সারাংশ:
দক্ষিণ কোরিয়ান লেখক হান কাং-এর The Vegetarian একটি গভীর এবং মর্মস্পর্শী উপন্যাস, যেখানে মানব প্রকৃতি, সহিংসতা, এবং স্বাধীনতার ধারণাগুলি আলোচিত হয়েছে। কাহিনীটির কেন্দ্রে রয়েছে ইয়ং হে নামের এক নারী, যিনি একদিন হঠাৎ করে নিরামিষভোজী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও প্রথমে এটি একটি সাধারণ পছন্দ বলে মনে হতে পারে, তার পরিবার এবং স্বামীর জন্য এই সিদ্ধান্তটি এক বিরাট ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়। ধীরে ধীরে এই নিরামিষভোজন তাকে আরও বিচ্ছিন্ন এবং অনন্য কিছু করতে প্রলুব্ধ করে, যা তার চারপাশের সম্পর্কগুলিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
রূপক এবং প্রতীকবাদের ব্যবহার:
উপন্যাসটি মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত, প্রতিটি অধ্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে কাহিনীটি তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমে স্বামীর দৃষ্টিকোণ, এরপর ইয়ং হে-এর ভগ্নিপতি এবং সর্বশেষে তার বোনের দৃষ্টিকোণ থেকে কাহিনীটি বিস্তৃত হয়। প্রতিটি অংশে ইয়ং হে-এর নিরামিষভোজনের প্রতিশ্রুতি তাকে এক নতুন ধরণের সত্তায় রূপান্তরিত করতে শুরু করে।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
ইয়ং হে-এর সিদ্ধান্ত তার পরিবারের মধ্যে ক্ষোভ এবং অস্থিরতার জন্ম দেয়। তার স্বামী এবং পরিবারের সদস্যরা এই সিদ্ধান্তটিকে মানসিক অসুস্থতার প্রতিফলন হিসেবে দেখে। তারা তাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে, কিন্তু ইয়ং হে-এর অনমনীয়তা তাদেরকে ক্রমশ আরও বিভ্রান্ত এবং ক্ষুব্ধ করে তোলে। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সামাজিক কাঠামোর কঠোরতার প্রতীক হিসেবে কাজ করে, যেখানে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং অভিপ্রায় প্রায়ই উপেক্ষিত হয়।
ভাষার কারুকার্য এবং অনুভূতির গভীরতা:
হান কাং-এর ভাষা অত্যন্ত বর্ণনামূলক এবং মর্মস্পর্শী। লেখিকা অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে মানুষের মধ্যে লুকায়িত অন্ধকার দিকগুলোকে উন্মোচিত করেছেন। ইয়ং হে-এর নিরামিষভোজনের মধ্য দিয়ে তার মধ্যে এক ধরনের শুদ্ধতার খোঁজের আভাস পাওয়া যায়, যা তাকে ধীরে ধীরে সামাজিক বন্ডেজ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সাহায্য করে।
The Vegetarian শুধু একটি ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের গল্প নয়, বরং এটি মানবিক অনুভূতির একটি অন্তরঙ্গ গবেষণা। ইয়ং হে-এর চরিত্রের রূপান্তর এবং তার শুদ্ধতার প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমাদের জীবনের সম্পর্ক এবং আকাঙ্ক্ষাগুলির বিষয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করে। হান কাং-এর এই উপন্যাসটি সহজপাঠ্য হলেও এর গভীরতা এবং বিষয়ের গভীরতা পাঠকদের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে।