দ্রোহের কবিতা নিয়ে দর্পণের একটি বিশেষ সংখ্যা ‘অগ্নিফুল’, সংখ্যাটিতে প্রকাশিত শাহজাহান পারভেজ রনির পাঁচটি কবিতা—
এই দীঘি এতোটা বড়ো যে, দীঘিতে জোৎস্নার ছায়া
নারিকেল পড়ার শব্দ
বহু শিকারির ছিপ, লোক আর লোক, লোকে লোকারণ্য
নিখিল বললো, মাছ কোথায়
পুকুরে মাছ থাকবে না?
আমি বললাম, ঐ তো ঐখানে মাছ
সবুজ ঘাসের উপর
চার ঠ্যাং, সুঁচালো শিং, লেজের আগায় একগোছা চুল নিয়ে
ভুল ভাবে ঘেউ ঘেউ করছে
আকাল এমনই হয়,
রুহুলের দিকে কল্কেটা এগিয়ে দিয়ে বললাম–
নে ধর, এরপর ভাসুরের নাম মুখে আনবি না।
তুমি জানো না টুসু, আমরা যারা বন ছেড়ে এসেছি,
তারা আর বনে ঢুকতে পারিনি
সেখানে মুঠো মুঠো সবুজ, অচেনা পাখি, হরিণ,
বুঁনো শুয়োর, নিঃশর্ত গান
আমরা ভেবেছি বাইরেটা ভালো
কড়া নেটওয়ার্ক, মানুষ টাচে আছে,
– ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটছে, বুঝিনি
আমরা এখনো বুঝিনি, রায় বাবুদের ছেলে কি করে নষ্ট হলো
আমার আন্দাজ, এ নিশ্চয় সায় বাবুদের কাজ
তারাই করেছে নকল, রাজভবনের চাবি
– না হলে কিভাবে উঠলো ব্যাঙ, রাজার চেয়ারে?
– এমন কিছু আছে, যা লোকটাকে কিনতে হয়নি
কুড়িয়ে পেয়েছে, হাতড়ে পেয়েছে
কিছু গান পাখির , কিছু ছায়া বন বিভাগের
তাকে কিনতে হয়নি অসভ্যতা
তাকে কিনতে হয়নি গালাগাল
শুধু গায়ের জামা-প্যান্ট-জাঙিয়া
জ্ঞাত উৎসে কেনা
এটা এমন একটা ব্যাপার, যা থাকলে
নিজেকে টেক্কা মনে হয়
যাকে তাকে খায়, যাকে তাকে চোদে
এ বড়ো অশ্লীল, এ বড়ো নিষ্ঠুরতা
– মহারাজ কিছু নমস্কার ঘরে তুলবেন না–
আগের রাজাকেও সাপে কেটেছিলো।
ঝুড়িতে পাঁচতলা বাড়ির স্বপ্ন নিয়ে ঘুরি
মাথা জুড়ে রোদ, ঝুড়ি ভরা জোৎস্না
এতো ভার এতো ভার, অসহ্য লাগে, কথার বউ খেলাপ হয়,
সত্যবাদি হলে না হয় বলা যায়, একতলায় দুইটা সিঁড়ির গল্প
দশটা সিঁড়িতে ছাদ, ছাদে টব, টবে ভিন দেশি ফল।
ধুরশালা সব ফালতু, সব শালা দেওয়ানি কইতর
পানা পুকুরে গলিত মুন্ডুটা কার, আমি সাক্ষি দিয়েছি–
অথচ পুলিশ চাইছে ধড়, আমি বিনয়ের সাথে বলি–
ওহে নারদ, ধড় পেলে আমি কি আর মাথার অপেক্ষায়
এই বালছেঁড়া ইস্টিশনে লোক জড়ো করে, জেলে ভাড়া করে,
কাদা জলে মাতাল খুঁজতাম?
ছেড়ে দিন, এরপর আরো লোক জড়ো হলে
আরো কথা হলে, এরা কিন্তু চাঁদ তারা মানবে না
– এইগুলা মহাদেব চুদে আসা লোক।
যখন শরীর দুর্বল হয়ে গেলো, বিধান বললো, ডিম খা
দেশি হতে হবে, ফার্মের হলে হবে না
দুধ খাওয়া যায়, তবে জলে ময়দা গুলানো দুধ নয়
দুঃখি গোয়ালিনীর হাতে টানা দুধ,
নিয়মিত শাঁক খা, নিয়মিত বেদানা, বাচ্চা কবুতর,
বিশ্রামে থাক, টেনশনে যাসনা অযথা, গলিটা খারাপ
ভালো হয়, জায়গাটায় একটা গন্ধভাঁদালের
চারা পুঁতে দিস, আরো ভালো হয়, সকাল বিকাল
যদি তুই কোয়া কোয়া রঁসুন খেতে পারিস,
জগৎ সংসার, দুর্বলতা দূরে চলে যাবে, কবিতায় পড়েছি
তাকে বললাম, তুই মানুষ না ভাই, তুই সক্রেটিস।