বর্তমান তরুণরাই আজ প্রশ্ন করছে ইউরোপীয় সভ্যতার সে সব অবদান সত্যি মানবিক ভূমিকা রাখতে পেরেছে কিনা। শিল্প-সাহিত্যে এর প্রমাণ কতটুকু আছে? কারণ নানা অসঙ্গতি তাদের চোখে পড়ে। যেমন একটি প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন মানবিক বিকাশের সময় ভিক্তর হুগোর মতো একজন সাহিত্যিক নিয়তিবাদী হলেন কেন? এক টুকরো রুটি চুরি করার অপরাধে কেন ‘লা মিজারেবল’ (১৮৬২) এর জাঁ ভালজাঁকে জীবনের দীর্ঘকাল জেলে কাটাতে হল? এভাবে কষ্টের ভেতর দিয়ে অতিবাহিত করতে হল তার সারাটা জীবন। ভিক্তর হুগো কি ভালজাঁর সততা ও শ্রমকে অস্বীকার করতে চেয়েছেন? কষ্ট তার নিয়তির লেখা বলেই কি হাজার চেষ্টা করেও এড়ানো যায় নি?
একই প্রশ্ন জাগে মহান রুশ সাহিত্যিক লেভ তলস্তয়ের আনা কারেনিনা প্রসঙ্গেও। কেন আনা কারেনিনা বাঁচতে পারলেন না? আট খণ্ডের বারোশ’ পৃষ্ঠার বিশাল উপন্যাসে অন্তত হাজার পৃষ্ঠা জুড়ে যার দৃপ্ত পদচারণা তাকে কেন এভাবে রেললাইনে মাথা পেতে স্বেচ্ছায় মরতে হল? ভ্রনস্কির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের পরিণতি হিসেবে কি তলস্তয় এমন পরিণতি ঘটালেন? ১৮৭৫-৭৭ সালের মধ্যে তখনও তলস্তয় ঋষি খেতাব লাভ করেন নি। তবে ততদিনে তিনি নীতিবাদী হয়ে উঠেছেন। তাঁর নীতিবোধেরই কি বলি হলেন আনা কারেনিনা? তার মধ্যে ভালোভাবে বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট উপাদান ছিল। আনা শুধু প্রেমপিয়াসী একজন অভিজাত রূপসী নারী ছিলেন না। তার অনেক গুণও দেখিয়েছেন তলস্তয়। সে সব গুণই আজ প্রশ্ন তুলছে লেখকের তৈরি করা সে সবের মূল্য সে সময়ের সমাজ দিতে পারে নি একথা সত্য, লেখক নিজে কি দিতে পেরেছেন? না চেষ্টা করেছেন?
আনা কারেনিনার মৃত্যু এমনভাবে ঘটে যে, পাঠকের কিছু করার থাকে না। পাঠক তার মৃত্যুতে খুশি হতে পারেন না। কারণ তিনি এমন পাপী চরিত্র নন যে তার ধ্বংস কামনা করতে হবে। আবার কষ্টও পান না। কারণ পরিস্থিতি এমন, মৃত্যুই যেন তার অবিসম্ভাবী পরিণতি। এটাই কি তার নিয়তি?
আজকাল উইকপিডিয়াতে সার্চ করলেই জানা যায় তলস্তয়কে কারা প্রভাবিত করেছিলেন। তাদের মধ্যে একজন সাহিত্যিক ও একজন দার্শনিকের নাম সহজেই উঠে আসে। প্রথম জন চার্লস ডিকেন্স, অন্যজন জাঁ জ্যাক রুশো। আমরা কি বিশ্বাস করতে পারি, ডিকেন্স এবং রুশোর চিন্তাধারায় জারিত ছিল তলস্তয়ের সাহিত্য? ডিকেন্সের সাহিত্যে মানুষের যেমন জীবন দেখানো হয়েছে, সেখানে নিয়তির চেয়ে শ্রমের মূল্য বড় হয়ে উঠেছে। অথচ তলস্তয়ের চরিত্রদের এই অবস্থা! আর রুশোর সমাজ পরিবর্তনের অস্ত্রশস্ত্র কি রাশিয়া গিয়ে ভোঁতা হয়ে গেছে? এই মানবতাবাদী সমাজ-দার্শনিকের হাতে মানবমুক্তির অনেক পথ ছিল, কিন্তু তলস্তয় সে সব পথ তার চরিত্রদের জন্য সহজ করে দেখান নি কেন?
তলস্তয় যখন আনা কারেনিনা রচনা করছেন (১৮৭৫-৭৭) তখন আমাদের বাংলা সাহিত্যেও আরেক ‘ঋষি’ খেতাবপ্রাপ্ত সাহিত্যিক রচনা করছেন ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ (১৮৭৫)। সেখানেও দেখি রোহিণীর নিয়তিতে লেখা আছে গোবিন্দলালের পিস্তলের গুলিতে মৃত্যু। নিহত হওয়ার পূর্বমুহূর্তে রোহিণী বলে, ‘কপালে যা লেখা ছিল, তাই হোলো।’ কী আশ্চর্যজনক সব ঘটনা! কপালের লেখা! রোহিণীর মৃত্যুর পরে গোবিন্দলাল ফিচেল খাঁর বানানো সাক্ষীর সহায়তায় হত্যামামলায় সম্পূর্ণ খালাস পেয়েছিল তবে বাংলা সাহিত্যের আদালতের কাঠগড়ায় বঙ্কিমচন্দ্রকে বহুদিন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে, আজও সেই অভিযোগ থেকে তিনি সম্পূর্ণভাবে খালাস পান নি। কারণ গোবিন্দলালের গুণ্ডামি মেনে নেওয়া শরৎচন্দ্রের মতো লেখকের পক্ষেও সম্ভব হয় নি, সাধারণ পাঠক তো দূরের কথা।
তলস্তয় তার সবচেয়ে শিল্পসফল এ উপন্যাসটিতে প্রধানত চারজন পুরুষ চরিত্র চারপাশে রেখে মাঝখানে আনাকে স্থাপন করেছেন। এরা হলেন, আনার ভাই স্তিভা অবলোনস্কি, স্বামী আলেক্সেই আলেকসান্দ্রভিচ কারেনিন, প্রেমিক আলেক্সেই ভ্রনস্কি এবং আত্মীয় সম্পর্কে বিয়াই– ভাবির বোনের স্বামী– এবং ভাইয়ের বন্ধু লেভিন। এ যেন ভাষায় রচিত এক তাজমহল! চারপাশে চারটি অপেক্ষাকৃত অনুচ্চ মিনারের মাঝে সর্বোচ্চ আকাশছোঁয়া গম্বুজরূপী আনা কারেনিনা।
এভাবে তলস্তয় আনাকে অতি যত্নে গড়ে তুলেছেন। কিন্তু তারই পরিণতি ঘটল কি না এমন দুঃখজনকভাবে! রুশ অভিজাত শ্রেণীর ভাঙনের প্রতীক আনার ভাই স্তিভা। তার ঘরে দারিদ্র্য প্রবেশ করতে দেখা যায়। বৃষ্টিতে চাল ভেঙে পানি পড়ে। নষ্ট হয়ে যাওয়া শ্রেণীর নানা নষ্ট স্বভাব তার মধ্যেও বিদ্যমান। পুরনো কাঠের ছাদের মতোই ভেঙে যায় তার শ্রেণীর নৈতিক শৃঙ্খলা। তার ব্যক্তিত্বের নানা ফাঁক-ফোকড় বেয়ে বৃষ্টির পানির মতো চুইয়ে পড়ে অসার আভিজাত্যের তরলতা। স্ত্রী ছাড়াও পরকীয়া সম্পর্ক আছে তার। বোন আনারই সহযোগিতায় তার সংসারের সেই আগুন নেভে।
আনার স্বামী কারেনিন দেশের শীর্ষ আমলা। বয়সে আনার দ্বিগুণের চেয়েও বড়। সংসারের প্রতি তিনি যতটা দায়িত্বশীল ততটা আন্তরিক নন। তার মন-মানসিকতায় যান্ত্রিকতা স্পষ্ট। তিনি ঘরকে দেখেন অফিসের মতো। আনাকে এক প্রকার বালিকাবধূ হিসেবে বরণ করে আনেন তিনি। কিন্তু তাদের মানসিক দূরত্ব কোনওদিন ঘোচার মতো নয়। নিষ্প্রাণ এ মানুষটি আনাকেও নিষ্প্রাণ করে ফেলে।
ভ্রনস্কি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। পুঁজিবাদী সমাজ বিকাশের পক্ষে তিনি কাজ করেন। হাসপাতাল, স্কুল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু তিনি অন্যের স্ত্রী আনাকে নিয়ে ইতালি চলে যান, সেখানে বিবাহবহির্ভূত দিন কাটান। অবৈধ সন্তান জন্ম দেন। তবে ভ্রনস্কি তার মায়ের মতো অভিজাত শ্রেণীর নষ্ট মানুষ নন। তার ভালোবাসা আছে, দেশপ্রেম আছে, স্বপ্নও আছে। নেই শুধু ভরসা। আর নেই বিশ্বাস এবং আনার প্রতি প্রেমের ধারাবাহিকতা।
লেভিন তলস্তয়েরই প্রতিবিম্ব চরিত্র। তাকে শুধু কৃষি ব্যবস্থা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। নিজে মাঠে নেমে কৃষি কাজ করে আনন্দ পান। উপন্যাসে অঙ্কিত রুশ সমাজে তার শ্রেণীতে তিনি একমাত্র উৎপাদনশীল সময় কাটান। তাকে জীবন্ত এবং প্রাণবন্ত দেখা যায়। তিনি শ্রমের প্রতি মর্যাদাশীল। তবে শ্রমের গতিশীলতা যে শিল্পে– এ ভাবনা তার মধ্যে দেখা যায় না। তিনি মফস্বলের জীবনে সন্তুষ্ট।
এসব পুরুষ চরিত্র ছাড়িয়ে আনা কারেনিনা ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠেন। কিন্তু সমাজ তাকে নানাভাবে বাধা দেয়। দেশের ভেতরে কিংবা বাইরে কোথাও তিনি একটু স্বস্তি পান না। বন্দিদশা তার সর্বত্র বিরাজমান। শেষ পর্যন্ত তার জীবনে ঘটে করুণ পরিণতি। রেললাইনে মাথা পেতে স্বেচ্ছামরণ গ্রহণ করতে হয় তাকে।
আমাদের বর্তমান সমাজের সঙ্গে আনা কারেনিনার সমাজ এবং সময়ের প্রধান পার্থক্য হল, বর্তমান সমাজ অনেক বেশি সৃষ্টিশীল এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল। এ সময় দেশের অভিজাত শ্রেণী ভাঙনের মুখে নয়। বরং মধ্যবিত্ত শ্রেণী ভাঙনের মুখে। কঠিন সংকটে পড়া এ শ্রেণীটা কালোটাকার রোলার স্কেটার পায়ে দিয়ে অভিজাত শ্রেণীর দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। যারা পারছে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে; যারা পারছে না তারা মুখ থুবড়ে পিছলে পড়ে আহত জীবন নিয়ে কাঁতরাচ্ছে। বর্তমানে অভিজাত শ্রেণীর জনসংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। তলস্তয় দেখিয়েছেন রুশ দেশের সামন্ততন্ত্রের ভাঙ্গন দশা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সমাজে উচ্চবিত্ত শ্রেণীটা নতুন করে এক ধরনের সামন্ততন্ত্র তৈরি করছে। কাজেই পরিস্থিতি ঠিক বিপরীত বলেই দেখা যাচ্ছে।
তবে আমাদের এ সময়ের অভিজাত শ্রেণীতে আনা কারেনিনাদের অস্তিত্ব রয়েছে। কারণ সমাজ এখনও পুরুষশাসিত। তারা যখন নষ্ট হয়ে যায়, কী পরিণতি ঘটে তাদের? সব ক’টি ইন্দ্রিয় খোলা রেখে অভিজাত শ্রেণীর দিকে তাকালে দেখা যায় আনা কারেনিনারা ঘর ছেড়ে বাইরে এলে তাদের সংবাদ মাঝে মাঝে গণমাধ্যমে উঠে আসে। বর্তমানে তাদের সম্ভাব্য পরিণতি ঘটে কয়েক প্রকার। যেমন,
১. বিকৃতির অতলে তলিয়ে দেশের ভেতর নতুন নতুন পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক রচনা করা অথবা দেশের বাইরে চলে যাওয়া।
২. আত্মপ্রবঞ্চনামূলক ধর্মচর্চায় নিজেকে নিয়োজিত করা। যেখানে সত্যধর্মের চেয়ে লোক দেখানো ধর্মাচার এবং মনগড়া ধারণার প্রাবল্য দেখা যায়।
৩. নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে খুন হয়ে যাওয়া।
৪. জীবনযুদ্ধে পরাজিত হয়ে নীরবে স্বেচ্ছামরণ ঘটানো।
তলস্তয়ের আনা কারেনিনা শেষের পথটি বেছে নিয়েছেন। প্রথম পথটি তার জন্য রচিত ছিল না। কারণ আনা কখনও বিকৃতিকে প্রশ্রয় দেন নি। তিনি তৎকালীন অভিজাত রুশ সমাজের মতো ব্যাপকভাবে পরকীয়া, উদ্দাম অনৈতিক সম্পর্ক রচনায় উৎসাহী ছিলেন না। আনা আলেক্সেই কারেনিনের সংসার থেকে বেরিয়ে নতুন করে সংসার করতে চেয়েছেন। তিনি জীবনসঙ্গী খুঁজেছেন, অন্যদের মতো স্থূল রুচি নিয়ে স্রেফ শয্যাসঙ্গী চান নি। জারশাসিত রুশ দেশের আইন আর খ্রিস্ট ধর্মরীতি বিবাহ-বিচ্ছেদ আর নতুন সংসার রচনার পথটি তার জন্য খুলে দেয় নি। তাই তিনি সহজ মানুষ হতে চেয়েও পারেন নি। আর পশ্চিম ইউরোপে চলে যাওয়ার জন্য আনা কারেনিনার জন্ম হয় নি। তিনি তার দেশের মস্কোয় থাকতে পছন্দ করেন, অথচ পিটার্সবুর্গের প্রতি আকর্ষণ নেই।
দ্বিতীয় পথটিও তার জন্য সহজ ছিল না। কারণ আনা সৎ, সরল এবং আন্তরিক। নিজে ধর্মচর্চা করেন না, কিন্তু কোনও প্রকার মিথ্যাচার তার মধ্যে নেই। কোনও প্রকার ভণ্ডামিও নেই তার মধ্যে। তিনি মানুষের সৎভাবে বেঁচে থাকার মধ্যে ধর্মাচারের চেয়ে বেশি শান্তি পেতে চেয়েছেন।
তৃতীয় পথটিও আনার জন্য নয়। কারণ আনা কারেনিনাকে খুন করতে পারে এমন কোনও পুরুষ চরিত্র তলস্তয় সৃষ্টি করে রাখেন নি। বিশাল উপন্যাসটিতে আনাই বরং সবাইকে ছাড়িয়ে যান। খুনাখুনির ব্যাপার তার পছন্দের নয়। তিনি শান্তিপ্রিয়।
সর্বশেষ পথটিই আনা বেছে নেন। বোঝা যায় এই তার নিয়তি। আনা প্রথম বা দ্বিতীয়োক্ত পথ অবলম্বন করলে বেঁচে থাকতে পারতেন। তখন আমরা তলস্তয়কে একজন সংবাদ প্রতিবেদক বলতে পারতাম। ঔপন্যাসিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারতাম না। শিল্পসৌধ রচনা করার জন্য তলস্তয় আনাকে সর্বশেষ পথটি খুলে দিয়েছেন।
আনা মস্কোর মেয়ে, পিটাসবুর্গের হলে অতিমাত্রায় ইউরোপীয় হয়ে কৃত্রিম জীবন নিয়ে টিকে থাকতে পারতেন। সে যোগ্যতা তার ছিল। কিন্তু তার কাছে প্রাচ্য জীবনধারাই গ্রহণযোগ্য ছিল। মস্কোর সঙ্গে পিটার্সবুর্গের জীবনের পার্থক্য তিনি বুঝতেন। তাই তিনি ভ্রনস্কির সঙ্গে পাশ্চাত্যের রেনেসাঁর কেন্দ্র ভূমি ইতালি চলে যান। কিন্তু পাশ্চাত্যজীবন তিনি বেশিদিন যাপন করতে পারেন নি। তিনি উদ্দাম লাগামহীন জীবন চান নি। তিনি বিয়ে করতে চান, স্বামী ও সন্তান নিয়ে সংসার করতে চান। শিশুদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তো আনা শিশুদের নিয়ে বই লেখেন। কিন্তু জারের রাশিয়া ব্যক্তি মানুষের জন্য আধুনিক যুগের সমাজ এবং সভ্যতার প্রয়োজনীয় পথগুলো অনুমোদন করেন নি।
আনা কারেনিনা এক্সটোভার্ট ছিলেন উপন্যাসের শুরুতে। ফুলের পাঁপড়ির মতো ছড়িয়ে পড়তে ভালো বাসতেন। পরে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ ইনট্রোভার্ট হয়ে যান। মৃত্যুর পূর্বের এক সপ্তাহের বর্ণনায় ভয়াবহ রকমের অন্তর্মুখিতা দেখিয়েছেন তলস্তয়। একটা ঘোরের ভেতর চলে যান আনা। এমন ঘোর তৈরি করে সেখানে আনাকে নিক্ষেপ করা যেমন তলস্তয়ের শিল্পসাফল্য, তেমনি পাঠককে সেই ঘোরের ভেতর নিয়ে ঘুরাতে থাকাও তার দক্ষতার পরিচায়ক। অন্য কোনও সাহিত্যিকের সঙ্গে তলস্তয়ের প্রধান পার্থক্য এখানে। অন্যেরা পাঠকের মগজে ঘোর তৈরি করতে পারেন, আর তলস্তয় চরিত্র নিয়ে ঘোর তৈরি করে সেখানে পাঠককে টেনে নিয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু বর্তমান সময়ের পাঠকের কাছে নিয়তিবাদী এ উপন্যাস কী নিয়ে মর্যাদা নিয়ে টিকে থাকবে? স্রেফ রুশ সমাজের ইতিহাস নিয়ে? নাকি ‘পাপের পরিণাম মৃত্যুর’ মতো প্রবাদের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করার নীতিবাদী গৌরব নিয়ে? তা না হলেও এ সময়ের আনাদের জন্য নতুন করে ভাবনা তৈরি করবে।