কলকাতার দিনগুলি ০৬


কলকাতার দিনগুলি


ষষ্ঠ পর্ব


আমার ভীষণ প্রিয় মানুষ এবং বাংলা ভাষার শক্তিশালী লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিশালাকৃতির ঐতিহাসিক ঘটনানির্ভর উপন্যাসগুলো পড়ে কলেজ-জীবনে আমি রীতিমতো তাঁর ভাবশিষ্য হয়ে গিয়েছিলাম। অনেক বন্ধু তা আঁচ করতে পেরে আমাকে ক্ষেপাত; কখনো বলত, লিখলে তুই হবি আমাদের সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিংবা সমরেশ মজুমদার। তখন থেকে ঔপন্যাসিক হওয়ার ব্যাপারে আমার অসম্ভব একটি ইচ্ছে জন্মে গিয়েছিল। স্বপ্ন দেখতাম, ভবিষ্যতে আমিও এমন বড় বড় উপন্যাস লিখব।

দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের সামনে দিয়ে হেঁটে গেলাম। হাঁটতে হাঁটতে বারবার পেছন ফিরে দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম এই ভবনের কোনো একটি ফ্ল্যাটে বসে রাত জেগে তিনি লিখেছেন এসব মহান উপন্যাস। মনের কল্পনায় দেখছিলাম সেই সব দৃশ্য—তিনি নিমগ্ন হয়ে লিখে চলেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনো রেফারেন্স হিসেবে শেলফে থাকা কোনো বই উল্টেপাল্টে দেখছেন, পড়ছেন গভীর মনোযোগে। তারপর আবার ফিরে যাচ্ছেন লেখার টেবিলে।

সোজা রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে যেতেই পৌঁছে গেলাম সার্কুলার রোডে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহী সেই ঐতিহাসিক বাড়িতে। মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে বাড়িটি খুঁজে পেতে বেশি বেগ পেতে হয়নি।

আমি জানতাম বাড়িটি এক মাড়োয়ারি ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন। তিনি কিনেছেন বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে। ব্যবসায়ী ভদ্রলোকটির নাম অরুণ দাশগুপ্ত। গেটে ঢুকতে দারোয়ান বাধা দিল। তাকে পরিচয় দিলেও সে কোনোভাবে ভেতরে যেতে দেবে না। জানাল—ঢোকার অনুমতি নেই। কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না!

হঠাৎ বাড়ির মালিক দেবদূতের মতো আমার সামনে উপস্থিত। আমার ইচ্ছের কথা জানাতেই তিনি ড্রয়িংরুমে রুমে নিয়ে বসালেন। তিনি নিজের পরিচয় দিলেন এভাবে যে, তিনি অসীম দাশগুপ্ত, গৃহস্বামী অরুণ দাশগুপ্তের নাতি। খবর পাঠালেন ওপরে। কিছুক্ষণ পর নেমে এলেন প্রৌঢ় গৃহকর্তা।

আমার সাংবাদিক পরিচয় শুনে এবং ক্যামেরা দেখে অরুণ দাশগুপ্ত দ্বিতীয়বার কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করলেন। তিনি জানালেন—কয়েক দিন আগে এক সাংবাদিক এ বাড়ির ওপর রিপোর্ট করেছে। তাঁর আশঙ্কা বাংলাদেশ সরকার এ বাড়িটি জাদুঘর বানানোর জন্য কিনে নিতে পারে। আমি এ কথা তাঁকে জানাতে পারিনি যে, প্রথম আলোতে ওই সংবাদ দেখেই তো আমি এ বাড়ির ঠিকানা পেয়েছি।

ভদ্রলোকের ইতস্তত ভাব দেখে বের হয়ে এলাম। সাড়ে নয়টা নাগাদ হোটেলে ফিরে দেখি দেবাশীষদা এসে হাজির। খোকনও বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। দেরি না করে বেরিয়ে পড়ি। সেদিনের মতো শুরু হয় আমাদের কলকাতা অভিযান।

তিনজন একটি ট্যাক্সি ক্যাব নিয়ে সোজা চলে এলাম কলকাতার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র নিকো পার্কে। যেদিকে তাকাই বিনোদনের উপাদান ছড়ানো। মূল গেটে প্রবেশের টিকিট ছাড়াও প্রতিটি রাইডে চড়ার জন্য কাটতে হয় আলাদা আলাদা টিকিট। টিকিটের দাম বেশ চড়া মনে হলো। বেছে বেছে উপভোগ করলাম ট্রেন, স্পিডবোট ও অন্ধকার গুহায় নৌকা ভ্রমণ। নৌকায় ভ্রমণের সময় ভয় পেয়েছিলাম গুহার ভেতরে ভূত দেখে।

নিকো পার্ক থেকে বের হয়ে চলে এলাম সায়েন্স সিটি বা বিজ্ঞান নগরীতে। প্রবেশ করে থমকে দাঁড়াই; তারপর খুব ওপরে দড়ির সঙ্গে বাঁধা একটি বক্সে আমরা বসে পড়ি, যার এক মাথায় উঠি এবং অন্য মাথায় নামি। জানতে পারি, এর নাম রোপওয়ে। পুরো কলকাতা শহরটাকে ওপর থেকে একসঙ্গে দেখতে পেলাম।

তারপর কুমিরের মুখের আদলে তৈরি একটি বড় দরজা দিয়ে ঢুকলাম ইবলিউশান পার্কে, যেখানে মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে কৃত্রিম জীবজন্তু দিয়ে দেখানো হয়। ভাষ্যকার ইংরেজিতে ধারাভাষ্যের মাধ্যমে প্রতিটি জিনিসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। ডাইনোসর যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত সব প্রাণীর দেহের মাধ্যমে সময়গুলোকে তুলে ধরা হয়। একে একে উপভোগ করলাম প্রতিটি আইটেম। সেই সব স্মৃতি কখনো ভোলার নয়।

সায়েন্স সিটি পর্ব শেষে বাসে চড়ে পৌঁছে যাই কালীঘাট। কালীঘাট মেট্রো স্টপিজ থেকে পাতাল রেলে চলে এলাম উত্তর কলকাতার গিরীশ পার্কে। উদ্দেশ্য জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে বেড়ানো।

সরু রাস্তা, রাস্তার মাঝখানে ট্রামলাইন, দুই পাশে উঁচু উঁচু পুরোনো জীর্ণ দালানকোঠা, মানুষের ভিড় আর চিৎকার-চেঁচামেচি, হিন্দুস্তানি (হিন্দি) কথাবার্তা—সব মিলিয়ে জোড়াসাঁকোকে মনে হচ্ছিল উত্তর ভারতের কোনো শহর; মোটেও কলকাতা বলে মনে হচ্ছিল না। দুঃখ হচ্ছিল, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রধান কর্ণধারের জন্মস্থানের এ অবস্থা দেখে।

সীমাহীন কৌতূহল নিয়ে যখনই ঠাকুরবাড়িতে প্রবেশ করতে যাব, তখন দারোয়ান আমাদের পথ আটকায়। হিন্দিতে অনুরোধ করে প্রবেশের টিকিট কাটার জন্য। ওপরে তাকিয়ে দেখি বড় বড় অক্ষরে লেখা—‘রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’। পরে জানলাম, বাড়িটি বর্তমানে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি জাদুঘর।

এই বাড়িতে জন্মেছিলেন বিশ্ববরেণ্য বাঙালি প্রতিভা ও নোবেল বিজয়ী বাঙালি সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশাল বাড়িটি দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়াই। উৎসুক দৃষ্টিতে তাকাই চারপাশে। বাড়িতে ঢুকতেই হাতের বাঁয়ে বিশাল এক স্থায়ী মঞ্চ। তারপর সামনে পড়ে প্রকাণ্ড সুসজ্জিত মাঠ, বড় বড় অনেক দালান, সামনে পেছনে মাঝখানে পাশে প্রচুর খালি জায়গা। সব দেখে আমি যারপরনাই বিস্মিত।

রবীন্দ্রনাথের আত্মজীবনীতে আমি যা পড়েছি এবং তাতে আমার যে কল্পনা ছিল, তার চেয়ে এসব যেন অনেক অনেক বেশি। রবীন্দ্রনাথের বসার ঘর, লেখার ঘর, শোবার ঘর, খাবার ঘর—এমনকি যে ঘরে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন—সে ঘরও যখন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলাম, বারবার শিহরিত হচ্ছিলাম উত্তেজনায়। আর তখন ঊনবিংশ শতাব্দীর কবিগুরুর ছেলেবেলার দিনগুলো উঁকি দিচ্ছিল আমার মনে।

এখানে শিশু মহাপুরুষ খেলা করতেন, দাঁড়িয়ে থাকতেন বারান্দার রেলিং ধরে। হেমন্তের এই খোলা ছাদে পড়া ফাঁকি দেয়ার জন্য জ্বর বাধানোর অজুহাতে ভেজা মোজা পরে শুয়ে থাকতেন। বাইরের পৃথিবীকে দেখতেন এ জানালার ফাঁক দিয়ে।

কল্পনায় দেখতে লাগলাম—ভীরু, লাজুক, ঘরকুনো শিশুটি কীভাবে ধীরে ধীরে শামুকের খোলসের মতো এ বাড়ি থেকে বের হয়ে পৃথিবী জয় করলেন। আর বাঙালির জন্য বয়ে আনলেন অতুল সম্মান; বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরলেন বাঙালির আত্মপরিচয়।

দেখলাম ভেতর মহলের ঠাকুর দালান, যেখানে একবার সরস্বতী পুজোয় রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় এক লক্ষ টাকা ব্যয় করেছিলেন। কথিত আছে, পরবর্তী সময়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রবর্তিত একেশ্বরবাদী ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর ঠাকুরবাড়িতে সব ধরনের দেবদেবীর পূজা নিষিদ্ধ হয়ে যায়।

ওখানে ছিল রবীন্দ্রনাথের স্বকণ্ঠে গাওয়া গান শোনানোর ব্যবস্থা। তার জন্য বাড়তি দশ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হবে। এমন সুবর্ণ-সুযোগ কেন হাতছাড়া করব! অগত্যা গান শুনলাম টিকেট কেটে। তাঁর গলা যে মেয়েলি ধরনের ছিল, তা বুঝতে পারলাম। তবু কণ্ঠস্বর শোনার এমন ব্যবস্থা রাখায় কর্তৃপক্ষের প্রতি মনে মনে কৃতজ্ঞতা বোধ করলাম।

আরো একটি কারণে এ বাড়ির প্রতি আমার প্রচণ্ড শ্রদ্ধা ছিল। তা হলো, ঠাকুরবাড়িতে ওই সময়ের শ্রেষ্ঠ বাঙালিদের আনাগোনা। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, বিবেকানন্দ—সবার পদধূলি এ বাড়িতে পড়েছে। ভারত-বিখ্যাত ওস্তাদরা এই বাড়িতে ছেলেমেয়েদের গান শেখাতে আসতেন; এমনকি কয়েকজন বাঁধা ওস্তাদও ছিলেন। এই বাড়ি থেকে বের হতো ভারতী, সাধনা, বালকসহ বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা।

তা ছাড়া কয়েক পুরুষ ধরে এ বাড়িটি উপমহাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি-রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। একই পরিবারের কতগুলো মানুষ জগদ্বিখ্যাত—দ্বারকানাথ ঠাকুর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্যোতিরিন্দ্রিনাথ ঠাকুর, স্বর্ণকুমারী দেবী, ইন্দিরা দেবী, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা তো বলাই বাহুল্য। এমন একটি তাৎপর্যমণ্ডিত স্থানে আসতে পেরেছি বলে নিজেকে খুব ধন্য মনে হলো।

জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে বের হয়ে বাসে চড়ে চলে এলাম দক্ষিণেশ্বরে। ক্ষুধায় পেট জ¦লছে। অগত্যা কাছের একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকে লুচি, সন্দেশ ও মিষ্টি খেলাম।

মন্দিরে সেদিন মানুষের ভিড় ছিল প্রচণ্ড রকমের। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি বলে মানুষজন উপচে পড়ছে। কোনোরকমে ভিড় ঠেলে আমরা ভেতরে প্রবেশ করলাম। মন্দিরের কারুকার্য আর নির্মাণশৈলী দেখে আমার বিস্ময়ের সীমা ছিল না। অবাক চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি চারপাশ। আর মুগ্ধতায় ভরে ওঠে মন।

মন্দিরের সদর দরজার এক পাশে ছিল মানবতাবাদী মহান পুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কক্ষ। মুহূর্তে ফিরে গেলাম ঊনবিংশ শতাব্দীর সেই সময়টাতে, যখন বাঙালি যুবক নরেন্দ্রনাথ দত্ত রামকৃষ্ণের মহান আদর্শ এবং উচ্চ দার্শনিক চিন্তায় প্রভাবিত হয়ে স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে উঠছিলেন। ঘর-সংসার ফেলে গুরুর সান্নিধ্যে চলে এসেছিলেন মানবতার সেবা করার জন্য নিজের গতানুগতিক জীবন বিসর্জন দিয়ে।

উদ্ভ্রান্ত যুবা নরেন দত্তের বিবেকানন্দ হয়ে ওঠার ঘটনা, দলে দলে মানুষের রামকৃষ্ণ সংস্পর্শে আসা, একদল গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী তৈরি হওয়া—সব মিলিয়ে আমি একটা ঘোরের জগতে প্রবেশ করলাম। মনে পড়ে গেল বিবেকানন্দের সেই প্রার্থনা—‘মা, তুমি আমাকে জ্ঞান দাও, আমাকে বিবেক দাও, আমাকে বৈরাগ্য দাও।’ তুচ্ছ ভাত কাপড়ের চিন্তা বাদ দিয়ে জ্ঞান-বিবেক-বৈরাগ্যের সাধনায় আত্মনিয়োগ করার স্বামীজির প্রতিজ্ঞা আমাকেও স্পর্শ করে তৎক্ষণাৎ।

স্বামীজির বিভিন্ন ত্যাগের মন্ত্র দ্বারা প্রথম যৌবনে আমি প্রভাবিত হয়েছিলাম; বিভোর ছিলাম জীবনকে মানবতার কল্যাণে ব্যয় করার স্বপ্নে। খুব উৎসাহ নিয়ে সবকিছু দেখি। নদীর এপারে দক্ষিণেশ্বর মন্দির আর ওপারে বেলুড় মঠ। মঠ ও মন্দিরের স্থাপত্য নির্মাণশৈলী আমাকে এত বেশি মুগ্ধ করে যে মাঝ গঙ্গায় নৌকার ওপর থেকেও কিছু ছবি নিলাম। নদীর তীব্র স্রোতের কারণে একটু ভয় ভয়ও করছিল।

নদী পার হয়ে বেলুড় মঠে এসে আমি অবাক। মঠের বিশালতা, প্রাচুর্য, লোকের আনাগোনা আমাকে বিস্মিত করে। এখানে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ। তাই ছবি তোলা সম্ভব হলো না। কিন্তু মনের ক্যামেরায় ছবি তুলেছি অনেক, যা আজও মনে ভাসে!

দেখতে দেখতে ভাবি, এ বিশাল কর্মযজ্ঞ স্বামী বিবেকানন্দের কত ত্যাগের ফল। শুধু কি তিনি একা? তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আরো অনেক স্বেচ্ছাসেবী, যাঁদের অক্লান্ত সাধনা আর কঠিন পরিশ্রমে গড়ে উঠেছিল এই বিশাল মঠ। পৃথিবীতে যুগে যুগে মহান কাজগুলো এভাবেই হয়েছে। একজন স্বপ্ন দেখেছেন, অন্যদের মধ্যে সে স্বপ্নকে চারিয়ে দিয়েছেন। তারপরই গড়ে উঠেছে বিশাল সৌধ।

এখানে বসেই স্বামী বিবেকানন্দ ধ্যান করতেন; স্বপ্ন দেখতেন ভারতবর্ষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার। কল্পনা করতেন স্বাধীন দেশের ছবি। দলে দলে উদার ও মহৎপ্রাণ ছেলেরা তাঁর কাছ থেকে দীক্ষা নিতেন ত্যাগের মন্ত্রে; প্রতিজ্ঞাবব্ধ হতেন মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করায়।

মঠের ভেতর-বাহির পরিদর্শন করে কিছুক্ষণ চত্বরে বসে চারজন মিলে আড্ডা দিলাম।

বিকেল শেষ হতে চলল। তাই দেরি না করে বেলুড় মঠের গেট থেকে বাসে চাপি; সোজা চলে আসি কলেজ স্ট্রিটে। একটা বিষয় আমি এখানে খেয়াল করলাম, তাহলো সর্বত্র তিনটি ভাষার ব্যবহার; বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি, যেমন—পানির কলের সামনে বাংলায় লেখা জল, হিন্দিতে পানি আর ইংরেজিতে ওয়াটার।

(চলবে…)

 


প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব তৃতীয় পর্ব চতুর্থ পর্ব

পঞ্চম পর্ব ষষ্ঠ পর্ব সপ্তম পর্ব অষ্টম পর্ব


 

বি. দ্র. দর্পণে প্রকাশিত সকল লেখার স্বত্ব দর্পণ ম্যাগাজিন কর্তৃক সংরক্ষিত। দর্পণ থেকে কোনো লেখার অংশ অন্যত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে দর্পণের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।

একই ধরনের লেখা

দর্পণে লিখুন

গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, মুভি পর্যালোচনা, বই আলোচনা, ভ্রমণ অথবা দর্পণের যে কোনো বিভাগে

লেখা পাঠানোর ইমেইল

editor@dorpon.com.bd
নিয়মাবলী জানতে ক্লিক করুন
ADVERTISEMENT
মাসওয়ারি
কবিতা

পৃথিবীর সব চিৎকার চাপা পড়ে যায়

তরুন ইউসুফের দুটি কবিতা মগজের ফ্রিজে লাশের স্মৃতি ফ্রিজের ইলিশের মতো লাশের স্মৃতি জমাই মগজের ডিপফ্রিজে। ছোট-বড়, মাঝারি, বুড়ো পোড়া,

কবিতা

ঝুলে থাকা বাঁদুর

জেসিকা আক্তার জেসির দুটি কবিতা ঝুলে থাকা বাঁদুর জ্বরে পুড়ে যায় হৃৎপিণ্ড বুকের ভিতর তবুও যেন বাহিরে সবকিছু ঠিকঠাক ভিষণ

গল্প

তরুণ শিক্ষক

‘আমার সাথে এতো ফ্রেন্ডলি কথা বলছেন। এতে আপনার রেপুটেশন কমে যাবে না?’, তিথির আচমকা প্রশ্নে রাহুল একটু থামে। মেসেজের উত্তর

শিল্প ও সংস্কৃতি

জয়নুল আবেদিনের ২০ চিত্রকর্ম

এদেশে চিত্রশিল্পীদের মধ্যে যে কয়েকজন তাদের চিত্রকর্ম দিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষদের কাছে পরিচিতি লাভ করেছেন তাঁদের মধ্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন অন্যতম।