জাহেদ হোছাইনের চারটি কবিতা
ময়নাতদন্ত
মানুষ পোড়াবার ষোলোকলা
তুমি এত সহজেই শিখে যাবে ভাবিনি;
অভিবাদন তোমাকে।
সেদিন শান্তিনগরে হাওয়া খেতে গিয়ে
হারিয়েছি আমার আড়াই হাজার খুদেবার্তা।
আমি তন্ন-তন্ন করে খুঁজেছি
সমুদ্র-নদী, সমস্ত ভিটেমাটি
আর তিনশ সাতান্ন দিন পর খুঁজে পেয়েছি একটি ছবি–
ছবির তাজা শরীর…
ময়নাতদন্ত কবে হবে!
নীড়
দিন শেষে সবাই নীড়েই ফেরে।
কেউ ফেরে পৃথিবী জয়ের অসীম উচ্ছ্বাসে
কিংবা কেউ কেউ ফেরে একগাদা মুমূর্ষু স্বপ্ন কাঁধে নিয়ে।
স্বপ্নরা সম্ভবত মরে না; আহত হয়–
অভিমানে স্বেচ্ছায় বন্ধুর কণ্টকাকীর্ণ পথে হেঁটে যায়।
মানুষ নামের এই অদ্ভুত প্রাণীগুলোকে ঈশ্বর স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা দিয়েছে বলেই হয়তো দীর্ঘকাল বেঁচে থাকে।
মূলত স্বপ্ন দেখবার জনই বেঁচে থাকে।
আবারও ঘরে ফেরে…
ঠিক যেমন আহত সন্ধ্যায় পাখিরা নীড়ে ফেরে।
পাখোয়াজ
আলমারিতে সাজিয়ে রাখার মতো মানুষের কিছু দুঃখ
থাকে। শেষ রাত্তিরে ঘুম ভেঙে যাওয়া আধো স্বপ্ন,
খুব শৈশবে নীল জোনাকির রাতে দলছুট-কালো
অথবা কালচে কোনো জামা খুঁজে না পাওয়া, কিংবা
কোনো একদিন ঝিলের ধারে ডিঙি বাঁধা তবু দাঁড় না
থাকায় চড়তে না পারার খুব ছোট্ট কিছু রঙিন দুঃখ!
অনুসিদ্ধান্ত
সমূহ পাপ জমে আছে–
এ ছাড়া একান্ত নিজের বলতে আদতে কিছুই নেই।
কোথাও আলো দেখি না– তলিয়ে যাচ্ছি ক্রমশ…
অথচ কার যেন আঙুল বেয়ে আমার স্বর্গে যাওয়ার কথা ছিল।