আদিত্য আজিজুল হাকিম

গৃহযুদ্ধ: আমেরিকার দ্বিতীয় স্বাধীনতা-১

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

১২ এপ্রিল, ১৮৬১। ফোর্ট সামটারে মুখোমুখি ইউনিয়ন এবং কনফেডারেট আর্মি। কনফেডারেট জেনারেল পিয়েরে জি টি বুয়েরেগার্ড এর নেতৃত্বে ইউনিয়ন আর্মির বিরুদ্ধে প্রথম গুলিবর্ষণ করা হলো।এর মাধ্যমে শুরু হয়ে গেল ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত রক্তক্ষয়ী এক গৃহযুদ্ধ যা পরবর্তীতে আমেরিকাসহ বিশ্বরাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলে।

তবে কেন শুরু হয়েছিল এই যুদ্ধ? কী ছিল তার পিছনের কারণগুলো?  তা জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে কয়েক দশক।


.

উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে দাসপ্রথা এক স্বাভাবিক ঘটনা দাস কেনা-বেচা, তাদের দিয়ে কায়িক পরিশ্রম করানো, এসব বর্তমানে অবিশ্বাস্য মনে হলেও তখনকার সময়ে তাই ছিল বাস্তবতা। আমেরিকার সিংহভাগ দাস আসত আফ্রিকা মহাদেশ থেকে। তাদের কোনো ধরনের মৌলিক অধিকার ছিল না। দাসরা ছিল তাদের মালিকের সম্পত্তি।মালিকরা দাসদের দিয়ে যা খুশি করাতে পারতো, তাতে তাদের প্রতিবাদ করার কোনো অধিকার ছিল না।

তবে আমেরিকার সব রাজ্যে দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল এমন নয়। উত্তরের রাজ্যগুলোতে দাস রাখার প্রচলন ছিল না। দাসপ্রথার প্রচলন ছিল মূলত দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে। যে রাজ্যগুলোতে দাস রাখার প্রচলন ছিল সেগুলোকে বলা হত “Slave State”  বা “দাসদের স্টেট”।

১৮১৫-৬১ সাল পর্যন্ত উত্তরের রাজ্যগুলোতে ব্যাপক আধুনিকায়ন ঘটছিল। সেখানে কৃষিকাজের পাশাপাশি শিল্পায়নও বেশ দ্রুতগতিতে ঘটছিল। উক্ত সময়ে উত্তরবাসীরা খাল, রাস্তা, বাষ্পচালিত নৌকা ও রেলপথে ব্যাপক বিনিয়োগ করছিল। এছাড়া উত্তরে গড়ে উঠছিল ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন, টেলিগ্রাফ ইত্যাদি। বিপরীতভাবে, দক্ষিণের অর্থনীতি তখন বড় খামার (Plantations)-এর উপর নির্ভরশীল ছিল।সেখানে সূতাশিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটে এবং সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত দাসরা। শিল্পকারখানা এবং রেলপথের পরিবর্তে দক্ষিণীরা বিনিয়োগ করেছিল দাসদের উপর। এর ফলে দক্ষিণীরা ব্যাপক ধনী হতে থাকে।

দাসপ্রথা মূলত আমেরিকার সূচনালগ্ন থেকেই এক আলোচিত বিষয়। স্বাধীনতার পর আমেরিকা নিজেদের অঞ্চল বৃদ্ধিকরণ নীতি গ্রহণ করে, ফলে আশেপাশের রাজ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। ১৮১৮ সালে দাসরাজ্য মিসৌরি আমেরিকার একটি রাজ্য হতে চায়, তখন কংগ্রেস দুই বছর আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে “Missouri Compromise”-এ উপনীত হয় এবং এর ফলে সেখানে দাসপ্রথা বজায় রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। মূলত তখন থেকেই আমেরিকার রাজনীতিতে দাসপন্থী এবং দাসবিরোধী দুই ধারা গড়ে উঠে। ১৮৪৮ সালে মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধে আমেরিকা নতুন করে ৫ লাখ বর্গমাইল নিজেদের অধিভুক্ত করার ফলে দাস বিতর্ক আবার নতুন করে সামনে চলে আসে। নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তরবাসীরা দাসপ্রথার বিরোধী ছিল এবং তারা মুক্তশ্রমে বিশ্বাসী ছিল, অর্থাৎ মজুরির বিনিময়ে শ্রমিক কাজ করবে, দাস হিসেবে নয়। উত্তরবাসীদের এমন চিন্তার প্রতি দক্ষিণীদের বিন্দুমাত্র সমর্থন ছিল না। দাস ব্যবসা তাদের জন্য ছিল এক লাভজনক বিষয়। তাই এই বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তর-দক্ষিণ দ্বন্দ্ব দিনদিন বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং রাজনীতিকদের পক্ষে ওই দ্বন্দ্ব নিরসন দিনদিন আরও কঠিন হতে থাকে।

Abraham Lincoln

১৮৬০ সালে এই সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করে যখন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী আব্রাহাম লিংকন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তখনকার রিপাবলিকান পার্টি দাসপ্রথার বিরোধী ছিল। এর ফলে লিংকন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই দক্ষিণের সাত রাজ্য সাউথ ক্যারলাইনা, মিসিসিপি, ফ্লোরিডা, আলাবামা, জর্জিয়া, লুইজিয়ানা এবং টেক্সাস আমেরিকা থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় এবং “কনফেডারেট স্টেটস অব আমেরিকা” গঠন করে।

মার্চ, ১৮৬১ সালে লিংকন ক্ষমতায় আসনে বসেন। ঠিক সেই সময়ে কনফেডারেশনের সেনাবাহিনী সাউথ ক্যারলাইনায় কেন্দ্ররক্ষিত “Fort Sumter” দখলের হুমকি দেয়। ১২ এপ্রিল লিংকন সেখানে রসদসহ নৌবহর পাঠান। ইউনিয়নের সেনাবাহিনীকে লক্ষ করে কনফেডারেট আর্মি প্রথম গুলিনিক্ষেপ করে, যার মাধ্যমে শুরু হয়ে যায় আমেরিকান গৃহযুদ্ধ। সামটারের কমান্ডার মেজর রবার্ট এন্ডারসন দুই দিনের গোলাবর্ষণের পর কনফেডারেশন সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। কনফেডারেশনের জয়লাভের পরপর আরও চারটি রাজ্য – ভার্জিনিয়া, আরকানসাস, নর্থ ক্যারলাইনা ও টেনেসি কনফেডারেসিতে যোগদান করে। এছাড়া দক্ষিণের তিনটি রাজ্য – মিসৌরি, কেন্টাকি এবং ম্যারিল্যান্ড আমেরিকা থেকে আলাদা না হলেও এসব রাজ্যের অনেক নাগরিক কনফেডারেসির প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল।


২.

প্রথম যুদ্ধে কনফেডারেসির জয় হলেও এটি কেবলমাত্র গৃহযুদ্ধের সূচনা ছিল। কেননা, ইউনিয়ন কনফেডারেসির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। প্রথমত, যে ২৩টি রাজ্য ইউনিয়নে রয়ে গিয়েছিল তাদের ছিল ২ কোটি ১০ লাখ নাগরিক, অপরপক্ষে কনফেডারেসির ১১টি রাজ্যে ছিল ৯০ লাখের মতো মানুষ, যার মধ্যে আবার প্রায় ৪০ লাখ ছিল দাস। উত্তরে প্রায় ১ লাখ শিল্প কারখানা ছিল, দক্ষিণের ছিল মাত্র ১৮০০০টি। এছাড়া রেলের ৭০ শতাংশ ছিল উত্তরে। ইউনিয়নের কার্যকর সরকার ছিল এবং ছোট কিন্তু দক্ষ সেনাবাহিনী ছিল। কনফেডারেসি তখন কেবল গঠিত হয়েছিল তাই তাদের কোনো কার্যকর সরকার বা নিয়মিত সেনাবাহিনী ছিল না। তবে, কনফেডারেসিকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। কেননা তাদের নেতৃত্বে ছিল কিছু দক্ষ মানুষ। কনফেডারেসির প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেফারসন ডেভিস, যিনি মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধের একজন নায়ক ছিলেন। এছাড়া তিনি আমেরিকার “Secretary of War” হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া কনফেডারেশন আর্মির কমান্ডে ছিলেন রবার্ট ই লি, স্টোনওয়াল জ্যাকসন এবং যে ই বি স্টুয়ার্ট, তারা আমেরিকার সেনাবাহিনী দক্ষ নেতা ছিলেন। তাছাড়া, আমেরিকা নিজেও তার স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রতিকূল অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশদের বিপক্ষে জয়লাভ করেছিল, ফলে কনফেডারেসিকে কোনোভাবেই হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ ছিল না।

যুদ্ধের প্রাথমিক সময়ে ইউনিয়নের ছিল মাত্র ১৬০০০ সদস্যের সেনাবাহিনী। কিন্তু খুব অল্প সময়ে কনফেডারেসি ১ লক্ষ সদস্যের সেনাবাহিনী গড়ে তুললে ইউনিয়ন তাদের সেনাসদস্য ১ লক্ষ সদস্যে উন্নীত করে।যুদ্ধ কেবল মাটিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। প্রেসিডেন্ট লিংকন কনফেডারেট স্টেটগুলোতে নৌ-অবরোধ জারি করেন। এছাড়া তিনি সেনা বাড়ানোর জন্য ২ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেন।

image source: bigthink.com

প্রাথমিকভাবে, কনফেডারেসির প্রেসিডেন্ট ডেভিস রক্ষণাত্মক কৌশল বজায় রাখার পক্ষে ছিলেন এবং সুযোগ অনুযায়ী উত্তরের অঞ্চলগুলোতে আক্রমণের পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, শুরুতে যদি উত্তরে আঘাত হানা যেত তবে অতর্কিত আক্রমণে উত্তর দিশেহারা হয়ে যেত। তবে আরেক পক্ষ মনে করেন, কনফেডারেসির জন্য তার অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ধরে রাখা বেশি প্রয়োজনীয় ছিল, তাই কনফেডারেসির কৌশল সঠিক ছিল। অন্যদিকে, লিংকনের কৌশল ছিল “Anaconda Plan” অর্থাৎ কনফেডারেসির উপকূলীয় অঞ্চলে অবরোধ বজায় রাখা এবং এর মাধ্যমে দক্ষিণকে অবরুদ্ধ করা। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণের আমদানি ও রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করে কনফেডারেসিকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করে ফেলা। ফলে যুদ্ধের সময় কনফেডারেসির অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকে।

অন্যদিকে, দক্ষিণের প্রত্যাশা ছিল যে অন্যান্য বড় রাষ্ট্র, যেমন ব্রিটেন এবং ফ্রান্স কনফেডারেসিকে সমর্থন করবে। কিন্তু সমর্থন না আসায় তারা এদেশগুলোতে সূতা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। অথচ এর বিশেষ প্রভাব ওই সকল দেশগুলোতে পড়েনি, তারা অন্য জায়গা থেকে তাদের যোগান নিশ্চিত করে। এছাড়াও, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে তখনো রাজতন্ত্র জারি ছিল। আমেরিকান গৃহযুদ্ধ তাদের কাছে ছিল আশীর্বাদস্বরূপ; কেননা তাতে তারা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করতে পারবে যে প্রজাতন্ত্র অকার্যকর। তাই তারা নিজেদের যুদ্ধ থেকে বিরত রেখেছিল।


.

ইউনিয়ন এবং কনফেডারেসির বেশিরভাগ যুদ্ধ সংঘটিত হয় পূর্ব-উপকূলীয় অঞ্চলে।

বুলরানের প্রথম যুদ্ধ:

জুলাই ২১, ১৮৬১ সালে ইউনিয়ন এবং কনফেডারেট আর্মির সংঘর্ষ বাধে ভার্জিনিয়ার ম্যানসাস জংশনে। এটিই ছিল দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত প্রথম বড়যুদ্ধ। ইউনিয়নের পক্ষে ছিল ৩৫০০০ সেনা এবং কনফেডারেসির পক্ষে ছিল ২০০০০ জন। বুলরান নামক এক ছোট নদীর কাছে যুদ্ধটি সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে কনফেডারেসিরা ইউনিয়নিস্টদের পিছু হটতে বাধ্য করে। ইউনিয়নিস্টরা ওয়াশিংটন ডিসিতে চলে যেতে বাধ্য হয়। যুদ্ধের ফলাফল কনফেডারেটদের অনুপ্রাণিত করে। অপরপক্ষে, উত্তরবাসীরা বুঝতে পারে কনফেডারেটদের পরাজিত করা সহজ হবে না।

image source: medium.com

বুলরানের দ্বিতীয় যুদ্ধ:

বুলরানের দ্বিতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৮৬২ সালে। ইউনিয়ন কমান্ডার জন পোপ জেনারেল ম্যাক্লেলান এবং তার সেনাদলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন যেন একত্রে সম্মিলিত হয়ে কনফেডারেসির উপর আক্রমণ করা যায়। কিন্তু কনফেডারেট জেনারেল এই অপেক্ষার সুযোগ নিয়ে প্রথমে আক্রমণ করে বসেন। ইউনিয়ন মারাত্মকভাবে পরাজিত হয় এবং কমান্ডার পোপ তার সেনাদলসহ ওয়াশিংটনে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

ব্যাটেল অব এন্টিইটাম:

এই যুদ্ধে কনফেডারেসি প্রথমবারের মতো উত্তরে আগ্রাসন চালায় রবার্ট লি-এর নেতৃত্বে। ম্যারিল্যান্ডের যুদ্ধে ৪৫০০০ কনফেডারেসি সেনা সদস্য অংশগ্রহণ করে। তবে কৌশলগতভাবে কনফেডারেসি পরাজিত হয়, কেননা তাদের উত্তরমুখী আগ্রাসন রুখে দেয় ইউনিয়ন। ১৮৬২ সালে প্রেসিডেন্ট লিংকন তার বিখ্যাত “Emancipation Proclamation” জারি করার কথা ছিল— এটি একটি ঘোষণাপত্র ছিল যেখানে বিদ্রোহী রাজ্যগুলোর দাসদের মুক্তি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ইউনিয়ন পূর্বের বেশ কিছু যুদ্ধে পরাজিত হয়। বিশেষ করে বুলরানের দ্বিতীয় যুদ্ধে ইউনিয়নের পরাজয়ে একথা নিশ্চিত হয়ে যায় যে, কনফেডারেসিকে হারানো সহজ হবে না। এমন সময় উক্ত পত্র জারি করা কঠিন হতে পারে— একথা ভেবে লিংকন একটি ইউনিয়নের বড় জয়ের অপেক্ষা করতে থাকেন। ঠিক এমন এক সময়ে সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয় ব্যাটেল অব এন্টিইটাম। সারাদিনব্যাপী চলা এই যুদ্ধ শেষে দেখা যায়, প্রায় ৩৬৫০ জন নিহত এবং ২৩ হাজার আহত হয়েছে। পরদিন লি-এর অধীনে থাকা কনফেডারেসির সেনারা পিছু হটে ভার্জিনিয়া চলে যায়। ইউনিয়নের নেতৃত্বে থাকা জেনারেল ম্যাক্লেলান আশ্চর্যজনকভাবে কিছু করেননি। তিনি মনে করেন, কনফেডারেসির সেনাদল পিছু হটাতে ইউনিয়নের বিজয় ঘটেছে। কিন্তু লিংকন তার পদক্ষেপে একেবারেই সন্তুষ্ট ছিলেন না।তিনি মনে করেন, এটি একটি সুযোগ ছিল কনফেডারেটদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করার, কিন্ত তাদের পিছু হটতে দেওয়ার কারণে সেই সুযোগ নষ্ট হয়েছে। লিংকন নভেম্বর ৫, ১৮৬২ সালে জেনারেল ম্যাক্লেলানকে কমান্ড থেকে অপসারণ করেন।

ফ্রেডরিখসবার্গ যুদ্ধ:

এটি অন্যতম বড় যুদ্ধ।এই যুদ্ধে প্রায় ১২০০০ ইউনিয়ন সেনাসদস্য মারা যায়। এই যুদ্ধটি ঘটে ডিসেম্বর ১৩, ১৮৬২ সালে, যেখানে উভয়পক্ষের প্রায় ২ লক্ষ সেনা অংশগ্রহণ করে। ইউনিয়নের  কমান্ডার ছিলেন আমব্রস বার্ন্সাইড এবং তার সাথে ছিল ১ লক্ষ বিশ হাজার সেনা এবং বিপরীতে কনফেডারেসির পক্ষে রবার্ট লি এর নেতৃত্বে ৮০ হাজার সেনা। যুদ্ধে ইউনিয়নের আক্রমণকে লি এর সেনারা বিপুল বিক্রমে ঠেকিয়ে দেয় প্রচুর হতাহতের বিনিময়ে (১৩০০০)। কনফেডারেসি ব্যাটল অব এন্টিইটামের পরাজয়ের পর এই যুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে নিজেদের হারানো মনোবল কিছুটা হলেও ফিরে পায়। ইউনিয়নের পরাজয়ের পিছনে দায়ী ছিল মূলত জেনারেলদের দূরদর্শীতার অভাব। এই যুদ্ধের ফলে লিংকন আবার কমান্ডার পরিবর্তন করেন, দায়িত্ব দেওয়া হয় জোসেফ হুকারকে।

এই পর্যায়ে এসে মনে হচ্ছিল, যেন কনফেডারেসি যুদ্ধ জয় করে ফেলবে এবং ব্যাপক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও পরাজয় ঘটবে ইউনিয়নের। তবে কি তাই ঘটে? না কি ইউনিয়ন জিতে যায় ? ফলাফলটা হয়ত সবারই জানা আছে কিন্তু ইতিহাসটা হয়ত জানা নেই, তবে জানার আগ্রহ আছে।

সেই ইতিহাসটি জেনে নিতে পড়ে নিন পরের পর্ব…


পরের পর্ব >>>

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu