বাস; কোন চৈত্রে চলে গেছে

এখানে প্রাণের স্রোত আসে যায়

এখানে প্রাণের স্রোত আসে যায় — সন্ধ্যায় ঘুমায় নীরবে মাটির ভিটের ‘পরে — লেগে থাকে অন্ধকারে ধুলোর আঘ্রাণ তাহাদের চোখে — মুখে; — কদমের ডালে পেঁচা কথা কবে — কাঁঠালের

এখানে ঘুঘুর ডাকে অপরাহ্নে

এখানে ঘুঘুর ডাকে অপরাহ্নে শান্তি আসে মানুষের মনে; এখানে সবুজ শাখা আঁকাবাঁকা হলুদ পাখিরে রাখে ঢেকে; জামের আড়ালে সেই বউকথাকওটিরে যদি ফেল দেখে একবার — একবার দু’পহর অপরাহ্নে যদি এই

এখানে আকাশ নীল

এখানে আকাশ নীল—নীলাভ আকাশ জুড়ে সজিনার ফুল ফুটে থাকে হিম শাদা—রং তার আশ্বিনের আলোর মতন; আকন্দফুলের কালো ভীমরুল এইখানে করে গুঞ্জরণ রৌদ্রের দুপুর ভ’রে;—বারবার রোদ তার সুচিক্বণ চুল কাঁঠাল জামের

একদিন যদি আমি

একদিন যদি আমি কোনো দূর বিদেশের সমুদ্রের জলে ফেনার মতন ভাসি শীত রাতে — আসি নাকো তোমাদের মাঝে ফিরে আর — লিচুর পাতার ‘পরে বহুদিন সাঁঝে যেই পথে আসা-যাওয়া করিয়াছি,

একদিন পৃথিবীর পথে

একদিন পৃথিবীর পথে আমি ফেলিয়াছি, আমার শরীর নরম ঘাসেন পথে হাঁটিয়াছে; বসিয়াছে ঘাসে দেখিয়াছে নক্ষত্রের জোনাকিপোকার মতো কৌতুকের অমেয় আকাশে খেলা করে; নদীর জলের গন্ধে ভরে যায় ভিজে স্নিগ্ধ তীর

একদিন জলসিড়ি নদীটির পারে

একদিন জলসিড়ি নদীটির পারে এই বাংলার মাঠে বিশীর্ণ বটের নিচে শুয়ে রবো-পশমের মতো লাল ফুল ঝরিবে বিজন ঘাসে, বাঁকা চাঁদ জেগে রবে,-নদীটির জল বাঙারি মেয়ের মতো বিশালাক্ষ্মী মন্দিরের ধূসর কঁপাটে

একদিন কুয়াশার এই মাঠে

একদিন কুয়াশার এই মাঠে আমারে পাবে না কেউ খুঁজে আর, জানি; হৃদয়ের পথ চলা শেষ হল সেই দিন — গিয়েছে যে শান — হিম ঘরে, অথবা সান্ত্বনা পেতে দেরি হবে

গত ৩ মাসের...