সাজ্জাদ সাঈফের তিনটি কবিতা
এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছে আর তোমার ভিতর শব্দ করে আছড়ে পড়ছে গাছেরা একে একে এর কিছুই আমাকে জাগাতে যথেষ্ট নয় জেনে এক কাঠবিড়ালির হাঁটার আওয়াজ নিয়ে চোখে আটকায় নিকট অতীত। এই যে জন্ম ও জন্মতিথির তারা, তোমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আর আকাশ হতে ছুরিকাঘাত নেমে আসে বজ্রধ্বনিতে এর কিছুই গ্রন্থে ছিলো না লেখা, তবু এইসব দুয়ার ও দক্ষিণে কবি এক অতীন্দ্রিয় রুহ, তোমার ভিতর জেগে থাকা ধূসর সব ক্ষতের কিনারে থেমে বাদ্যযন্ত্রে জিকির তুলছে ক্রমে, এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছে, এতসব বিদীর্ণ হর্ন চারধারে যে নভোরক্তিম কন্ঠস্বর আমরা কেউই শুনতে পাচ্ছি না আজকাল।
এখন খুবই হালকা স্বরে লিখি, হৃদয় যেখানে হেরাগুহাকে মান্য করে হাটু মুড়ে বসে গেছে পথে আজ সেখানে ঝড়ের পূর্বাভাস। এখন অতীত এসে কাছে বসে, অনেকক্ষণ গল্প করে যায়। আর যারা খুশিমুখে উদযাপন করছে আমার থমকে যাওয়াকে তারা কেউ কেউ লিখে রাখছে সব।
একদিন পৃথিবীর দিকে মুখ করে শিশুর মতন জেদ নিয়ে লিখে গেছি অনন্তস্বর, এখন ঘাড় মুষড়ে গেছে, সিনা থেকে নেমে গেছে উদ্যম। একটা উজ্জীবিত আকাঙ্ক্ষা সামনে রেখে অনেক লিখেছি ধুলি ও দন্ত্যন, তারপর সময়কে ঘুমিয়ে পড়তে দেখে কদাচিৎ বিশ্রাম নিয়েছি। এখন আর নামতার সুর নেই, ভিড় কমছে তোমাদের, আর তোমাদেরই খোশ গল্প হতে অন্যত্র লাফিয়ে যাচ্ছে ঈশপের খরগোশ।
এইভাবে কোনও কোনও রাতে
দ্রাঘিমালণ্ঠনে আলোকিত হয় সম্পর্কের ঝাড়!
সুদূর বনানী জ্বেলে এক পরাহত জোছনার মুখ
উজ্জ্বলতর, এইভাবে গোপন দরোজা খুলে
বেড়িয়ে পড়েছে রাত, ক্ষীণ স্বরে গায় অন্তিম ব্যাঞ্জনা!
আর এইদিকে স্মৃতির বাগান পেয়ে
পালকঝরা পাখির ফোঁপানো মুখ অবিকল রক্তবর্ণ লাগে–
যেনো তুমি অপাপবিদ্ধ কেউ, অচেনা সবুজবীথি
কুড়াতে এসেছো গাঁয়ে!
অথচ কটুক্তিকে অধ্যাদেশ ভ্রম হয়, কেউ যেচে আরতিভ্রষ্ট করে তোমার, যেন-বা খল মেঘে ছেয়ে আছে ঘর, চেনা অক্ষর!