১. অদলবদল
মুর্দাপুরে—
বৈশাখের মাঝামাঝি বৃষ্টিতে ভেজে আকাশ।
এক একদলা মেঘ যেন এক একটা গর্ত;
সাগর-নদী-হাওড় থেকে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি
উড়ে উড়ে পড়ে গিয়ে আকাশের গর্তে।
পাখিরা লজ্জায় ওড়া ভুলে ডানা চুলকায়।
আকাশ পায় চূড়ান্ত ধৈর্যশীলের খেতাব,
ঈশ্বর মাটির মাথায় পরান উদারতার মুকুট।
২. মৃত্যুবর্তী পৃথিবীর উপকথা
আখেরি ওয়াক্তে—
শুক্রবারের জলশায় মাতাল হয়ে
মহুয়ার গুল্মলতায় রাত ঘুমালে
পৃথিবীর দশদিক থেকে খুড়িয়ে
আসে নির্জনতার নির্মম গর্জন।
অসহায় হরিণের চোখের তারায়
ঘুরেফিরে চমকায় লুপ্ত বর্তমান।
অ্যাস্ট্রোনমির শুষ্ক আঁক শাখায়
হলদে বাফতা গায়ে জড়িয়ে
মহাকাল সংরক্ষণ করে প্রকৃতি।
আখেরি ওয়াক্তে—
চূড়ান্ত বিপর্যয়ের ঠিক আগে
সময়ের বেলাভূমিতে দুলে ওঠে
অখাদ্য মাকাল আর নিমফল।
চোখানো পেন্সিলের ভগ্ন মেরুদণ্ডে
সাঁড়াশি আঁটে রুক্ষ তৃণকান্তার।
ঘোলাটে কিংবা রূপালি জোছনায়
অভিশপ্ত জন্মের কথা স্মরণ
করে লাগাতার ডিগবাজি খায়
বিষহীন ক্লান্ত জোড়া অজগর।
আখেরি ওয়াক্তে—
দীর্ঘ রাতজাগা পাপী প্রাণের
নিরীহ অশ্রুর প্রতিটা ফোঁটা
জমে হয় সমালোচিত লবন।
বিরাট বটগাছে হেলান দিয়ে
মৃত্যুবর্তী পৃথিবী ভাবে আদম–
চাষের সকল প্রচ্ছন্ন ইতিকথা।
আমরা ভাবি পৃথিবী মরলে
তার জানাজা পড়াবে কে!
তার কবর হবে কোথায়?
৩. রাসূল প্রেমের নূর
মুকুট মাথায় দাঁড়িয়ে আছে সাদা শৌখিন উট
লোকালয় থেকে দূরে
আকাশ গেলায় ব্যস্ত মরু গ্রামের প্রবীণ কূয়া
নকল অচিনপুরে
হারিয়ে যাচ্ছে তীব্র শীত, তীব্র গ্রীষ্ম, তীব্র বর্ষা
বেলালের তাজা সুরে
হেরার চূড়ায় চড়ছে আলো, দ্বিগুণ ত্রিগুণ বেগে
রাসূল প্রেমের নূরে
উকাজ মেলার মাঠ
পাথরে কালেমা পাঠ
চাঁদের বুকে
মৃগের মুখে
সাক্ষরতার ছাঁট
অসময়ের প্রান্তরে মিশে ফুলেফেঁপে উঠেছে নির্ঝর
সুরমায় ঠাসা তূর
হিরন্ময় হিজলের কোলে অতর্কিত চমকে উঠেছে
রাসূল প্রেমের নূর।