সাজ্জাদ সাঈফের তিনটি কবিতা
কিছুদিন
কিছুদিন আমি শ্রাবণে ছিলাম ধীর
কিছুদিন আমি অঘ্রাণে অস্থির;
কিছু কথা বলে দূরেই কেঁদেছিলাম
কিছুটা গানেতে পুনশ্চঃ বধির!
যে আলো চোখের, আছিলো তুমুল সই
যে রীতি-বন্ধনে ছিলো একাকার জুঁই
সুরভী ছিলো না হৃদয়ে সীমিত কারো
তবু গেরো কাটে প্রিয় সম্পর্কেরও
তবুও তিমিরে ডুবছে মলিন মুখ
আজ গাঁথা ফুল, কালই বিদীর্ণ বুক।
তবু কিনারায় গ্রহ তাক করে চাঁদ
মানুষের গানে মানুষই অবসাদ।
জেব্রাক্রসিং
এই শহরের রাস্তাগুলাতে জেব্রার গায়ের ছাপ স্থির, এখানে বিশ্বাসের স্পর্শ অনেকগুলা টাকার ব্যাপার, আমাদের থেমে যেতে হয়, ভেঁপুর মধ্যে ভৎর্সনা, চোখের মধ্যে পূর্ণ হচ্ছে ঘাটশাসিত নদী
বৃত্তকে উহ্য রেখে কোলাহলে নেমে যাচ্ছে ব্যাস
কতকিছু নতুন লাগে, আদমশুমারির ভিতর ঢুকে যাচ্ছে
নবজাতকের শ্বাসকষ্ট
তারপরও জোৎস্নার ভিতর শুনতে পাই
ধাত্রীর হাসি, আমারই প্রথম চিৎকার;
গহন থেকে বুক চিঁড়ে উঠে আসে উদ্যান;
তারপরও তর্কের মধ্যে বিপন্নতাকে ভালোবাসি আমি
সমস্ত ধূসরতাকে স্পর্শ করে ডাকি, বেঁচে থাকাকে অধ্যাদেশ বলে মনে হয়;
আর, জেব্রাক্রসিং থেকে নগরবাসী
নির্দ্বিধায় ঘুরে যাচ্ছে
কফি ও কফিনের ভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গে!
রাষ্ট্র
ভীড় করে লাভ নেই
সব ছায়া খেয়ে চলে গেছে
লাল পিঁপড়ারা, মাঝখানে নদীর ভাঙন
স্কুলঘর বুকে নিয়ে ধপ করে পড়ে
মাথার বায়ে মাইগ্রেন
ডানে ছায়া দেয়া ছাউনী যে ছিলো
সেও গেছে দখলদারের গ্রাসে
মিথ্যে বলে লাভ নেই
আমরা বারবার বের করে এনে
বুঝিয়ে সুঝিয়ে বুকে রেখে দিচ্ছি আমাদের হৃদপিন্ডকে;
রাষ্ট্রকে জড়িয়ে ধরেছে রোদ
রক্ত শুকিয়ে কটকট করছে
সমস্ত ইনজুরি!