যে-কথা বলিতে চাই

যে-কথা বলিতে চাই,
         বলা হয় নাই,
             সে কেবল এই–
চিরদিবসের বিশ্ব আঁখিসম্মুখেই
             দেখিনু সহস্রবার
             দুয়ারে আমার।
     অপরিচিতের এই চির পরিচয়
এতই সহজে নিত্য ভরিয়াছে গভীর হৃদয়
     সে-কথা বলিতে পারি এমন সরল বাণী
          আমি নাহি জানি।
 
শূন্য প্রান্তরের গান বাজে ওই একা ছায়াবটে;
     নদীর এপারে ঢালু তটে
          চাষি করিতেছে চাষ;
     উড়ে চলিয়াছে হাঁস
ওপারের জনশূন্য তৃণশূন্য বালুতীরতলে।
          চলে কি না চলে
        ক্লান্তস্রোত শীর্ণ নদী, নিমেষ-নিহত
          আধো-জাগা নয়নের মতো।
          পথখানি বাঁকা
     বহুশত বরষের পদচিহ্ন-আঁকা
চলেছে মাঠের ধারে, ফসল-খেতের যেন মিতা,
     নদীসাথে কুটিরের বহে কুটুম্বিতা।
 
ফাল্গুনের এ-আলোয় এই গ্রাম, ওই শূন্য মাঠ,
              ওই খেয়াঘাট,
ওই নীল নদীরেখা, ওই দূর বালুকার কোলে
      নিভৃত জলের ধারে চখাচখি কাকলি-কল্লোলে
          যেখানে বসায় মেলা– এই সব ছবি
              কতদিন দেখিয়াছে কবি।
শুধু এই চেয়ে দেখা, এই পথ বেয়ে চলে যাওয়া,
     এই আলো, এই হাওয়া,
এইমতো অস্ফুটধ্বনির গুঞ্জরণ,
     ভেসে-যাওয়া মেঘ হতে
     অকস্মাৎ নদীস্রোতে
          ছায়ার নিঃশব্দ সঞ্চরণ,
যে আনন্দ-বেদনায় এ জীবন বারেবারে করেছে উদাস
          হৃদয় খুঁজিছে আজি তাহারি প্রকাশ।
 
 
পদ্মা, ৮ ফাল্গুন, ১৩২২

বি. দ্র. দর্পণে প্রকাশিত সকল লেখার স্বত্ব দর্পণ ম্যাগাজিন কর্তৃক সংরক্ষিত। দর্পণ থেকে কোনো লেখার অংশ অন্যত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে দর্পণের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।

একই ধরনের লেখা

দর্পণে লিখুন

গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, মুভি পর্যালোচনা, বই আলোচনা, ভ্রমণ অথবা দর্পণের যে কোনো বিভাগে

লেখা পাঠানোর ইমেইল

editor@dorpon.com.bd
নিয়মাবলী জানতে ক্লিক করুন
ADVERTISEMENT
মাসওয়ারি
গল্প

ভাঙন

শরীরটাকে একরকম টেনে-হিঁচড়ে তনুশ্রী অটোয় এসে বসলো। অটোওয়ালাকে কী করে বাসার ঠিকানা বলেছিল অথবা আদৌ বলেছিল কি না, এখন আর

আবুল ফাতাহের থ্রিলার ‘অভ্রত্ব’: উন্মুখ আলোয় বদান্যতা

নিজস্ব গদ্যরীতি বা স্টাইল প্রত্যেক লেখকের জন্য কতটুকু প্রয়োজনীয়, তার ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা আমার নেই। তবে একজন লেখক তার সত্ত্বাকে

আঁধার – সাখাওয়াত আলী

হাসানের ধ্রুবদৃষ্টি বারবার রাস্তায় গিয়ে পতিত হচ্ছে। রাস্তাটি ফাঁকা। চকচকে কনক্রিটের পাকা রাস্তাটি এই আধো কৃষ্ণপক্ষের রাতেও তার জ্যোতি বিলীন

গল্প

ছায়ামানব

কাঠফাটা রোদ্দুরে দুপুরের পার্কে এখন মহাশূন্যতা– লোকজন নেই বললেই চলে। যে দু’চারজন এখানে সেখানে বসে আছে তারাও ঘেমে নেয়ে একাকার,