অলোক আচার্য
অলোক আচার্য। বসবাস করেন পাবনায়। তিনি একজন সাংবাদিক এবং লেখক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প ও প্রবন্ধ লিখে থাকেন তিনি।
অলোক আচার্য

পাবনার শিতলাই জমিদার বাড়ি

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

আলোক আচার্যের ভ্রমণ

পাবনার শিতলাই জমিদার বাড়ি


যাদের ঘুরে বেড়ানো নেশার মতো– বিশেষ করে কোনো প্রাচীন জমিদার বাড়ি, যদি কাউকে সুবিশাল শান্ত পুকুরের জল কবিতার মতো টেনে নেয়, হারিয়ে যায় সেই সময়ে– তাহলে আপনি নিঃসন্দেহে ঘুরে আসতে পারেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার শিতলাই জমিদার বাড়ি থেকে।

সেখানে একসময় আলো ঝলমল করতো, পাইক পেয়াদার হাক-ডাক ছিল। এখন সেখানটা নিরব। এই জমিদার বাড়িটির অবস্থান পাবনার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, জমিদার যোগেন্দ্রনাথ মৈত্রেয় প্রায় ১৯০০ শতকের প্রথম দিকে এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন। তবে এই জমিদার বংশের মূল হিসেবে যাকে বিবেচনা করা হয় তিনি জমিদার চাঁদীপ্রসাদ মৈত্রেয়। তারই বংশ পরিক্রমায় যোগেন্দ্রনাথ মৈত্রেয় তার জমিদারী বংশের পূর্ববর্তী জমিদারী এলাকা সিরাজগঞ্জ জেলার শরৎনগর ছেড়ে পাবনা জেলার শিতলাই নামক এলাকার জমিদারী স্থানান্তর করেন। এই জমিদার বাড়িটি তারই নির্মাণ করা।

প্রায় ভগ্নাবশেষটুকু অবশিষ্ট আছে। একসময় যে মন্দির ঘিরে উৎসব হতো এখন সেখানে সুনসান নিরবতা।  আরও অনেক জমিদার বাড়ির মতোই এর অবস্থাও জরাজীর্ণ। জানা যায়, এই বাড়িটিকে ঘিরে রয়েছে প্রায় দুইশ বছরের ইতিহাস। জমিদার বাড়িটি ইন্দো-ইউরোপীয়ান স্থাপত্যশৈলিতে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি দুই তলা বিশিষ্ট। জমিদার বাড়ির পাশে এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো একটি বিশালাকার আয়তনের দীঘি। যার টলটলে জল আপনাকে মুগ্ধ করবেই। যার পাশে দাড়ালে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতে হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, যোগেন্দ্রনাথ মৈত্র ছয় পুত্র ও ছয় কন্যা রেখে মৃত্যুবরণ করলে তার প্রথম পুত্র জগদীন্দ্রনাথ মৈত্র বেশ কিছু জনহিতকর কাজ করেন। জানা যায়, দীঘি সংস্কার, খাল খননসহ বাংলা দুর্ভিক্ষের সময় লঙ্গরখানা খোলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি, দাতব্য চিকিৎসালয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ১৩৬৯ বঙ্গাব্দে তার মৃত্যু হয়।

এখন ভাবছেন কীভাবে যাবেন ঐতিহাসিক এই জমিদার বাড়িতে? পাবনা থেকে প্রথমে বাসে পৌঁছাবেন চাটমোহর উপজেলায় এবং সেখান থেকে অটো বা সিএনজিযোগে আপনি ঘুরে আসতে পারেন এই জমিদার বাড়ি থেকে।

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu