ছোটবেলার টেলিভিশন

স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসি, একে একে কত কিছু বের হয়ে আসে সেখান থেকে। কত মিষ্টি কথা, কল্পনা বিলাসী সময়, কত মিষ্টি মূহূর্ত । কত উষ্ণ বুক কত ভাবে আগলে রাখতো। কী বৈচিত্রপূর্ণ সময় ছিল ছোটবেলা! কি নিখাদ আনন্দ!

ছোটবেলা থেকেই একটু কল্পনাবিলাসী ছিলাম আমি। বাস্তবের চেয়ে একটু অন্যরকম কিছু ভালো লাগতো আমার। টেলিভিশন দেখাটাও সেজন্য খুব ভালো লাগতো হয়ত। তখন টেলিভিশন দেখতে পাওয়াটা ছিল স্বপ্নের মত। আমরা বলতাম টিভি দেখা। গ্রামের লোকেরা ‘ভ’ এর উচ্চারণ সঠিকভাবে করতে পারতো না। তারা বলত টিপি দেখি।

তো টিভি দেখার বিনিময়ে আমি যে কোনো কিছু করতে রাজি থাকতাম। অথচ আমাদের কোনো টিভি ছিল না। শুধু আমাদের না, সারা গ্রামে কারো ঘরেই টিভি ছিল না– একমাত্র চেয়ারম্যান বাড়ি ছাড়া। যেহেতু গাঁয়ে বিদ্যুৎ ছিল না সুতরাং চেয়ারম্যান বাড়ির টিভি চালানো হত ব্যাটারি দিয়ে। চেয়ারম্যান চাচা রাজনৈতিক মানুষ। তার বাড়ির টিভি বেশিরভাগ সময়ই তার বাড়িতে থাকতো না। বাজারে যে ক্লাবঘর ছিল সেখানে থাকতো। ক্লাবঘর নিয়ে নানা কুকথা প্রচলিত ছিল। সেখানে জুয়া খেলা হয়, লোকেরা মদ খায়, খারাপ মেয়েদের আনাগোনা এইসব। এসব কারণে আমরা সেখানে টিভি দেখতে যেতাম না। আর গেলেও ছোটদেরকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হতো না। ছোটদের জন্য সেটা ছিল একটা নিষিদ্ধ জায়গা।

কিন্তু টিভি তো আমাকে দেখতেই হবে। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহের অন্তত একটা দিন। কত কিছুর আয়োজন থাকে টিভিতে। রাত্রিতে যা হয় তা না হয় না দেখলাম, কিন্তু সাড়ে তিনটা থেকে যে সিনেমা হবে তা তো আমাকে দেখতেই হবে। নায়ক, নায়িকা, ভিলেনের সাথে নায়কের মারামারি– সেসব এক স্মৃতি বটে! আমরা মারামারিকে বলতাম ফাইট করা আর ভিলেন বা খল চরিত্রে যে অভিনয় করতো তাকে বলতাম হারামি। সিনেমার শেষে নায়ক হারামিকে পেটাবে এরকম সুখকর দৃশ্য আর কয়টা আছে। কোনো কিছুর বিনিময়েই এই দৃশ্য মিস করা যাবে না।

আমাদের গায়ে টিভি ছিল না বটে তবে পাশের গ্রামে টিভি ছিল। সে গায়ে বিদ্যুৎ আছে। সবাই প্রায় অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ। ঐ গায়ে আমার খালার বাড়ি। সেই খালার বাড়িতেও টিভি ছিল। সুতরাং টিভি দেখার ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে আমি খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলাম। শুক্রবারে টিভি দেখার জন্য আমি সেখানে চলে যেতাম।

আমার মা আমার পড়াশুনা নিয়ে খুব সিরিয়াস থাকলেও শুক্রবারের একবেলার জন্য তেমন কিছু বলতেন না। বরং জুমার নামাজ শেষে খাওয়া-দাওয়া করার পর মা সুন্দর করে সাজিয়ে দিতেন। ভালো জামাকাপড় খুব একটা ছিল না। যেটা থাকতো সেটাই পড়তাম। মা মাথায় তেল দিয়ে সুন্দর করে চুল আঁচেড়ে দিতেন। তারপর কপালের একপাশে ছোট্ট করে একটা কাজলের টিপ। কুটুমবাড়ি যাচ্ছি বলে কথা।

আমার সঙ্গী ছিল আমার এক আপা। আমার এক বছরের বড় খালাতো বোন। সেজেগুজে বের হয়ে পড়তাম দুজন। গন্তব্য বাড়ি থেকে দেড় মাইল দূরের আমার খালার বাড়ি। উদ্দেশ্য টিভি দেখা। টিভি দেখার আনন্দের কাছে পথের এই দূরত্ব কোন ব্যপারই ছিল না। এটা শুধু আনন্দেরই বিষয় নয় এটা ছিল আমাদের জন্য একপ্রকার অ্যাডভেঞ্চারও বটে। দেড় মাইল দূরত্ব খুব দ্রুত পায়ে হেঁটে আমরা নিমেষেই পৌঁছে যেতাম। কিন্তু তারপরই ছিল আসল চ্যালেঞ্জ, বাড়ির ভেতর প্রবেশ করা। ও বাড়িতে একটা খুনখুনে বুড়ো কুকুর ছিল। খুব খারাপ অবস্থা ছিল কুকুরটার। গায়ে পশমের বালাই ছিল না। চেহারাও ছিল বিদঘুটে। আমরা যাকে নেড়ি কুকুর বলি– সেরকম জাত নেড়ি কুকুর ছিল সেটা। কিন্তু নেড়ি কুকুর হলে কি হবে, তার তেজ ছিল ভয়ানক। ঠিক ছাল নাই কুত্তার বাঘা নামের মত অবস্থা। বাড়ির মানুষ ব্যতীত অন্য কেউ ঐ বাড়িতে ঢুকতে গেলে ওটা দাঁত খিচিয়ে তেড়ে কামড়াতে আসত।

আমাদের সাথে কুকুরটির শত্রুতা যেন একটু বেশিই ছিল। কারণ আমরা বাড়ির কাছাকাছি গেলেই ও কিভাবে যেন টের পেয়ে যেত। তারপর দাত খিঁচিয়ে ঘেউ ঘেউ করে কামড়াতে আসত। আমার খালার বাড়িতে ঢোকার তিনটি গলি ছিল। আমরা আগে পা টিপে টিপে পরীক্ষা করে নিতাম কোন গলিতে বুড়ো কুকুর শুয়ে আছে। তারপর অন্য গলি দিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকতাম। তারপরও কোনো কোনো দিন রক্ষা হতো না। কুকুর বুঝতে পারত। তখন কুকুরের তাড়া খেতে হতো। সেসময় খালা এসে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে যেত। তারপর সেই কাঙ্ক্ষিত টিভি দেখা। খালার শোবার ঘরেই টিভি ছিল। বেশ আয়েশ করে খাটের উপর বসে টিভি দেখা যেতো। তিনঘন্টার সিনেমা। কিভাবে সময় পেরোত বুঝতেই পারতাম না। তারপর সিনেমা শেষ হলে ফেরার পালা। তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা।

আমি আর আপা। আপা আমার চেয়ে এক বছরের বড় বটে, তবে তা নামেমাত্র। আদতে আমরাতো দুজনেই খুব ছোট এবং ভিতুর ডিম। আগেই বলেছি আমাদের বাড়ি থেকে খালার বাড়ির দূরত্ব ছিল দেড় মাইলের মত পথ। দূরত্ব সমস্যা ছিল না। সমস্যা ছিল পথের ভয়। যাওয়ার পথে খালাদের গ্রাম যেখানে শেষ হয়েছে সেখানে একটা কবরস্থান ছিল। একটা বড় বটগাছ ছিল সেখানে। জায়গাটিকে আমরা বাসাবাড়ি বলতাম। কবরস্থানের পাশ দিয়ে আমাদের যাবার রাস্তা। কবরস্থান পার হয়ে খানিকটা ফাঁকা রাস্তা। কোনো বাড়িঘর নেই। তারপর আমাদের গ্রামের শুরু। ফেরার সময় কবরস্থানের কথা মনে হয়ে বুক কেঁপে উঠত। কত প্রকার ভয়ঙ্কর গল্প প্রচলিত ছিল কবরস্থানকে ঘিরে। সেখানে জিনেদের আড্ডা, ভূতেরা নাচানাচি করে। কতজন সাদা কাপড় পড়া ভূত দেখেছে তার ইয়াত্তা নেই। তার সাথে দেশোয়ালি নামক একপ্রকার ভূতের গল্প প্রচলিত ছিল। সেই দেশোয়ালির উচ্চতা পাঁচ হাত, মাথায় পাগড়ি পড়ে থাকে সে। হাতে থাকে ইয়া বড় লাঠি। কোনো পথিক যদি সন্ধ্যা কিংবা রাত্রে একা সে পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দেশোয়ালির সামনে পড়ত তবে দেশোয়লি তাকে পেটাতে পেটাতে কাদায় পুতে দিত। এইসব ভয়ঙ্কর গল্প প্রচলিত ছিল। টিভি দেখে কবরস্থানের কাছ দিয়ে ফেরার সময় এইসব গল্প বেশি করে মনে পড়ত। ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যেত। কবরস্থানের কাছাকাছি এসেই আমরা দুজন চোখ বুজে ঝেড়ে দৌড় লাগাতাম। দৌড়ানোর সময় মনে হতো পেছনে পেছেনে কেউ দৌড়ে আসছে। তারপর চোখ খুলে যখন গ্রামের বাড়িগুলো দেখা যেত তখন থামতাম। ততক্ষণে বুকে হাপড় চলছে। তারপরও কুকুড়ের তাড়া, সন্ধ্যাবেলার গোরস্থানের ভয় এসব জয় করেই প্রতি শুক্রবার টিভি দেখতে যেতাম। কোনো কোনো সময় আপা যেতে চাইত না। তখন আমি একাই যেতাম। অ্যাডভেঞ্চারটা আরও বেশি হতো তখন।

সবার মত ছোটবেলায় আমারও নানাবাড়ি যেতে খুব ভালো লাগতো। নানাবাড়ি ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। তার অবশ্য কিছু কারণ ছিল। আমার নানা ছিলেন অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ। প্রাচুর্য ছিল সেখানে। আনন্দ ছিল। খালা-মামা-মামি সবাই খুব আদর করত। ভালোবাসত। সবচেয়ে বড় কথা ছিল নানাবাড়িতে টিভি ছিল আর ছিল টিভি দেখার অবাধ স্বাধীনতা। বছরের শেষে যখন স্কুল ছুটি হতো তখন কখনই আমরা বাড়িতে থাকতাম না। স্কুল ছুটি হলেই মা গাট্টি বোচকা বেধে বাপের বাড়িতে রওনা দিত। সাথে বাবা, ছোটবোন আর আমি। পুরো ছুটি নানাবাড়িতে কাটাতাম। তখন শুধু শুক্রবার না যে কয়দিন থাকতাম সবদিনই টিভি দেখতে পেতাম। যেহেতু তখনও ডিশ এন্টেনা প্রচলিত ছিল না গ্রামের দিকে তাই একমাত্র চ্যানেল ছিল বিটিভি। তখন বিটিভির অবস্থা এমন ছিল না। চমৎকার চমৎকার সব অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো। সেসব মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করতাম। কিংবা সবকিছুই হয়ত এরকম ছিল, আমরা ছিলাম অন্যরকম। সবকিছুতে চমৎকৃত হতাম। মুগ্ধ হতাম। নানাবাড়িতে শুক্রবার সকাল থেকে টিভি দেখতে বসতাম। গানের অনুষ্ঠান, হামদ নাতের অনুষ্ঠান, ছোটদের জন্য মুস্তাফা মেনোয়ারের আঁকার অনুষ্ঠান, মঞ্চনাটক এসব সকালের দিকে প্রচারিত হতো। কোনো অনুষ্ঠানই বাদ দিতাম না। সাড়ে বারোটার দিকে চ্যানেল বন্ধ হয়ে ঝিরঝির না করা পর্যন্ত উঠতাম না। চ্যানেল খুলত আবার তিনটায়। কিন্তু আড়াইটা থেকে টিভির পর্দায় স্কেল টানা সাতরং এর রংধনুর মত দাগ উঠে থাকত। আমরা ছোটরা কয়েকজন মিলে টিভি চালিয়ে টিভির পর্দার ঐ রংধনুর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করতাম কখন সূচনা সংগীত বেজে ওঠে। একসময় অপেক্ষার পালা শেষ হয়ে সূচনা সংগীত বেজে উঠত। তারপর কোরআন তেলাওয়াত, গীতা এবং ত্রিপটক পাঠ, অতঃপর ঘোষকের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সিনেমার ঘোষণা শোনা যেত। তখন ধীরে ধীরে টিভির রুম পরিপূর্ণ হয়ে উঠত। মামা, মামি, খালাসহ ছোটরা। পাশের বাড়ির যাদের টিভি ছিল না তারাও আসত। আমরা খাটের উপর বসতাম। বাইরে থেকে যারা আসত তাদের মধ্যে বড়দের জন্য চেয়ার পাতা থাকত। ছোটরা মাদুরে বসত। পুরো ঘর হয়ে যেত আস্ত একটা সিনেমা হল।

মারপিটের সিনেমা খুব প্রিয় ছিল আমার। সেজন্য সিনেমার শেষাংশ সবচেয়ে ভালো লাগতো আমার। কারণ সিনেমার কাহিনি যাই হোক না কেন, সিনেমার শেষে নায়ক ভিলেনকে পেটাবে। অন্যান্য সিনেমাও খারাপ লাগতো না। মোটকথা সিনেমা ভালো লাগতো আমার। সিনেমা চলার সময় চারিদিকে পিনপতন নিরবতা বিরাজ করত। সবার সাথে সাথে আমিও হয়ে উঠতাম সিনেমার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। নায়কের সফলতায় খুশি হতাম, ভিলেনের কার্যক্রমে রাগ হতো। আবার আবেগী বা কান্নার কোনো দৃশ্যে চোখে পানি চলে আসত। তখন খুব কষ্ট করে কান্না আটকাতাম। আর যদি কান্না আটকাতে ব্যর্থ হতাম তখন নিচের দিকে মুখ করে বড়দের কাছ থেকে চোখের পানি লুকোতাম। বড়রা দেখে ফেললে যে লজ্জার একশেষ হয়ে যাবে।

একসময় সিনেমা শেষ হতো। সবাই যে যার মত চলে যেত। সবার মুখে একটা তৃপ্তির চিহ্ন লেগে থাকত। আবার আরেক শুক্রবারের অপেক্ষা। আমরা ছোটরা বের হয়ে সিনেমার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। আরও কত অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো মুগ্ধ হওয়ার মত। আলিফ লায়লা, সিন্দাবাদ, রবিনহুড আরও কত কী! কত শত চরিত্র আমাদের ছোট মনের গভীরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করত। মাঝে মাঝে আমরা কেহেরমান, সিন্দাবাদ কিংবা রবিনহুড সেজে বিভিন্ন খেলা খেলতাম। স্বপ্নের মত ছিল সেসব দিন। আসলে জীবনটাই একটা স্বপ্ন ছিল তখন।

একসময় ছুটি শেষ হতো। এবার ফেরার পালা। খুব মনখারাপ লাগতো তখন। বাড়ি ফিরতাম আরেকটি ছুটির প্রতীক্ষা নিয়ে। আবার কবে নানাবাড়ি আসতে পারবো সেই প্রতীক্ষা। বাড়ি ফিরে শুরু হতো সেই আগের অ্যাডভেঞ্চার। প্রতি শুক্রবার খালার বাড়িতে টিভি দেখতে যাওয়া। মাঝে মাঝে খালার বাড়িতে না গিয়ে দল বেধে অন্য ছেলেদের সাথে অন্য কোনো বাড়িতে টিভি দেখতে যেতাম। অনেক সময় সেসব বাড়িতে ঘরের দরজা আঁটা থাকতো। ঢুকতে দিত না। তবে জানালা খুলে রাখতো। তখন জানালা দিয়ে টিভি দেখতাম। তারপরও টিভি দেখার আনন্দের কাছে দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট ম্লান হয়ে যেত। এরকম কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে টিভি দেখার সাথে। কত মানুষ মনের মনিটরে হানা দেয় সেসব দিনের। একটা টেলিভিশন কত মানুষকে একসাথে করত ভাবা যায়!

এখন বাড়ির ভেতরেই ঘরে ঘরে টেলিভিশন। যার যার তার তার। টিভি দেখার সেই মজাটাও আর পাওয়া যায় না কেন যেন। বিটিভির সেই সুবর্ণ সময়ও চলে গেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। তার বদলে ডিশ লাইনের দৌরাত্ম্য। কত শত চ্যানেল আজকাল দেখা যায়। রিমোট টিপলেই অন্য কিছু। তাতে সংস্কৃতিও থাকে আবার অপসংস্কৃতিও। আজকাল সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কথা খুব বেশি উচ্চারিত হয়। কতকিছুই দেখি আজকাল, কিন্তু ছোটবেলার মত কেন যেন আর সেরকম হয় না। আসলে কিছুই আর সেরকম হয় না। বড় হতে হতে সবকিছুই বড় হয়ে গেছে। তার সাথে হারানোর তালিকাটাও বড় হচ্ছে। কত মানুষ হারিয়ে গেছে যারা বুক দিয়ে আগলে রাখত। যাদের কাছে স্নেহের ওম পেতাম, আদরের উষ্ণতা পেতাম তারা এক এক করে হারিয়ে গেছে। সমাজের মত নিজের মাঝেও বিচ্ছিন্নতা এসে ভর করেছে। সবাই বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, বুড়ো হচ্ছে। আমিও তাই।

এই বিচ্ছিন্নতার শেষ কোথায়? শেষ আছে কি? আছে হয়ত। টিভির মনিটরে সিনেমার শেষে যেমন সমাপ্তি লেখা ওঠে, সেরকম জীবনের মনিটরে যখন সমাপ্তি লেখা উঠবে তখন হয়ত চলমান এই বিচ্ছিন্নতার সমাপ্তি ঘটবে। তখন অবশ্য হারানোর ভয়টাও শেষ হয়ে যাবে।

বি. দ্র. দর্পণে প্রকাশিত সকল লেখার স্বত্ব দর্পণ ম্যাগাজিন কর্তৃক সংরক্ষিত। দর্পণ থেকে কোনো লেখার অংশ অন্যত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে দর্পণের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।

একই ধরনের লেখা

দর্পণে লিখুন

গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, মুভি পর্যালোচনা, বই আলোচনা, ভ্রমণ অথবা দর্পণের যে কোনো বিভাগে

লেখা পাঠানোর ইমেইল

editor@dorpon.com.bd
নিয়মাবলী জানতে ক্লিক করুন
ADVERTISEMENT
মাসওয়ারি
গল্প

পাখিদের সংসার

ভগ্নপ্রায় শিলালিপিতে বিবর্ণ রক্ত; কাঁঠফাটা রোদে কাকের কা-কা ব্যঞ্জণায় নিথর প্রাণ; আর উদাসী ঘুঘুর কণ্ঠে ধ্বনীত হয় বিরহের তানপুরা- তানপুরার

গল্প

ছুটি

বালকদিগের সর্দার ফটিক চক্রবর্তীর মাথায় চট্ করিয়া একটা নূতন ভাবোদয় হইল; নদীর ধারে একটা প্রকাণ্ড শালকাষ্ঠ মাস্তুলে রূপান্তরিত হইবার প্রতীক্ষায়

গল্প

ফুলার রোড

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দু চারটে জায়গা আপনার বিশেষভাবে মনে জড়িয়ে থাকবে— ব্যামফিল্ড ফুলারের স্মৃতিস্মারক, ফুলার রোড তার মধ্যে বিশিষ্ট। এই

গল্প

চতুর্থ পানিপথের যুদ্ধ

আমাদের ক্লাসটা ছিল একটি নৃতত্বের ল্যাবরেটরির মতো। এমন বিচিত্র মানবতার নমুনা আর কোন্ স্কুলে কোন্‌  ক্লাসে আছে জানি না। তিনটি