মোস্তাফিজ ফরায়েজী
সস্পাদক, দর্পণ ম্যাগাজিন
মোস্তাফিজ ফরায়েজী

গল্প লেখা অনেকটা জীববিজ্ঞানের মতো, বীজ থেকে ফসল উৎপাদনের মতো: জর্জ সন্ডারস

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

জর্জ সন্ডারস আমেরিকান একজন কথাসাহিত্যিক। ইংরেজি সাহিত্যে বর্তমানে যারা ছোটগল্প লেখেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২০১৭ সালে তিনি ‘লিংকন ইন দ্য ব্রাডো’ গ্রন্থের জন্য ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন। তার এই সাক্ষাৎকারটি ব্রিটেনের একটি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে দর্পণের জন্য সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন– মোস্তাফিজ ফরায়েজী।


Image Source: writersandartists.co.uk

আপনার প্রিয় ছোটগল্প কী?
নিকোলাই গোগলের ‘দ্য ওভারকোট’। গল্পটা অনেক মজার এবং একই সাথে বেদনার। আমার মনে হয়, যেমনটি তিনি ভেবেছেন– শুধুমাত্র স্রষ্টাই আমাদের নিয়ে এভাবে ভাবেন।


লেখালিখির বিষয়ে আপনার উপদেশ কী?
আমার একজন ভালো উপদেশদাতা ছিল এই বিষয়ে, তার নাম টোবিয়াস উলফ। সে এক মজার ঘটনা। আমি তার সাথে একটা পার্টিতে গিয়েছিলাম, আমি নিশ্চিত নই, তবে সম্ভবত আমি মাতাল ছিলাম; এমন অবস্থায় আমি বলে বসলাম, ‘আমি তোমাকে একটা কথাই বলতে চাই, আমি এসব বস্তাপঁচা মেকি লেখা আর লিখতে চাই না, আমি এখন সত্যিকারের সাহিত্য লিখছি।’ টোবিয়াস উলফ আমার দিকে তাকিয়ে তার সেরা উপদেশটা আমাকে দিল: ‘কখনো লেখার ম্যাজিকটা হারিও না’। তারপর আমি বললান, ‘হ্যা, অবশ্যই হারাব না’। বাস্তবতা হচ্ছে, সেই কথার পর আমি চলে গেলাম এবং সাত বছর সেই ম্যাজিক হারিয়ে বসে থাকলাম।


আপনি কোথায় লেখালিখি করেন?
এককথায় সব জায়গায়। নিউইয়র্কে আমার লেখালিখি করার একটা আস্তানা আছে, আমি ওখানে যাই। আমার স্ত্রী জায়গাটা যত্ন করে বানিয়েছে, এখন আমার পরিবারের লোকেরা মজা করে বলে, আমি হচ্ছি আমার লেখার আস্তাবলের একমাত্র ঘোড়া। কিন্তু আমি যে কোনো জায়গাতেই লিখি; এমনকি উড়োজাহাজে বসেও। আমার প্রথম বইটি আমার কর্মক্ষেত্রে বসে লেখা, আমি কম্পিউটারের একটা স্ক্রিনে অফিসের কাজের জিনিস রাখতাম, আরেকটি স্ক্রিনে আমার গল্প লিখতাম, এমনও হয়েছে আমি লেখাতে একদম মগ্ন হয়ে গেছি সেসময় অফিসের কেউ চলে আসলে আমি দ্রুত ‘shift F3’ চেপে দিতাম যাতে করে তারা ভাবে আমি বুঝি অফিসের কাজই করছি।


আপনি আপনার লেখার ধারণাগুলো কোথা থেকে পান?
যে কোনো জায়গা থেকেই নিই। আমি খুব ছোট ছোট বিষয় থেকে ধারণাগুলো নিই। ‘সি ওক’ নামে আমার একটা গল্প আছে যেটার ধারণা একটা শপিং মল থেকে পেয়েছিলাম। নিউইয়র্কের সিরাকিউসে দু’জন তরুণীর পাশ দিয়ে আমি হেঁটে যাচ্ছিলাম, তারা খুব উচ্ছ্বাসের সাথে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছিল, আমি কিছুটা হেলে পড়ে শুনলাম, তাদের একজন বলছে #$@&%!

আর তার বান্ধবী বলল, ‘আমি জানি!’ এরপর আমি ভাবলাম, ওয়াও, এটা তো কাব্যের মতো। একদম নতুন ধরনের কাব্য! তাই আমি তাদের পিছু ছাড়লাম না। তারপর আমি বাড়ি গিয়ে তিন পাতার একটা খসড়া লিখলাম, যেটাই অনেকবার পরিমার্জনার পর হয়ে ওঠে ‘সি ওক’। আমার মনে হয়, গল্প লেখা অনেকটা জীববিজ্ঞানের মতো, বীজ থেকে ফসল উৎপাদনের মতো। তুমি একটা ছোট জিনিস থেকে শুরু করবে, পরিচর্যার পর এটা দৈহিকভাবে বেড়ে উঠবে এবং ফসল দেবে। শুরুতে ধারণাটা সম্পর্কে বেশি ভাবার প্রয়োজন নেই, কিন্তু তোমাকে একটা ক্ষুদ্র বিষয় পেতে হবে যেটা তোমাকে কোনো একটা কারণে উচ্ছ্বসিত করে– অথচ কারণটা তোমার জানা নেই।

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu