জাকির হোসেন
জন্ম ২৭ জুন ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর ঝর্ণাপাড়ায়। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। প্রকাশিত গ্রন্থ: পোলাও পাতা ও অন্যান্য (গল্পগ্রন্থ)
জাকির হোসেন

প্যাঁচ

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

ড্রেসিং টেবিলের আয়নার উপরে কোণায় এক টুকরো সমান ভাঙা। মারুফা খয়েরি রঙের টাঙাইল শাড়ি পড়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে টুলে বসে আয়নায় নিজেকে অবলোকন করছে। কাল কীভাবে ছেলের সামনে গিয়ে বসবে ? কীভাবে কথা বলবে ? কত লম্বা ঘোমটা টানবে? ছেলের বায়োডাটা পড়ে মারুফা অবগত হয়েছে তার ভাবী বরের প্রিয় রঙ খয়েরি। ইদানীং বায়োডাটাগুলো এমন স্মার্ট করে তৈরী করা হয়। যেখানে ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত আদ্যোপান্ত সব উল্লেখ থাকে।

আগামীকাল দুপুরে মারুফাকে বর পক্ষ দেখতে আসবে। ছেলে ওমান প্রবাসী। দুই মাসের ছুটিতে দেশে ফিরেছে। এই দুই মাসের মধ্যেই বিয়ে করে স্বল্প সময়ের সংসার করতে হবে। তাই বউ পেতে বরপক্ষের বেগ আছে। ঘটকের পূর্ব নির্দেশ মতো মারুফাকে তার বাবা ও বড় ভাই ফুফুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বরপক্ষকে দেখিয়েছিলো। মেয়ে ও পরিবার দুটোই বরপক্ষের পছন্দ হয়েছে। মেয়ে সদ্য ডিগ্রী পাস। যদিও গতকাল ফুফুর বাড়িতে বর ও বরের মা উপস্থিত ছিলো না।

মা মারুফাকে মন্দ বকে গিয়েছিলো— ছেলে তোরে দেখতে আয়বো, তুই এই কালার শাড়ি পড়বি? তুই পড়বি কই লাল শাড়ি, পড়তে চাস বুড়িদের কাপড় ! মারুফা ও তার মায়ের নিজের কোনো খয়েরি টাঙ্গাইল শাড়ি নেই। বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে দুইটা খয়েরি টাঙ্গাইল শাড়ি তার সইদের কাছ থেকে জোগাড় করেছে। সত্য কথা বলে আরেকটা জোগাড় করেছে পাশের বাড়ির সমবয়সী এক চাচী থেকে।

সারারাত মারুফার মা বাবার এক ফোঁটা ঘুম হয়নি। চোখ খোলা রেখে অন্ধকার দেখলেন।কখনো চোখ বন্ধ রেখে অন্ধকার দেখলেন। চোখ খোলা রেখে অন্ধকার দেখা আর চোখ বন্ধ করে অন্ধকার দেখার মধ্যে একটা দারুণ মিল আছে।এক দৃশ্য দুই উপায়ে একই রকমভাবে চোখে ভেসে উঠে। বাবার চোখে ভেসে উঠলো মেয়ে ডিভোর্সি হওয়ার অপবাদে ছয়টি বিয়ের প্রস্তাব ভেঙ্গে যাওয়ার দৃৃশ্য। আর মায়ের চোখে ভেসে উঠলো আপন বোনের ছেলের কাছে নিজের একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেয়ার দৃশ্য। যেখানে বিয়ের পরের দিনই খবর রটে মারুফা বোন ছেলের দ্বিতীয় বউ !

আজ থেকে আট বছর আগে মারুফা যখন ক্নাস নাইনে পড়ে তখন তার অনীহা সত্ত্বেও মা তাকে বোনের ছেলের সাথে বিয়ে দেয়। বাড়ন্ত মারুফাকে দেখে ছেলের মা তার ছোট বোনের কাছে মারুফাকে খুব করে চাইলেন এবং এই শর্ত দিলেন যদি মারুফাকে তার ছেলের কাছে বিয়ে না দেয় তবে কোনো দিন তাকে যেন বোন বলে পরিচয় না করে। বোন সোহাগী মারুফার মা বোনের শর্তে ঝড়ে ভাঙা গাছের মত দূর্বল হয়ে পড়লেন। দুর্বল অবস্থায় বোন ছেলেকে নিয়ে বিস্তর ভাবলেন। ছেলে লম্বা-চওড়া, সিগারেট খায় না, কর্মিক, বড় কোম্পানিতে চাকরি করে, মুরব্বিদের মান্য করে।শেষবার যখন দেখা হয়েছিলো তখন লম্বা একটা সালাম দিয়েছিলো।আহা, পরাণ জুড়িয়ে যায় ! এমন একটা ছেলে পাওয়া ভাগ্য বটে। সুতরাং বোনকে বিয়াইন বানানো যায়। ঠিক এই ছেলে যে সবার অজান্তে লাভ ম্যারেজ করে বসে থাকে। আর মা বাবাকে খুশী করার জন্য গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করে সেই সম্পর্কে কেউ কোনো দিন ভাবেনি।শুধু ছেলের মা জানতো কিন্তু বোনকে বলেনি। কারন ছেলের মায়ের লক্ষ্য ছিল বোনের মেয়েকে বউ করে এনে ছেলেকে ঘরে ফেরাবেন এবং ছেলের করা বউকে ছাড়তে বাধ্য করবেন। অনেকটা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মত কৌশল কিন্তু কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে গেলে হাতের কাঁটাটি ভেঙ্গে যেতে পারে। যেমন ভেঙ্গে গেলো কিশোরী মারুফার ঘর। বড় বউ যে কোনো মাধ্যমে তার স্বামী ইব্রাহীমের দ্বিতীয় বিয়ের কথা জেনে গেলেন। স্বামী অধিকার নিয়ে হাজির হলেন শ্বশুড়ালয়ে। প্রথমবারে এসেই বিজয়ী পতাকা উড়ালেন। যুক্তিতে, জবানে, ছেলের পক্ষপাতিত্বে মানুষের কাছে হেরে গেলেন মারুফার খালা। তিনদিন পর মারুফাকে তাদের বাড়িতে নাইওর করার কথা কিন্তু তিন দিন সময় নিতে হলো না। একদিন আগেই মারুফাকে তার মা-বাবা এসে নিয়ে গেলেন। নেয়ার সময় মারুফার মা তার বোনকে বলে গেলেন— বৈন হইয়া আমার ফুলের মতো মাইয়াটারে কলঙ্কিনী করলি? আল্লাহ, তোরে সুখে রাখুক। মারুফার মায়ের দুয়া আল্লাহ কবুল করেছেন। খালা তার ছেলে ও ছেলে বউ নিয়ে সুখেই আছে। একটা নাতি আছে। প্রথম দুই বছর সহোদরার মধ্যে মনমালিন্য থাকলেও ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে গ্যাছে।

সকালে ছেলের মামা আগে একবার মারুফার বাবার সাথে কথা বলতে মারুফাদের বাড়িতে আসলেন। কী এক জরুরি কথার জন্য মারুফার বাবা ভোর সকালে ছেলের মামাকে ফোনে আসতে বলে তলব করেছিলেন। অতি জরুরি না হলে কিন্তু ঘটককে নিজ কক্ষের খাটে পাশাপাশি বসিয়ে খুব সন্তর্পণে পরস্পর আলাপচারিতা করতেন না। এই বিয়ের ঘটক মূলত ছেলের মামা।

— ভাই, তুমার লগে আমার জানা শুনা বহুত পুরানা। তুমি যদি বিয়াটা পড়াইয়া দ্যাও তইলে মনে করবা যদ্দিন বাঁচি তদ্দিন আমি তুমার গুলাম হয়া গ্যালাম।

— ভাই,সাদা কাফড়ে দাগ লাগলেও পড়তে হয়।তুমার মাইয়া মানে আমার মাইয়া। তুমার মাইয়া এক রাইতের জন্যে কলঙ্কিনী হইলো। মাইয়ার তো কুনো দুষ নাই। নসিব ছিলো মন্দ তাই এমন হইলো।

— সবই তো তুমি জানো।

— আইচ্ছা, তুমি কুনো চিন্তা করার কাম নাই।আমার বৈন আইয়া দেখুক। পছন অইলে বাড়িত গিয়া আমি সব কমুনে। সেই ভার আমার কিন্তু তার আগে কেউ যাতে কিছু না জানে। আমার বৈনের চাই শিক্ষিতা পুতের বউ। সুতরাং শিক্ষা দিয়া কলঙ্ক মুছা সম্ভব! আইচ্ছা, আমি এহোন যায়। ঘন্টা দেড়েকের মইধ্যে সবাইরে লইয়া আয়তাছি।

— হ,এদিকে আমি সব গুছাইয়া লই।

আলাপ চলাকালীন মারুফার মায়ের রেখে যাওয়া বাটা থেকে এক খিলি পান মুখে পুরে ঘটক বিদেয় হলেন।

গোলাপজল মেশানো দুধের পানির উপর গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো। মারুফা পানিতে পা ডুবিয়ে চেয়ারে বসে আছে। হাঁটু অবধি বালতির পানিতে ডুবন্ত। ফেসবুকের একটি বিউটি কেয়ার পেইজ থেকে পেয়েছে পানির সাথে দুধ, গোলাপজল আর গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে আধা ঘন্টা পা ডুবিয়ে রাখলে নখের ও পায়ের চামড়ার ময়লা উঠে পরিষ্কার হয়ে যায়। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগ। কেবল শহর নয়। গ্রাম-মফস্বলের জীবনকে ফ্যাশনেবল করে তুলছে! মা মারুফাকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকে বললেন— ধর মা তাবিজটা হাতে বান্ধ।

মারুফা বললো— আবারো তাবিজ?

মা— এবার আনছি দরগাপাড়ার খাদেম থিকা।

মারুফা— মা, জম্ম-বিয়া-মৃত্যু হইলো আল্লার হুকুম। এসব তাবিজ কবচ দিয়া কিছু কি অয়?

মা— আরে মাইয়া, আমি কি বিয়া অউনের লাইগা তাবিজ আনছি না কি ? তোরে তাবিজ বান্ধি বিয়া না ভাঙোনের লাইগা।

মারুফা— মা, বিয়া অইলে এমনেই অইবো। মানুষের সাধ্য কি বিয়া ভাঙার?

মা— এতো কতা কৈস না মাইয়া।

মারুফা— তুমি যে তাবিজ বাইন্ধা দিতাছো। বর পক্ষের মা, খালা, চাচী, জেটি কেউ একজন যখন আমার শৈল দেখবো তখন আমারে জিগাইবো, মা, তুমি কি রাইতে বিছনাত পেশাব করো ? তোমার হাতে তাবিজ ক্যান?

মা— তুই কইবি, রাইতে একলা শুইলে তোরে বোবা ধরে !

মারুফা— তাইলে কইবো নিশ্চিত তোমার লগে জ্বিনের আছড় আছে।

মা বিরক্ত হয়ে বললেন— কথা এতো প্যাঁচাস ক্যান?

মারুফা— কী করমু আমারেই তো প্যাঁচে ফালাইয়া দ্যায়। এখন পর্যন্ত যত্তগুলা ঘর আমারে দেখতে আইছে সব গুলাই আমার শৈল দ্যাখছে। বিয়া করলে জামাই মনে হয় না এতো বার এতো মনোযোগ দিয়া আমার শৈল দেখতো ! হাতের আঙুল ঠিক আছে কি না,মাথার চুল কত লম্বা, মাজা কেমন, শৈল্লে দাগ-কাঁটা ছেড়া আছে কি না ইত্যাদি। কৈ আমরা তো ছেলের এতো কিছু বিছরাই না?

মা মারুফার হাতে তাবিজ বেঁধে চলে গেলেন।

যাওয়ার সময় বলে গেলেন— গুসোল করার সময় আমারে ডাকিস, দরগার পানি দিমু, মিশায়া গুসোল করবি।

মারুফার মা-বাবা চেয়েছিলো বরপক্ষ আসা অবধি মারুফাকে দেখতে আসার বিষয়টি বাড়ির মানুষের কাছে গোপন রাখবেন কিন্তু সেটি কি সম্ভব ? বাতাসে যে মোরগ-পোলাওয়ের ঘ্রাণ মাখামাখি হয়ে গন্ধ ছড়ায়। বাড়ির আঙিনায় কিংবা পুকুর ঘাটে যাদের সাথে মারুফার বাবার দেখা হয়েছে। জিজ্ঞাসু তাদের বলতে হয়েছে— হ রে ভাই, কাঁঠাল বাজার থিকা আজ একটা সম্বন্ধ মারুফারে দেখতে আইবো। দুয়া কইরো আর বাড়িত থাকলে বৈকালে আইয়ো আমার ঘরে।

প্রবাসী ছেলেরা স্বদেশী মেয়েদের মাঝে অন্যরকম আকর্ষণ খুঁজে পায়। দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার কারনে এই আকর্ষণের সৃষ্টি। তবে বলা ভালো এটি বাংলাদেশি মেয়েদের গুণ কারন তারা দেশি ছেলেদের নজর কেড়ে নিয়ে চামড়া ফর্সা ও দীর্ঘদেহী বিদেশী মেয়েদের পরাজিত করে!

মারুফা যখন সবার সামনে এসে ছেলের মা ও চাচীর মধ্যখানে বসলো ছেলে তখন বারবার মারুফার পায়ের দিকে তাকাচ্ছিলো। মারুফার চোখ যদিও নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল কিন্তু ঠিক ঠিক ছেলের চোখকে ধরে ফেলেছে এবং মারুফা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে ছেলে স্বভাবে খুতখুতে নইলে খুব মনোযোগ দিয়ে বারম্বার পায়ের দিকে তাকাতো না।

কোনো এক বিষয়ে গরমাগরম আলাপ চলাকালে বরের চাচী অতি সন্তর্পণে মারুফার পিছনে হাত দিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরে বললো— শৈল আছে ভালোই ! কথাটি এমন আস্তে করে বললো যে মাথা নিচু করে থাকা মারুফা এবং চাচীর দিকে তাকিয়ে থাকা বরের মা ছাড়া কেউ শুনতে পেলো না।

মেয়ে পছন্দ হয়েছে বলে অর্থ ও জিনিসপত্র লেনদেনের ব্যাপারে ছেলের মায়ের চাওয়া অনুযায়ী সব শর্তই মেনে নিলেন মারুফার বাবা। ছেলের চাচী বারংবার এই কথা বলে মারুফার বাবাকে লোভী বানাতে চেষ্টা করলেন— ভাই গো হুনেন, ছেলে তিন ভরি বিদেশি স্বর্ণ দিবো। আরো তো আছে পাঁচ লাখ টেকার কাবিন। মারুফার বাবা লোভ নিবারণ করে বললেন— মাইয়া যখন নিবেন দেওন তো লাগবোই। তা দেশি হউক আর বিদেশি হউক।

আপাতত এই সিদ্ধান্ত হলো সামনের শুক্রবারে ছেলের পক্ষ এসে মেয়েকে আংটি পড়িয়ে দিলে সমাজের মসজিদে আকদ করানো হবে।

ইতোমধ্যে মারুফার ছোট মামী এসে হাজির হলেন। মামী জানতো না আজ মারুফাদের বাড়িতে এতো আয়োজন। জানবে কি করে? মারুফারা যে বিষয়টি গোপন রেখেছেন! তাই মামী কন্যা দেখার ঘরোয়া অনুষ্ঠান দেখে যেমন অবাক হলেন ঠিক তেমনি মামীকে দেখে মারুফার মা তেমনই অবাক হলেন। শুধুই কি অবাক? মায়ের মনে রীতিমতো ভয় জাবর কাটতে শুরু করলো। আর সেই জন্যেই রান্নাঘরে মারুফার মা মামীকে ভালো মন্দ কুশল বিনিময়ের পর জিজ্ঞাসু মারুফার মাকে মামী বললেন— উত্তর পাড়া গেছিলাম কিস্তির টেকা দিতে। এদিক যাওয়ার সময় ভাবলাম আফনাগোরে দেইখা যাই। তাই আইলাম।

মারুফার মা— ভালোই হইলো, আইছো।

মারুফার মামী মেহমানদের খাতির করতে লাগলেন। মারুফার মাকে রান্না ঘর থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়ার পালায় সাহায্য করলেন। কোনে এক ফাঁকে ছেলের মা মারুফার মামীকে জিজ্ঞেস করলেন— আফনে কি হোন গো মাইয়ার? মামী বলল— মামী, আমি মারুফার ছুটো মামী।
মারুফার বাবা ও ভাই ছেলের পক্ষের পুরুষদের সাথে কথা বার্তায় মজে থাকলেন। মারুফার মা রান্না ঘর থেকে বেরুতে পারলেন না। মামী সব সামলালেন।

মামীর দৌড়াদৌড়ির এক ফাঁকে ছেলের চাচী মামীকে ধরে বললেন— এত্তো দড়ুইন না, একটু জিরান, নিন এক খিলি পান খান। পান হাতে নিয়ে মামী হাসি দিয়ে বললেন— আফনারার লাইগা যদি না দৌড়াই, তাইলে তো বাড়িত গিয়া বদনামি করবেন। ছেলের জেটী বললেন— আমরা এমুন না গো বৈন, যা খাইছি আল্লা শোকর, বদনামি করতাম কেয়া? ছেলের মা খুব সন্তর্পণে মামীকে টেনে নিজের পাশে বসিয়ে বললেন— একটা কতা জিগায়, হাচা কৈরা কৈবাইন? মামী বললেন— কথাটা কি হুনি? ছেলের মা— মাইয়া কেমুন ? মামী বললেন— ক্যান, আফনারা না দেখছেন? ছেলের মা— আমরা দেখছি আমরার মত, আফনে কন তো হুনি। মামী— মাইয়ার স্বভাব চরিত্র লইয়া দুই কথা কওনের সুযোগ নাই, তবে আমরার গেরাম দ্যাশে একটা কথা আছে, মাইয়া লোকের একবারের পর দুইবার বিয়া অইলে না কি হাঙ্গায়ল্লা কয়! আবিয়াইত্তা পোলার লাইগা হাঙ্গায়ল্লা মাইয়া খাটে? ছেলের মা, চাচী, জেটি নিরুত্তর মামীর দিকে তাকিয়ে থাকলো। যেনো তারা জঙলার গাছে বসে থাকা প্যাঁচা দেখছে।

মারুফা ব্লাউজের সাথে শাড়ির আঁচল ধরে রাখার জন্য সেফটিফিন লাগিয়েছিলো। অসতর্কতাবশত সেফটিফিন খুলতে গিয়ে আঙ্গুলে ঢুকে গ্যাছে। যেই ঢোকা সেই ক্ষত। ক্ষতস্থান থেকে কেবল রক্ত বেরুচ্ছে। খয়েরি শাড়িতে রক্ত মুছে ফেলছে বলে রক্তের দাগ বোঝা যাচ্ছে না।

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu