আমি নীলসাগর; সহস্র বছরের লাখ-কোটি মানুষের হাসি-কান্না, আনন্দ-অশ্রুর মর্মগাথা কলকল ধ্বনি সঞ্চারিত জল বুকে নিয়ে চির পাষাণের মতো, চির মূঢ়ের মতো, চির বধিরের মতো পড়ে রয়েছি। আমার বুকের উপরের প্রজ্জ্বলিত জলকণাগুলো মানুষের ভাঙা-গড়ার সাক্ষী; উজান-ভাটার প্রতিমা; নতুন স্বপ্নের দৈব্যবাণী। সে কুসুমাস্তীর্ণ কণাগুলো ঢেউয়ের পর ঢেউ হয়ে আমার বুকে ভেঙে পড়ে। এ ভাঙা গড়ায় তারা বেদনায় যেমন নীল হয়, তেমনি আবার আনন্দে সবুজ হয়ে ওঠে।
রাতের জোৎস্নাপ্লাবিত অনন্ত কৃষ্ণগহ্বর হতে খসে আসা তারকাগুলো প্রায়ই আমার কাছে এসে মুখ লুকায়। যেন বা এমন মাতৃস্নেহ্ন সে অনন্তকালের জীবনে একটিবারের জন্যও কারও নিকট পায়নি। এমন একটি স্নেহশীতল মুহূর্তের জন্য যেন তার প্রতীক্ষা বহু যুগের; বহু কালের; বহু সাধনায় তা আজ সফল হয়েছে। যখন তার উষ্ণ চির অধর আমার বুকে রাখে, যখন চিরশয্যায় সাহিত হয়, তখন যেন তার বেদনা আমার বেদনায় বিলীন হয়ে যায়। নিঃশেষে ঘুমিয়ে যাওয়ার আগেও ঝিমন্ত আভাসে আমার সাথে অনেক কথা হয় তার। তবু মনে হয় অনন্তকালের যাত্রাপথে সঞ্চারিত সকল কথা যদি বলতে পারত! তা পারে না, তাই, কিছু কথা থেকে যায়। যে কথাগুলো ঝর্ণার অনন্ত যাত্রার মতো, সীমাহীন আকাশের মতো, বোবা পাষাণের মতো। অসমাপ্ত কথাগুলো সে শেষ করতে না করতে সসীমের সীমানা পেরিয়ে অসীমের সীমানায় পদচারণ করে। সেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কথাগুলো হয়ত আমি আর কোনোদিনই জানতেও পারব না, তবুও ইচ্ছা জাগে, ইস্ যদি আর একটু সময় বেঁচে থাকত! যদি আর দু’একটি কথা প্রাণ খুলে বলতে পারতাম! তা আর পারি কই! ক্রমাগত সে হারিয়ে যায় মহাকালের চিরন্তন স্রোতে। যখন সে শ্রান্ত নিশ্বাসে আমার বুকে এলিয়ে পড়ে তখন বুকের উপরে পড়ে থাকা ভষ্ম ছাইগুলো চন্দ্রকিরণে চকচক করে ওঠে।
আবার প্রহর গুনি এমন একটি খসে পড়া তারার জন্য। হয়ত এর বাকি কথাগুলো সে-ই জানে, হয়ত সে-ই এসে আমাকে শোনাবে। এরকমভাবে আমার বুকের উপর কত মানুষের, কত তারার, কত পাষাণের মৃত্যু শপথ পাঠ করতে শুনেছি। কত যে অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে নয়ন ভেজাতে দেখেছি তা আমি ইয়ত্তা করেও বলতে পারব না। তবে, এদের এ লুকোচুরির দর্শক হয়ে এভাবে বয়ে চলেছে আমার সময়, আমার জীবন, আমার কাল।
আমার আর একটি নামও আছে, প্রকৃত নাম। প্রতিটি শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর তার জননী কিংবা পিতা একটি সুন্দর নাম রচনা করে দেন। যে নামে কেউ ভুবন বিখ্যাত হয়, আবার কেউ চিরদিন নিজের অস্তিত্বের সীমায়িত প্রাচীর ভেঙে তার যোগ্যতাটুকুও প্রমাণ করতে পারে না। আমারও তেমনি একটি নাম দেওয়া হয়েছিল। যখন আমার জন্ম হলো ঠিক তখনই। মহা ধুমধাম করে আমার সে নামটি আমার পিতা রচনা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু যুগের সাথে সাথে মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে, পুরাতনকে নতুন করে উপস্থাপন করা হয়েছে, হারানো অতীত খোঁজা হয়েছে, অথচ আমার সেই পিতৃপ্রদত্ত নামটির আর সন্ধান করা হয়নি। মানুষ বড়ই বিচিত্র বস্তু। কত অপ্রয়োজনীয় অস্তিত্বের সন্ধান উদঘাটনের জন্য শূন্যে পাড়ি জমায়, পাতাললোকে প্রবেশ করে, অথচ আমার পরিচয় চিরকাল মাটি চাপাই রইল। কালের বিবর্তনে আমার নামটি এতটাই পরিবর্তিত হয়েছে যে, আমি নিজেই মাঝে মাঝে গুলিয়ে ফেলি কোনটি আমি, নীলসাগর নাকি স্বর্ণদিঘল!
এই সহস্র বছরের জীবনে কত শত মানুষের হাসি কান্না আহাজারি আমার নিশ্বাসে, আমার জলে, আমার অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। যখন মন খারাপ থাকে তখন অনেকে আমার কাছে আছে, আবার কেউ মন ভালো থাকলে আমার কাছে আসে, কেউ কেউ কিন্তু আমাকে বিনা কারণেও দেখতে আসে। সে সব দর্শনার্থীদের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতাবদ্ধ আমার সীমানা প্রাচীর। ইদানিং আমাকে কেন্দ্র করে সরকার একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক প্রদর্শন কেন্দ্র চালু করেছে আমারই পূর্ব সীমানাপ্রান্তে। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীরা আমাকে দেখতে আসে। সে সব উৎসুক জনতার ভিড়ে আমার অস্তিত্ব খুব নিরবে হারিয়ে ফেলেছি। আধুনিকতার স্পর্শে ও এসব দর্শনার্থীদের পদচারণা অনুসরণে আমিও ক্রমাগত আধুনিক হয়ে উঠছি। তাই পুরাতন স্মৃতিগুলোও সভ্যতার বিবর্তনের মতো জলের সাথে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। শুরু হচ্ছে আমার আর একটি দিনের পথচলা। জানি না এ সভ্যতার; এ পথ চলারও শেষ কোথায়!
যে বার আমার জন্ম হলো, সেবার স্বর্ণগ্রামে এক মহামারি দেখা দিয়েছিল। প্রকাণ্ড সে মাহারীকে শুনেছি জরাজীর্ণ মরিচাপড়া এক তলোয়ারের মতো, যার যুদ্ধের নিনাদেই ঘুম আসে। যার জন্মেই জড়তা, তার জন্মই হয়েছিল সে মহামারিকে প্রতিরোধ করতে। মহামারিতে ফসলের সমস্ত মাঠ পুড়ে চৌচির হয়ে গেল। মাঠের ফসল মাঠেই পুড়ে ছাই হয়ে স্বর্ণগ্রামের আকাশে বাতাসে উড়ন্ত পাখির মেলানো পাখায়, গুচ্ছ গুচ্ছ ধবল মেঘের পিঠে উড়ে বেড়াতে লাগল। নদী-নালা, খাল-বিল সব শুকিয়ে বহুদিনকার মৃত সাপের মাংসহীন মেরুদন্ডের মতো গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে বেরিয়ে গেল। গ্রামের কৃষকেরা জলাভাবে ধুকে ধুকে মৃত্যুবরণ করতে লাগল। রাতারাতি স্বর্ণগ্রাম জীবশ্মশানে পরিণত হলো। এতকিছুর মাঝেও যারা বেঁচে আছে, তাদের চলাচলের ক্ষমতা নিস্তেজ হতে হতে জড়তায় পরিণত হলো। সমস্ত গ্রামময় ধু-ধু আর ধু-ধু। যারা প্রাণের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে, তাদের মুখবিবরের গহ্বর থেকে শুধু একটি মাত্র সুরই ধ্বনিত হতে থাকল, যে ধ্বনি আমার নিলাজ কানে আজও প্রতিধ্বনিত হয়- জল, জল, জল…
এ সমাজে এমন অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা নিজের বিপদের দিনেও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে অন্যের উপকারে দোষারোপ করতে নিছক আনন্দ ছাড়া কিছু উপভোগ করেন না। ওরা সমাজের অস্বীকৃত গুণিজন। এদের মতো পরপোকারী বন্ধু এ সমাজে ক’জন আছে! এরাই সমাজে আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু। এরাই লঙ্কাতে হুনু হয়ে রামের পক্ষ ধারণ করেছিল। তা নাহলে রামই বা সেদিন জিতবে কেন! এ সকল জনহিতৈশী মহান মানবদের মধ্যেই কয়েকজন এই মহামারিকে রাজা সুশীলকান্তের উপর ঈশ্বর প্রদত্ত অভিশাপ বলে গ্রামে প্রচার আরম্ভ করল। এই জনহিতৈশী মহান উপকারী সংগঠনের নেতা ছিলেন স্বর্ণগ্রামের এক সাধারণ ঘরের অসাধারণ কৃষক। নিবারণ চক্রবর্তী। যার বাড়িতে ঠিক মতো দু’বেলা খাবার জুটত না। অথচ, গ্রামের মানুষের জন্য কত চিন্তা! অবাক লাগত এদের কাহিনীগুলো শুনতে। মাঝে মাঝে এসব কাহিনীতে আমার চারিধার প্রখরিত হয়ে উঠত। ক্লান্তিতে আমিই হয়ত একসময় ঘুমিয়ে পড়তাম, তবু তাদের গুণপাঠ থামত না…
শ্রী সুশীলকান্ত। স্বর্ণগ্রামের রাজা। পৈত্রিকসূত্রে প্রপ্ত এই জমিদারিতে তার পূর্ব সাত পুরুষেরা তদারকি করেছেন। তাদের শাসন ব্যবস্থায় কখনো এমন মহামারি হয়েছে বলে তিনি শোনেননি। পিতামহ যধীষ্ঠির ছিলেন স্বর্ণগ্রামের সবচেয়ে নামকরা রাজা। তার শাসন ব্যবস্থায় নাকি কোনো প্রজাকে অনাহারে মরতে হয়নি। তার বাবাও বা কম কিসে! যজ্ঞেস্বরের শাসনামলে স্বর্ণগ্রাম বাণিজ্যিক স্থলে পরিণত হয়। চারিদিকে স্বর্ণগ্রামের যখন জয় জয় রব তখন তিনি যক্ষার পীড়ায় চোখ বুঝলেন। তারপর থেকেই সুশীলকান্তকে রাজাসনের হাল ধরতে হয়েছে। তারপর এতটা বছর চোখের পলকে পার করে দিলেন।
সময়ের সাথে সাথে জনসংখ্যার রাজ্য শূন্য হয়ে যাচ্ছে। অনেকে জলাভাবে এই রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে পালিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকেই তার পৈত্রিক বসতভিটা ছেড়ে যেতে না চাওয়ায় নির্মমভাবে মৃত্যুর কষাঘাতে নিবিষ্ট হচ্ছে। এই কঠিন মহামারি থেকে উদ্ধারের জন্য রাজা সুশীলকান্ত জরুরি সভার আয়োজন করলেন। এ সভায় রাজ্যের বড় বড় পণ্ডিতদের আমন্ত্রণ জানানো হলো। জনহিতৈশী মহান উপকারী সংগঠনের নেতা নিবারণ চক্রবর্তীও এই আলোচনা সভায় অংশগ্রহন থেকে বাদ পড়লেন না। এই সভার একটিই উদ্দেশ্য কীভাবে রাজ্যকে মহামারীর হাত থেকে উদ্ধার করা যায়। অনেক চিন্তা-ভাবনার পর পণ্ডিতদের মধ্যে থেকে প্রস্তাব এল- একটি দিঘি খনন করতে হবে, যার গভীরতা হবে পাঁচ মানুষ সমান এবং চারিদিকে প্রশস্ত হবে উত্তর দক্ষিণ বিশ মানুষ এবং পূর্ব-পশ্চিম ত্রিশ মানুষ সমান এবং দিঘি খনন শুরু করার পনের দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে।
পুরো আড়োম্বরে শুরু হলো দিঘি খননের কাজ। তের দিনের মাথায় দিঘি খনন শেষও হলো। কিন্তু দিঘিতে কোনো জলের দেখা নেই! সেই জনহিতৈষী মহান উপকারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আবার বাণী আসতে শুরু করল এই রাজা অভিশপ্ত, আমরা আগেই বলেছিলাম এই রাজা রাজ্য চালালে আমরা এভাবেই মারা যাব, তখন তো কেউ’ই আমার কথা শুনোনি। এখন দেখ অবস্থাটা। হাইরে আমাদের কপাল! কপালে মরণটাও এভাবেই লেখা ছিল। একঢোক জল পাব না মরণের সময়!
রাজা সুশিলকান্ত নিদারুণ সংকটে পড়লেন। তিনি কিছুতেই বুঝতে পারলেন না যে কীভাবে এই রাজ্যকে রক্ষা করা যায়। তাই তিনি আবার সভা বসালেন। সভাসদে জনহিতৈষী মহান উপকারী সংগঠনের সেই মহান নেতা নিবারণ চক্রবর্তী রাজাকে রাজ্য ত্যাগ করার কথা উত্থাপন করলেন। বললেন, যদি রাজা স্বেচ্ছায় এই রাজ্য ত্যাগ করে তবেই এ রাজ্যে আবার শান্তি ফিরবে, রাজ্যের প্রজাদের জলাভাব ঘুচবে। রাজার রাজ্য ত্যাগ নিয়ে সেদিন চিন্তা ছিল কিনা জানি না, তবে জলাভাব নিয়ে সেদিন অনেক চিন্তা করেছিলেন। সাধারণ প্রজার উপকারে নিজেকে এভাবে বিসর্জন দিতে পারে এমন রাজার নিদর্শন ইতিহাসে খুব কমই আছে। তবুও রাজা সিদ্ধান্ত নিলেন সাধরাণ প্রজার উপকারের জন্য তিনি স্বেচ্ছায় রাজ্য ত্যাগ করবেন। সেটাও তো ভালোই ছিল। কিন্তু, পণ্ডিতদের পক্ষ থেকে বাধা আসল। পণ্ডিতেরা শোনালেন আর একটি পন্থা। যে পন্থা শুনে সমস্ত রাজ্য স্তম্ভিত হয়ে গেল। এই পন্থা অবলম্বিত হওয়ার পরে দুদিন রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে যেন আর একটি মহামারি দেখা দিল। যে নিবারণ চক্রবর্তী এবং তার সংগঠনের সাধারণ সদস্যরা সারা জীবন রাজার বিরোধীতা করেছে, এই সংবাদে তাদেরও বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। রাজা হুকুম দিলেন পূজার আয়োজন কর।
তোড়জোড়ে পূজার আয়োজন করা হলো। ধুম ধাম করে এ পূজা অর্চনার অনুষ্ঠানে রাজ্যের সকল প্রজারা উপস্থিত হলো। তারা যেন ভুলেই গেছে যে মহামারীতে প্রাণিসত্তা থেকে তাদের অস্তিত্ব আজ বিলুপ্ত প্রায়, স্বর্ণগ্রামের ঘরে অনেকদিন জলের ঘটি ভরেনি। এ পূজার্চনা না দেখলে যেন তাদের চিরকালের জন্য একটি পাপবোধ তাড়া করে বেড়াবে, তাদের মানবজন্ম যেন বিফলে যাবে। দিঘির মাঝখানে আয়োজিত এই পূজার্চনা অনুষ্ঠান সকলে দিঘির চারিপাশে ভিড় করে দেখতে লাগল। অন্য সকলের মতো আমিও সেদিন অনেকটা অবাক হয়েছিলাম। সেই পূজার্চনা অনুষ্ঠানে আমার নাম দেওয়া হয়েছিল- স্বর্ণদিঘল। যখন রাজা আমার নামটি উচ্চারণ করলেন গর্বে আমার বুক যেন প্রশস্ত নীলিমার বুক ছুঁয়ে দিল। হঠাৎ আমার উষ্ণ বালুর বুকে দুফোটা জলের পরশ অনুভব করলাম। সে জল আমার নয়, রাজার নয়নের লোনা জল। সাথে সাথে রাজা স্বপরিবারে ধুম-ধাম করে পূজার কার্য আরম্ভ করলেন। চারিদিকে হইচই পড়ে গেল জল, জল উঠেছে, জল এসেছে। সাথে সাথে বহু আকাক্ষিত অশ্রুপ্লাবিত বারিধারা আমার বক্ষদেশ ভেদ করে প্লাবিত হতে শুরু করল। আনন্দে রাজার দুচোখের সে জল যেন এই নব বারিধারার ঢেউয়ে স্বগর্বে কম্পিত হয়ে উঠল। চারিদিকে আনন্দের কলধ্বনি বাঁজতে লাগল। স্বর্ণরাজার জয় জয় রবে সকলে মুখরিত। সেদিন অন্তরের অতৃপ্ত বেদনা আর সাড়া দিয়ে উঠল না, এখনকার না বলা এই কথাগুলোও সেদিন একটি বারও মনের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাগ কাটল না। আমার নবস্রোতে সবাই প্রাণ ফিরে পেল। কেবল আমারই নব উন্মাদিত স্রোতে হারিয়ে গেল স্বপরিবারে স্রোতউন্মাদনী আমার জন্মদাতা।
তারপর থেকে আমি এমন কল্লোলিত বারিধারা বুকে নিয়ে একইভাবে বয়ে চলেছি। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ। সকলে আমার জন্মদাতাকে ভুলে গেলেও আমি আজও ভুলতে পারিনি। তার তৈলাক্ত মুখাবয়ব, স্মৃতিময় ক্ষণটি কেবলই বুকের মধ্যে উথলি ওঠে, আমি কেবলি নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিই…