মরে গেলে কী আর হবে এমন?
বরইপাতা গরমজলে আদুল-স্নান
আতরের খুশবু… নতুন নির্মাণ
একটা শালিক দেখে যে বালিকা তর্জনিতে
কামড় দিয়ে সারা বিকেল মাটি করে কেঁদে কেঁদে
জোড়া শালিক খুঁজেছে; মরে গেলে ওই বিজোড় শালিকও ঠিক জোড়া খুঁজে নেবে।
বালিকা তখন কোত্থাও নেই।
একটা মনছুঁই পাখি অনিশ্চিত অপূর্ণ ইচ্ছেদের
নিয়ে দূর নীলিমায় উড়ে যেতে যেতে একটা নীলপালক খসিয়ে রেখে যাবে স্মৃতির আঙিনায়।
মানুষ কি বাঁচে স্মৃতিতে?
শবযাত্রায় বামহাতটা খালি রেখে
ডানহাতের আমলনামায় লিখে দিয়ে যাবো
সবটুকু স্নেহ।
যারা ভালোবেসেছে অথবা বাসেনি
কী আসে যায়– মৃত্যু মানে শেষ নয়।
শেষযাত্রা শুরু হয় সমাপ্তিতেই
আদতে সমাপ্তি বলে কিছু নেই।
আমাকে নেবে? নেবে আমায়? নেবে না?
কস্তুরী নারী নির্বাসনে
শ্রীমন্ত নদী ছুঁয়ে নেপালের সুদর্শন পাহাড়ে
দার্জিলিং আর ওকাম্পো নগরে
একাকী গ্রামের বিজন সকালে
যেখানে মেঘ আর আকাশ হাতের নাগালে।
আপনার চেয়েও আপন সে মধুবসন্তী নারী;
এক বিরল বিরহী নদী অমৃতের সন্তান
পথিকের অনুপান;
অর্জুন বৃক্ষে গোপন রূপকুমারী।
কঠোর নিয়তি দিয়েছে নির্বাসন…
জন্ম-জন্মান্তর মিলনের ছল
জান্নাতি নদী অবলীলায় পৃথিবীর পথে
অন্তরে গভীর বাসনা; ছুঁয়ে দেবার বাহানা
পাহাড়ের কাছে রাখে বিনম্র নিবেদন–
আমাকে নেবে? নেবে আমায়? নেবে না?
গতবছর হেমন্তের এক হুহু হাওয়া ওঠা মাঝরাত্তিরে বুকের ওমে মুখ গুঁইজে বইলেছিলে, খুব খিদা লাগছে রে জরি! ভাত খামু।
নতুন চাইলের ভাতে তোমার বরাবরই আগ্রহ
শিথানে ছিলিম ছিলিম ভাতের নেশা
আমারে ছাইড়ে নতুন নারীর শরীরী ঘ্রাণ
লাল চাইলের গরম ভাতে শুকনা লঙ্কার ওমের মতোন
হেমবরণী পুরুষ
হেমন্তের হাওয়ায় নবান্ন সুখ
নতুন ধানের ম-ম গন্ধে আমার আমনঠোঁট
এখনও উন্মুখ… কুটুমপাখি!
নোলক আর লাল শাড়ির আহ্লাদ নিয়া
কোনো কোনো নারী আমন ধানের খালিবুক
মাঠের মতো হৃদয়ের খিল খুইলে
চাতক চোখে চায়া থাকে….
পরানের পুরুষ তখন নিয়ন সাঁইনঝেবেলায়
দ্রাবিড় নারীর শরীর নিবিড় খুঁইটে খায়–
উষ্ণতার ধোয়াওঠা ফেনাভাত মাতাল ঠোঁটে
কোথাও খুব শীতের উত্তুরে হাওয়া ছোটে
নতুন পাণ্ডুলিপির মোড়ক উন্মোচন; আনকোরা মলাটে
কুটুমপাখি এইসে মাটির শরীরের অলিগলিতে
বাসা বাইনবার চায়; গান গায়
মাটির হাঁড়ির নতুন চাইলের নরম ভাতের নেশায়…