ফড়িং জীবন

ইদানীং অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখে হেলাল। রাতে ঘুম হয় না। অনেকগুলো গাঙপাখি, গায়ের রঙ হলুদ, ঝাঁক বেঁধে হেলালের দিকে ধেয়ে আসতে থাকে। অদ্ভুত তাদের মুখভঙ্গি। বিচিত্র তাদের শব্দ। ঘুম ভেঙে যায় তার। প্রায় একই রকম স্বপ্ন প্রতি রাতে। নির্ঘুম রাতের পর ক্লান্তি আসে শরীরে। কিন্তু ঘুমোতে পারে না সে। চোখের পাতা থেকে ঘুম যেন নির্বাসনে গেছে বহুদিন আগেই। ঘুমানোর বৃথা চেষ্টা করে হেলাল ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অদ্ভুত এক নীরবতা এখন তার চারপাশে। শুধুমাত্র হাত-পায়ের শেকলের শব্দ ছাড়া আর যেন কোনো শব্দই নেই।

নির্ঘুম রাতগুলোতে হেলাল ভেবেছে অনেক। সে জানত রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েও সে বাঁচতে পারবে না। তবুও মনের কোথায় যেন একটা ক্ষীণ আশা ছিল। যদি বেঁচে থাকা যায় এই পৃথিবীতে। সত্যিই সে ভালো মানুষ হয়ে যেত। কারও ওপর কোনো রাগ, কোনো ঘৃণা থাকত না। কারণ ওগুলো বহু আগেই সে বদ্ধ সেলের চার দেয়ালে কবর দিয়েছে। এখন আর স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে না। যদি বেঁচে থাকতে পারত তাহলে বহু দূরে চলে যেত। সব পরিচিতদের কাছ থেকে দূরে। সব বন্ধন ছিন্ন করে।

ইস! কেন যে পৃথিবীতে ফাঁসি নামক শাস্তিটা আছে। তা না হলে আজ থেকে দশ, বিশ, ত্রিশ বছর পর হলেও একদিন সে শিমির মুখ দেখতে পেত। বন্দিজীবনের অনেক বছরের অপেক্ষার পর শিমি তাকে কি চিনতে পারত? নাকি শুধুই তিরস্কার, আর ঘৃণা, আর এক দলা থুতু।

এসবই এখন স্বপ্ন। কয়েকদিন আগেই তার ফাঁসির আদেশ শোনানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতি তার প্রাণভিক্ষা দেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ নেই তার। যেখানে সৃষ্টিকর্তাই তাকে প্রাণভিক্ষা দেননি সেখানে রাষ্ট্রপতি ভিক্ষা দেবার কে? কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপারটা ঘটল তখনই যখন সে জানল তার জীবনের আয়ু আর মাত্র দুঘণ্টা। দুচোখ বেয়ে কেবল ঘুম আসছে তার। কেবল ঘুম আর ঘুম।

হেলাল তার সর্বশক্তি দিয়ে জেগে থাকার চেষ্টা করছে। কিছুতেই ঘুমোনো চলবে না। সময়ের ক্ষুদ্রতম এককে অবশিষ্ট জীবনকে করতে হবে দীর্ঘ। একেকটি সেকেন্ডের মূল্য এখন তার কাছে একেকটি বছরের সমান। বস্তুগত সময়ের হিসেবে আর মাত্র দুঘণ্টা পরেই সে ঘুমোবে অনন্ত সময়ের জন্য। তারপর আবারও সৃষ্টিকর্তার বিচার। তখন হেলালের পক্ষে-বিপক্ষে উকিল থাকবে না। মিথ্যেকে পেঁচিয়ে ফাঁসির মঞ্চে আনবে না কেউ। সৃষ্টিকর্তার ওপর এতটুকু বিশ্বাস তার আছে। সেই বিচারের দিনে হেলাল কি আজকের অপরাধীর বিচার চাইবে? কেন চাইবে? কেনই বা চাইবে?

না, না, এসব ভেবে সে তার জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চায় না। এক ফড়িং জীবনের সমান সময়কে তার অর্থবহ করে তুলতে হবে। তার জীবনে যে নগদ বলতে আর কিছুই নেই। থাকার মধ্যে আছে কিছু খুচরো স্মৃতি। সেগুলোও এতদিন চাপা ছিল হৃদয়ের ধ্বংসস্তূপে। রায় হবার পর থেকেই হেলাল সুনিপুণ প্রত্নতাত্ত্বিকের মতো স্মৃতিগুলো খুঁড়ে বের করেছে। স্পষ্ট স্মৃতি না, একরকম ধূসরই বলা যায়।

ইটচাপা কিশোরী ঘাসের মতো একটা স্মৃতি উঠে আসে হৃদয়ের আয়নায়। খুব ভালো ছাত্র ছিল সে। তার জগৎ ছিল পড়ার টেবিলের চারপাশ ঘিরে। একসময় কবিতা আবৃত্তি করত। কথাটা মনে হতেই হাসি পেল তার। তার মতো খুনি, ক্যাডার একসময় কবিতার অন্তমিল খুঁজতো। কাঁচা হাতে কিছু কবিতাও লিখেছিল। শিমিকে ভালোবেসে একবার চিঠিতে লিখেছিল দুটো কবিতার লাইনÍ

এখন আমি পরাযৌবনের আদম

যদিও আমি হাত দিয়ে যা ছুঁই

তাই কষ্ট হয়ে যায়।

কবিতাটির কোনো অন্তমিল নেই। ছন্দ নেই। কিছুই নেই। তবুও শিমিকে লেখার পর অতিপ্রাকৃত এক আবেগে দুলে উঠেছিল তার মন। শিমি কবিতা পড়ে হেসেছিল। হয়তো অবহেলার হাসি। হেলাল জানত শিমি ইমতিয়াজ নামের অন্য একজনকে ভালোবাসে। তবুও মনের ভুলেই হেলালের মনে হতো, এও এক ভালোবাসা। পৃথিবীর শুদ্ধতম উচ্চারণ।

কী ভাবছে এসব! এসব প্রেম, ভালোবাসা বলতে হেলালের মনে আর কিছুই নেই। শিমি তো ইমতিয়াজের সাথে সুখেই আছে। কে জানে মহাকালের বিশাল সময় সমুদ্রের কোনো এক মুহূর্তে হেলাল নামক কারও কথা তার মনে পড়বে কি না! ইতিহাস তো এতটা নির্দয় ছিল না কখনও।

না, না, সময় আর নেই। এসব ভাবনা না। তাকে ভাবতে হবে সুখস্মৃতি। অর্থবহ করে তুলতে হবে ফড়িঙ জীবন।

মায়ের অনেক আশা ছিল তাকে নিয়ে। বড় হয়ে সে অনেক বড় মানুষ হবে। তাদের সব স্বপ্নপূরণ করবে। বাড়িতে বড় কোনো মাছ রাঁধলে মুড়োটা আসত তার প্লেটেই। তখন তার ছোটবোন অন্য কাঁদত। হেলাল তাকে মুড়ো তুলে দিত। আহা! কি আনন্দেরই না ছিল সেসব দিন। কলেজে টেবিল টেনিসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মেডেলটা ছোটবোনের হাতে তুলে দিয়েছিল সে। অন্য সেটা গলায় ঝুলিয়ে সারা পাড়া দেখিয়ে বেড়াল।

ভালো ছবি আঁকতে পারত না হেলাল। কিন্তু মনের মাঝে এঁকে ফেলেছিল শিমির ছবি। বাবা, মা, বোন আর শিমিকে নিয়ে আজ তার বেঁচে থাকার বড্ড আকাঙ্ক্ষা হয়। অথচ জেলখানার বদ্ধ দেয়ালে একটি বারের জন্যও আসেনি শিমি। ইতিহাস এভাবেই নিষ্ঠুর হয়! জানা ছিল না তার।

বাবার রাগ ভেঙেছিল বহুদিন পর। খুনি ছেলের প্রতি তার রাগ দেরিতে হলেও ভেঙেছে। এতটুকুই জীবনের বিশাল প্রাপ্তি। মা-বাবার চেয়ে পৃথিবীতে আপন আর কেউ নেই, এ কথা হেলাল সেদিন বুঝেছিল, হৃদয়ের গভীর থেকে। শুধু হৃদয় ছিঁড়ে তাদের বোঝাতে পারেনি। তার বুকেও অনেক কষ্টের আগুন। বোঝানো যায় না কিছুতেই।

নাহ! আজকের রাতে কষ্টের কিছু ভাবলে চলবে না। ভাবতে হবে সুখস্মৃতি। উঠোনে মায়ের কোলে শুয়ে আকাশ দেখার স্মৃতি। মা বলত, জানিস বাবা, মানুষ মরে গেলে আকাশের তারা হয়। যে যত ভালো মানুষ থাকে দুনিয়ায়, সেই তারা বেশি চকচক করে। সে ভাবত বড় হয়ে ভালো মানুষ হতে হবে। চকচকে তারা হতে হবে। হাজার বছর আকাশের তারা হয়ে এ পৃথিবীর নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে হবে।

মা রোজ সকালে ঘুম থেকে তুলে দিতেন। ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ শব্দে ঘুম ভাঙত তার। নামাজ শেষে দৌড়ে যেত ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে। ওখানে সকালের সূর্য উঠত। দূরে বেয়ে যেত দু-একটা পাল তোলা নৌকা। তারপর পড়াশোনা, ভালো রেজাল্ট। বাবার বুক গর্বে ভরে যেত। হয়তো ভাবত আমার ছেলে এ সমাজের মুখ উজ্জ্বল করবে।

ক্ষমা করো মা। ক্ষমা করো বাবা। তোমাদের ঋণ শোধ করা এ খুনি হেলালের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সন্তান হিসেবে তোমাদের ক্ষমা পেতে চাই। বাবা, সত্যি করে বলছি। মা, তোমাকে কখনও মিথ্যে বলিনি। পৃথিবীর কেউ বিশ্বাস করুক আর নাই করুক, আমি খুন করিনি। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।

মা, এ পৃথিবীতে শেষ সময়ে তোমার বুকে মাথা রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারলাম না। কিন্তু আমি জানি পরপারে তুমি আমাকে অবশ্যই বুকে টেনে নেবে। কোনো দুঃখ নেই মা। শুধু এতটুকুই কষ্ট সবার কাছে অপরাধী হয়ে এ পৃথিবী ছেড়ে যাচ্ছি।

হৃদয় কেঁপে এসব ভাবনা আসে হেলালের। কান্না পায়, অশ্রু বেয়ে পড়ে চোখের কোনায়। অশ্রুর অদৃশ্য নদীতে বিধাতার আরশ দোলে, কেউ জানে না।

ভীষণ ঘুম পাচ্ছে হেলালের। অথচ ঘুমোলে চলবে না। ফাঁসির আগ পর্যন্ত ভাবতে হবে সুন্দর কোনো স্মৃতি। এ সময় প্রশ্নটা এলো কানে, জীবনের শেষ ইচ্ছে কী?

কিছুক্ষণ চুপ থাকে হেলাল। ইচ্ছের কি কোন শেষ আছে? ইচ্ছে তো হয় মায়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমাই। বাবাকে সালাম করে বলি আমাকে বুকে টেনে নাও বাবা। এ বুকে কেবলই কষ্টের নদী। ছোটবোনকে বলি, যা আজ মাছের মুড়োটা তুই খাবি। আর, আর…শিমিকে বলি, জীবনে একটিবার কি ভালোবেসে আমার হাত ধরে হাঁটবে? কিছুই বলা হয় না হেলালের। তবুও মুখ তুলে বলল, আকাশ দেখব।

আকাশে লক্ষ লক্ষ তারা। কী সুন্দর স্নিগ্ধ আকাশ!

শিমির খুব চাঁদ পছন্দ ছিল। প্রায়ই চাঁদনি রাতে সারারাত ছাদে বসে থাকত। চাঁদের প্রতি শিমির দুর্বলতার কারণেই হেলাল একটা চাঁদের পোস্টার কিনে এনে ঘরে টানিয়েছিল। সমুদ্রে চাঁদের আলোয় ঢেউ উপচে পড়ছে তীরে।

পোস্টারের দিকে তাকিয়ে হেলাল ভাবত, এমন অপরূপ দৃশ্যও পৃথিবীতে আছে! মানুষ সম্ভবত স্বপ্ন নিয়েই বাঁচতে পছন্দ করে। হেলালও শিমিকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন দেখত। একদিন শিমিই হেলালকে বলেছিল, কেউ আমাকে ভালোবাসতে পারে, এ কথা কেন জানি আমার বিশ্বাসই হয় না। আসলে হেলালের সব স্বপ্ন, সব ভালোবাসাই ছিল শিমির কাছে অর্থহীন। অথচ এসব অর্থহীন স্বপ্ন দেখতেই তার ভালো লাগত।

ভার্সিটিতে পড়ার সময়ই হেলালের প্রথম পচন ধরে। মানুষ হিসেবে সে কখন যে পচতে থাকে তা সে জানত না। আজ সেইসব ভাবনা, সেইসব অন্ধকারের মুখ হেলাল মনে করতে চায় না। আশ্চর্য হলেও সত্যি চোখ বন্ধ করলেই হেলালের চোখের সামনে প্রায়ই ভেসে উঠত ফজিবর স্যারের মুখ। পঞ্চগড় বিপি স্কুলে পড়ার সময় শেষবার তার সাথে দেখা হয়েছিল। স্যারের বাড়ি ছিল আটোয়ারী। স্যার বলতেন, মানুষ যা ভাবে, যা সে বিশ্বাস করে, তা সে অবশ্যই পাবে। স্যারকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, আমি তো স্যার এমন করে কখনও ভাবিনি। সমাজ পরিবর্তনের ইচ্ছে ছিল মনে। তারুণ্যের প্রবল ইচ্ছেশক্তি তাই ভেঙেচুরে মুষড়ে দিতে চেয়েছিল সব। এক মুহূর্তে বদলে দিতে চেয়েছিল ঝং ধরা সমাজটাকে। তবে কি আমার মনে বিশ্বাসের কমতি ছিল? আজ বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

‘আপনার সময় শেষ’, কথাটা কানে এলো। দুর্বল এক জেল পুলিশ তীক্ষ্ণ কণ্ঠে কথাটা উচ্চারণ করল।

হেলাল শেষবারের মতো আকাশের দিকে তাকালো। অদ্ভুত অন্ধকার। অথচ তার মাঝেও তারাদের এক বিচিত্র আলো ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। হেলালের খুব তারা হতে ইচ্ছে করেছে। চকচকে তারা। সে কি ভালো মানুষ? ভালো মানুষ না হলে যে চকচকে তারা হওয়া যায় না। একজন ফাঁসির আসামিকে কি ভালো মানুষ বলা যায়?

ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে হেলাল একবার এদিক-ওদিক দেখল। আর মাত্র কিছুক্ষণ। তার মাথায় কালো টুপি পরাচ্ছে ভয়ংকর চেহারার জল্লাদ। কী সুনিপুণ কারিগর সে। দড়িটা মাথায় পরিয়ে দিতেও দেরি হলো না। আর মাত্র এক মিনিট, আর মাত্র ত্রিশ সেকেন্ড, দশ, নয়, আট…হেলাল চোখ বন্ধ করে। ভেসে ওঠে তার মায়ের মুখ। কী স্নিগ্ধ! কী সুন্দর সেই হাসিমাখা মুখ। হেলাল দৌড়ে গিয়ে তার মায়ের কোলে শুয়ে পড়ল…তিন…দুই…এক…শূন্য…

বি. দ্র. দর্পণে প্রকাশিত সকল লেখার স্বত্ব দর্পণ ম্যাগাজিন কর্তৃক সংরক্ষিত। দর্পণ থেকে কোনো লেখার অংশ অন্যত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে দর্পণের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।

একই ধরনের লেখা

দর্পণে লিখুন

গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, মুভি পর্যালোচনা, বই আলোচনা, ভ্রমণ অথবা দর্পণের যে কোনো বিভাগে

লেখা পাঠানোর ইমেইল

editor@dorpon.com.bd
নিয়মাবলী জানতে ক্লিক করুন
ADVERTISEMENT
মাসওয়ারি
কবিতা

টিফিনবাক্স ও পাঁচ মশলা স্বাদ

আবু তাহেরের তিনটি কবিতা রক্তাক্ত ডালিম অসময়ে ফেঁটে যাওয়া ডালিম, রক্তাক্ত বুক তুমি কাকে দেখাও? তুমিও কি ফলরাজ্যের অনাদৃত কোনো

কবিতা

তিনপাতা অরণ্য

মোহাম্মদ জসিমের দুটি কবিতা ‘তিনপাতা অরণ্য’ ও ‘মাধুকর’ তিনপাতা অরণ্য গাছেদের গণিকা গমনের গল্পে তিনপাতা অরণ্য লিখেছি; শুনছো…? অথচ—বাজপাখির ঠোঁট

অন্য স‌ন্ধ্যে, ভিন্ন বি‌থো‌ফেন – শিল্পী নাজনীন

দী‌ঘিটা টলট‌লে। স্বচ্ছ। কাকচক্ষু কি এ‌কেই ব‌লে? অাকাশটা নে‌মে এ‌সে‌ছে। হঠাৎ তাকা‌লে ভ্রম হয়। অাকাশ না-‌কি দী‌ঘি? ঘুম ভে‌ঙে ও‌দি‌কে

গল্প

কৃষ্ণকলি

রাভি নদীর তীরবর্তী ভগ্নস্তুপের আড়ালে রাত্রির নির্জনতায় কুঁড়ি ও পাঁপড়ি বিষয়ক আলাপচারিতায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হলে দু’হাত দিয়ে নিজের কান