ফরিদুর রেজা খান
জন্ম ৬ এপ্রিল, নেত্রকোনা জেলায়। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে অধ্যয়নরত। তিনি একজন তরুণ গল্পকার এবং চলচ্চিত্র সমালোচক।
ফরিদুর রেজা খান

কাঠবিড়ালী ও আমাদের সিনেমা: ভূত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

নিয়ামুল মুক্তা, একজন তরুণ এবং নবীন নির্মাতা। সিনেমার জগতে একদম আনকোরা বা অনভিজ্ঞও বলা চলে। তবে এগুলো হচ্ছে অনেকটা ‘মলাট দেখে মন্তব্য’-র মতো। বই পড়া মন্তব্য আলোচনার পুরোটা জুড়েই করবো। তবে শুরুতে এটুকু বলাই যায় যে বাংলাদেশের ঢালিউডেও এখন ভালো কাজ হচ্ছে। আগে বাংলা সিনেমা বা ভালো বাংলা সিনেমা বলতে শুধু কলকাতার বাংলা সিনেমাকে বোঝাতো। তবে সেই ‘বাবা আগে না শ্বশুড় আগে’ ধরনের সিনেমার যুগেও যে ভালো এক দুটো কাজ হয়নি– সেটা বলা ভুল হবে। বরং সেই ভালো কাজের সংখ্যা নেহায়েৎ এক দুটো নয়, অনেক। কিন্তু সব কাজ মানুষের সামনে নিয়ে আসতে পারেননি নির্মাতারা। এটা নির্মাতাদের অপারগতা নাকি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের সীমাবদ্ধতা তা নিয়ে মন্তব্য করবো না। তবে হ্যাঁ, ইদানীং ভালো কাজও হচ্ছে এবং সেগুলো মানুষের সামনেও আসছে। এটাই হয়তো সবচেয়ে ভালো খবর।


 

সিনেমা কাঠবিড়ালী: কাঠখড় কতটুকু?

যতটুকু জানি ২০১৭ সালের ২ মার্চ শুরু হয়েছিলো এই সিনেমার দৃশ্যধারণ। কিন্তু কোনো একটা কারণে সিনেমাটা মুক্তি পেয়েছে ২০২০ সাল ক্যালেন্ডারে গড়ানোর দিন থেকে চারেক এগিয়ে এসে। এই দীর্ঘ সময়ের মাঝে পাঁচ দফায় সম্পূর্ণ করা হয়েছে ছবির দৃশ্যধারণের কাজ। তবে হ্যাঁ, সিনেমাটা দেখে মনে হয়নি নির্মাতা আমাদের ৩ বছর পিছিয়ে থাকা কোনো গল্পে কাজ দেখিয়েছেন। মনে হয়েছে ছবির পরিচালক তাঁর সময়ের থেকে এগিয়ে গিয়েছেন অনেক খাত এবং ক্ষেত্রে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখে মনে হয়েছে ২০২০ সালে ঠিক এরকম একটা ছবির জন্য অপেক্ষা করছিলাম আমরা। ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর তারিখে এই ছবিটির প্রথম প্রিমিয়ার শো করা হয় পরিচালকের নিজের গ্রাম গজারমারাতে। একইদিন নির্মাতার নিজ জেলা পাবনার ‘লাবনী’ প্রেক্ষাগৃহে ছবিটির প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনী করা হয়।  জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির উদ্যোগে ছবিটির একটি বিশেষ প্রদর্শনী হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত ‘আমার ভাষায় চলচ্চিত্র-১৪২৬’-এও প্রদর্শিত হয় ছবিটি। ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি এবং ২ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জুরিখের বাংলা স্কুলের হলরুমে ছবিটির দুটি প্রদর্শনী করা হয়।

স্বল্প পরিসরে প্রদর্শনের কয়েক দিনের মধ্যে দারুণ আলোচিত এবং প্রশংসিত হতে থাকে নির্মাতা নিয়ামুল মুক্তা এবং তাঁর চিলেকোঠা ফিল্মস এর প্রথম সন্তান ‘কাঠবিড়ালী’। এর ধারাবাহিকতায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার পরিবেশনায় দেশজুড়ে ১৮টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়েছে এই সিনেমাটি। এখানে একটা কথা জুড়ে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না। দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা থেকে পুরোপুরিভাবে ঝাঁপা বাংলা সিনেমাগুলো এর থেকেও অনেক বেশি হলে নামানো হয়। মানুষও দেখে, এটা ঠিক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে এসব ছবি মানুষ মানের বিচার করে দেখে। আর কোনো বিকল্প নেই বলেই দেখে। থাকলে অবশ্য এসব চতুর্থ শ্রেণির সিনেমা দেখে সময় নষ্ট করতো না। বড় পরিসরে পরিবেশিত হওয়ার পরপরই কোভিড-১৯ অচলাবস্থা শুরু হওয়ার কারণে সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড ডিজিটাল প্রিমিয়ার করা হয়েছে হইচই-এ। এটাকে একটা সময়োপযোগী এবং যৌক্তিক পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। আমাদের সিনেমা হল এবং সিনেমা শিল্পের বর্তমান অস্থিতিশীল অবস্থায় অনেক পরিচালক এসব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এটা ইতিবাচক না  নেতিবাচক সেটা নিয়ে অনেক মতবিরোধ থাকলেও আমি বলবো বিষয়টি মন্দের ভালো। বাংলাদেশের সিনে জগতের বর্তমান অচলাবস্থার নিরসন সবার কাম্য হলেও এটা নিঃসন্দেহে একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া। এর শুরুটা হয়তো শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু শেষ কবে জানি না আমরা কেউ। কাজেই এই সময়টাতে যদি দর্শককে নতুন কোনোভাবে আরও বেশি সুস্থ বিনোদন দেয়া যায় তাতে ক্ষতি কী? নাহয় সেটা হলো না বড় পর্দায়, হলোই বা সেটা পকেটবন্দী মুঠোফোনের ছোট পর্দায়। কিন্তু তাতে ক্ষতির কিছু থাকার কথা নয়। শিল্পের মূল কথা যদি তার রস আস্বাদন হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা ঘটার কোনো কথা নয়।

সিনেমা কাঠবিড়ালী: পর্দার সামনের ও পেছনের কলাকুশলী

‘কাঠবিড়ালী’ নির্মাতা ও পরিচালক নিয়ামুল মুক্তার প্রথম সৃষ্টি। মূল কাহিনী পরিচালক নিয়ামুল মুক্তার নিজের। চিত্রনাট্য লিখেছেন মুহাম্মদ তাসনিমুল হাসান তাজ। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্চিতা স্পর্শিয়া এবং আসাদুজ্জামান আবীর। এছাড়া আরও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাঈদ জামান শাওন, শাহরিয়ার ফেরদৌস, শিল্পী সরকার, হিন্দোল রায়, এ কে আজাদ সেতু, তানজিলা রহমান প্রমুখ। দৃশ্যধারণ হয়েছে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার গজারমারা গ্রামে যেখানে কিনা সিনেমার প্রথম প্রিমিয়ারও করা হয়েছে। এই ছবির অন্যতম মূল বৈচিত্র্য এর মূল চরিত্রদের পরিচালনায় সহযোগিতা। ছবির দুই মূল চরিত্র হাসু ও কাজলের ভূমিকায় অভিনয় করা আসাদুজ্জামান আবীর এবং অর্চিতা স্পর্শিয়া সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন এই ছবির পরিচালনা ইউনিটে। ছবির কলাকুশলীরা যৌথভাবে প্রযোজনাতে সহযোগিতা করেছেন পরিচালককেও। এই বিষয়টাকে আমার একটা স্বাধীন সিনেমার গর্ব মনে হয়েছে।

সিনেমা কাঠবিড়ালী: বাংলা ছবির সঙ্গীতায়োজনের প্রচলিত ঘরানায় নতুন চমক?

সিনেমা কাঠবিড়ালী নিয়ে কথা বলতে গেলে ছবিতে ব্যবহৃত তিনটি গান এবং গানগুলোর আকর্ষণীয় সুর, কথা, সাবলীল দৃশ্যধারণ, বাস্তবধর্মী কোরিওগ্রাফি নিয়ে কথা বলতে হয়। সিনেমার ব্যবহৃত প্রতিটি গান সংশ্লিষ্ট দৃশ্যের সাথে পূর্ণতার সন্তুষ্টি এনে দিচ্ছিলো। প্রতিটি গানের সঙ্গীতায়োজন, সুর, ছবির দৃশ্য এবং চরিত্রের সমান্তরালে এগোচ্ছিলো। শুধু শুধু ফুটেজ খাওয়ার জন্য হযবরল কথায় আর বিদেশি সিনেমার গানের থেকে চুরি করা (পড়ুন অনুপ্রাণিত) সুরে বানানো গান ছবিতে ঢোকানো হয়েছে বলে মনে হয়নি। এই ছবির গানগুলো নিঃসন্দেহে দৃশ্যের এবং গল্পের অনিন্দ্যতায় এক নতুন ধরনের আনকোরা একটা মাত্রা যোগ করেছে।

ছবিতে ব্যবহৃত তিনটি গানের কথা নয়ানচাঁদ ঘোষ, সেলিম আল দীন এবং আল-আমিন হাসান নির্ঝরের। ইউসুফ হাসান অর্কের সুরে গানগুলোর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী। কণ্ঠ দিয়েছেন শফি মন্ডল, ইমন চৌধুরী, দিলশাদ নাহার কণা ও ফকির সাহেব। সব কিছু মিলিয়ে একটি রুচিশীল দলগত পরিবেশনার ছাপ পাওয়া গেছে ছবির সঙ্গীতায়োজনে।

সিনেমা কাঠবিড়ালী: নাড়ি ছেঁড়া ভালোবাসার গল্প?

‘কাঠবিড়ালী’ ছবিতে একটা খুব পরিচিত ভালোবাসার সম্পর্ককে দেখানো হয়েছে। তবে গল্পের বাচনভঙ্গিতে ভিন্নতা ছিলো, ছিলো সরল একটা গতিময়তা। গল্পের দৃশ্যায়নে ছাপ ছিলো নির্মাতা এবং পরিচাককের নিজস্ব গল্প বলার ভঙ্গির। পুরো গল্পের দৃশ্যায়নেই একটা অনাড়ম্বর ঘরানার ধাঁচ ছিলো যেটা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার ছিলো। এই ছবিটিতে উঠে আসা গল্পের নায়ক নায়িকারা একে অন্যকে ভালোবাসতো। ভালোবাসার পর বিয়ে। কিন্তু সম্পর্কটা মন থেকে শরীরে ছড়ানোর পর একটা সময় কোনো কিছুর একটা ঘাটতি বোধহয় গল্পের নায়িকাকে প্রভাবিত করে অন্য সম্পর্কে জড়াতে। সেটা নিতান্ত দৈহিক, বলা বাহুল্য। তবে সম্পর্কে শরীর বা মন যাই বিদ্রোহ করুক না কেনো, বিদ্রোহের আঁচটা সর্বাঙ্গে ছড়ায়। কখনো বা প্রতিহিংসায় রুপ নেয়। এই ছবির মুক্তির খুব বেশিদিন হয়নি এখনও। কাজেই গল্পের আলোচনায় এতটা গভীরেও ঢুকবো না। শুধু এটুকু বলি, এরকম একটা গল্পের সাথে একদম প্রাকৃতিক পরিবেশে দৃশ্যায়নটা ছবির গ্রহণযোগ্যতায় নতুন একটা মাত্রা যোগ করেছিলো যেটা হয়তো এ ছবির অনন্য বৈশিষ্ট্য। ছবির শুরু থেকে শেষ, বাংলার জনপদের একটা বিশুদ্ধ ছোঁয়া পাওয়া গেছে। ভালোবাসা-অপরাধ-রোমাঞ্চধর্মী এই ছবিটিকে সেই চিরাচরিত ‘বিয়োগান্তক কিন্তু সমান্তরাল ভালোবাসা’র ধারার একটি বলা যেতে পারে।

সিনেমা কাঠবিড়ালী: আমাদের প্রত্যাশা নাকি স্বপ্ন?

আলোচনার এই অংশে এসে বলবো প্রশ্নের উত্তর দুটোই। ‘কাঠবিড়ালী’ সিনেমাটা আমাদের প্রত্যাশা এবং স্বপ্ন দুই-ই। হ্যাঁ, এর আগেও এরকম সিনেমা হয়েছে। তবে সত্যি কী, প্রত্যাশা বা স্বপ্নের তো আর কোনো সীমানা থাকে না। থাকলেও সেটা আকাশসম উচ্চতায় গিয়ে ঠেকে। প্রত্যাশা বা স্বপ্নর জায়গা থেকে সরে গিয়ে বলতে গেলে এরকম সিনেমা একসময়কার ঢাকাই সিনেমার হারিয়ে যাওয়া গর্ব। ওয়ার্ল্ড ডিজিটাল প্রিমিয়ার এর কারণে ছবিটা এই মূহুর্তে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে দেখা সম্ভব। সিনেমা ‘কাঠবিড়ালী’ সম্পর্কে প্রথম জেনেছিলাম ক্যাম্পাসে। জাবির দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো ছবির পোস্টারের কমনীয়তা প্রথম থেকে কেনো যেনো খুব বেশি আকর্ষণ করছিলো। যাই হোক, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হইচই-এ আসার পর দেখে নিয়েছিলাম ছবিটা। দিনকয়েক আগে ওপার বাংলার দুই লেখক-সমালোচক বন্ধু বার্তায় ছবিটা নিয়ে কথা তুললো। একটা সময় ছিলো যখন কিনা আমরা টলিউডের ছবি দেখে সময় পার করতাম, করতে হতো। কিন্তু এখন কিনা সে পাড়ার মানুষই প্রশংসা করছে আমাদের ঢাকাই চলচ্চিত্র দেখে!

হ্যাঁ, কাঠবিড়ালী বা কাঠবিড়ালীর মতো গল্পের ছবিগুলো আমাদের স্বপ্ন। মৌলিক ছবির নির্মাতারা এদেশে পৃষ্ঠপোষকতা পান না বললেই চলে। সিনেমায় চটকদার নাচ আর অহেতুক রগরগে দু চারটে দৃশ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা মুখগুলোকে দিয়ে অভিনয় না করালে সেই নির্মাতার ছবিতে লগ্নি করতে যাবে কে? তবে ভাগ্যক্রমে সত্যি এটাই যে এই দেশের সিনেমা জগতে জহির রায়হানদের মতো গোঁ ধরা মেধাবী পরিচালকেরা নিজেদের চোখে আদিম শিলালিপিতে প্রতিফলিত হওয়া আলোর মতো স্বপ্ন নিয়ে আগেও বারবার ছুটে এসেছেন, আপন আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন দেশের সিনেজগতকে। এভাবে ভবিষতেও বারবার ছুটে আসবেন, এটাই প্রত্যাশা এবং কামনা।


সেরা চরিত্র: হাসু (আসাদুজ্জামান আবীর)।

সেরা পার্শ্বচরিত্র: আনিস (শাওন)।

প্রিয় গান: সবগুলোই।

পর্দার পেছনের সেরা চরিত্র: খুব সম্ভবত এই ছবির গানগুলোর কোরিওগ্রাফার।


পুনশ্চ: ১

সফলদের নিজেদের শুরুটা কী একা করতে হয়? সেন্সর সনদে ছবির ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন পরিচালক নিজে। ছবির প্রযোজকও তিনি, অন্তত ছবির সেন্সর সনদ এটা বলে। হতে পারে এটা তাড়াহুড়োয় হয়ে গেছে। আবার এটাও হতে পারে এটা সেই প্রকৃতির অমোঘ নিয়মের একটা দৃষ্টান্ত। সফলদের শুরুটা একা একাই হতে হবে। সফল হয়ে যাওয়ার পর অনেক মানুষ জুটবে, তার আগে নয়।

পুনশ্চ: ২

পত্রিকার পাতা খুললে বিনোদন পাতায় দেশের সিনেজগতের অনেক গল্প পাওয়া যায়। অনেক সিনেমার বিজ্ঞাপনী প্রচারটা সিনেমার লোকেশন নিয়ে থাকে। ইউরোপের ঝা তকতকে দেশের কোন শহরে দৃশ্যধারণ হচ্ছে তার গুরুত্বটা যেনো গল্পের চেয়েও বড়, চটকদার কোমড় দোলানো আইটেম সং যেনো তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। কেনো এরকমটাই হতে হবে? হ্যাঁ, গল্পের ধারাবাহিকতার প্রয়োজনে একটা সিনেমায় অনেক কিছু দেখানো হতে পারে। কিন্তু দেশের কোনো শহরে ঘুরে বেড়ানো গল্পের নায়ককে কেনো রোমান্টিকতা করতে অন্য দেশের শহরে কোমড় দুলিয়ে নাচতে হবে? কেনো নায়ক নায়িকার ঠোঁট মেলানো ছবির গানের প্রতি লাইনে দুই বা তিনটি ইংরেজি শব্দ থাকতে হবে? পর্দায় বাঙালি কোনো যুবকের চরিত্রে অভিনয় করতে থাকা নায়ককে কেনো ইউরোপের কোনো নদীর পাড়ে গিয়ে নায়িকার সাথে চোখে চোখ রেখে নাচতে হবে? কে জানে! এসব প্রশ্নের উত্তর আমি জানি না। তবে এটাকে আধুনিকতা বলে না নিশ্চয়। শিল্পে নিজেদের অস্তিত্বটাকে অগ্রাহ্য করে ধার করা অনুষঙ্গের ঢালাও ব্যবহার করে কোনোদিনই শিল্পের দাবি আদায় করা যায় না, তাতে অর্থও প্রকাশ পায় না। স্বকীয়তা শিল্পের মূল কথা, অনুকরণের আধুনিকতা বা আধুনিকতার অনুকরণ নয়।

পুনশ্চ: ৩

এই ধরনের গল্পের আগেও বিভিন্ন মোড়কে বাজারজাতকরণ হয়েছে। সমাজ এবং দম্পতি, সবসময় সমস্যা নিয়ে এবং সমস্যাতে থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। তবে এটা বলাই যায় এই গল্পের নিয়ামুল মুক্তা সংস্করণটা সত্যিই সুন্দর ছিলো। এরকম গল্প আরও আসুক! এরকম কাজ আরও হোক!


 

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu