তরুন ইউসুফ
জন্ম ১৯৮৯ সালের ২৬ মার্চ সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পাশের পর বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ: না গৃহী না সন্ন্যাসী (২০১৮), কান্না হাসি রম্য রাশি (২০১৯)।
তরুন ইউসুফ

পৃথিবীর সব চিৎকার চাপা পড়ে যায়

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

তরুন ইউসুফের দুটি কবিতা


মগজের ফ্রিজে লাশের স্মৃতি


ফ্রিজের ইলিশের মতো লাশের স্মৃতি জমাই
মগজের ডিপফ্রিজে।
ছোট-বড়, মাঝারি, বুড়ো
পোড়া, খুন হওয়া কিংবা থেঁতলে যাওয়া লাশ।
কর্তামশায় লাশের ঝাঁপি খুলে বসে আছেন
আমি কেজি দরে দাম হেঁকে বলি–
এত লাশ সামলাবেন কিভাবে
দিন না আমাকে কয়েকটা।

কর্তামশায় হেসে বলেন–
কিছু যাবে উন্নতির ডিপ ফ্রিজে
কিছু যাবে রাজনীতির ভাগারে
আর কিছু চাপা পড়বে টাকার পাহাড়ে
তোমাকে দেবার লাশ কই?

আমি নিরাশ হয়ে মগজের ডিপফ্রিজ খুলে
আরো কিছু লাশের স্মৃতি রাখি।


পৃথিবীর সব চিৎকার চাপা পড়ে যায়


মাঝে মাঝে উলঙ্গ হয়ে দেখি
পৃথিবীর আব্রু ছিল না কখনো
আমারাই কেবল লজ্জার নাম করে
কাপড় জড়িয়ে উলঙ্গ আর আব্রুর
পার্থক্য রচনা করেছি।

পাপ আর পূন্যের বিভেদ টানতে গিয়ে দেখি
খানিক আগেই তারা পাশাপাশি হেঁটে
বিদায় নিয়ে দুদিকে চলে গেছে
মানুষের ভেতরে পাপের দুঃখ
আর পূন্যের সুখ
তফাৎ থেকে দেখলে দুটোই উচ্ছিষ্ট
মানুষ, মানুষ হতে ভুলে গেছে।

পাঁচিলের ওপারে যে বাড়ি
তাতে আহাজারি চলে
আমি ঘরের ভেতর বসে
গান শোনার ঢঙে আহাজারি শুনি.
আর মনে মনে উৎফুল্ল হই।

আমি তাতে সুর আর তাল দেই
দেখি বেশ রাবীন্দ্রিক ঢঙে
আহাজারি গান হলে–
একটু আগে যারা আহাজারি আর
চিৎকার শুনে আফসোস করছিল,
তারাও মজে গিয়ে তাল দেয়, সুর ভাঁজে
আর পৃথিবীর সব চিৎকার চাপা পড়ে যায়
সুরেলা গানের নিচে।

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu