দর্পণ ডেস্ক
একটি পূর্ণাঙ্গ ম্যাগাজিন। শিক্ষা, সাহিত্য ও গবেষণামূলক ম্যাগাজিন দর্পণ। ২০১৯ সালে ব্যতিক্রমধর্মী ম্যাগাজিন দর্পণ তার যাত্রা শুরু করে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে দর্পণ "গল্পবাজ" ম্যাগাজিন আত্তীকরণ করে।
দর্পণ ডেস্ক

রবিতনের ভাবনা – সালাহ উদ্দিন মাহমুদ

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

রমজান মাস। মাগরিবের আজান হয়েছে। এখন ইফতারের সময়। ইফতার করতে বসেছে মা ও ছেলে। তারা ফুটপাতের বাসিন্দা। নির্ধারিত কোনো ফুটপাত নয়। ভিক্ষা করতে করতে যেখানে পথের শেষ হয়, সেখানেই বসতি গড়ে। আজ বসেছে বারিধারার একটি ফুটপাতে। রাস্তা ফাঁকা, সুনসান নীরবতা। শাঁ শাঁ করে ছুটে যাচ্ছে গাড়ি।

আজানের ধ্বনি শুনে প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম গ্লাসে চিড়া-গুড়ের শরবতটুকু ঢক ঢক করে গিলে নেয় রবিতন। পঞ্চাশোর্ধ রবিতন গরিব হলেও রোজা রাখে। রোজা মানে সংযম। সে সংযমী হওয়ার চেষ্টা করে। ছেলেটাকে মানুষ করতে পারেনি এখনো। বয়স বারো-তেরো। রোজা রাখে না। সারাদিন শুধু খাই খাই করে।

এতো খাই খাই করোস ক্যান? প্যাডে কি কুমির ঢোকছে?

ক্ষিধা লাগলে খাওন চাইমু না? ইফতারে খালি চিড়া ভিজানো পানি খাইছি।

রোজার দিন কম খাওন ভালা। হোনোস না রোজা মানে সংযম।

ওহ, সংযম খালি আমাগো লেইগা? আর বাপের বড় পোলারা যা খায়?

চোখ ঘুইট্টা উডায়া হালামু। ওইদিকে ভুলেও চাইবি না। বেশি লোভ ভালা না।

আমি যে ক্যান তোমার প্যাডে আইলাম? হালার কোনো বড়লোকের প্যাট খুঁইজা পাইলাম না।

তোরে যে প্যাটে আনছে, হে তো বড়লোকই আছিল। তুই আহার পরেই তো ঘার ধইরা বাইর কইরা দিলো।

হ্যার লাইগা আমি অইয়া গেলাম জাউরা পোলা। এইহানে তোমার-আমার কী দোষ?

দোষ আমাগো কপালের। ওই দ্যাক, পুলিশ আইতাছে।

লও জলদি, অন্য জায়গায় যাই। এই ফুটপাত ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হইছে।

ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা থেকে পা বাড়ায় মা-ছেলে। ‘এই এলাকা ভিক্ষুকমুক্ত’ সাইন বোর্ডের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভাবে রবিতন, ‘এই দ্যাশ কোনকালে ভিক্ষুকমুক্ত অইবে?’

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu