সায়মা ইসলাম
জন্ম টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলার আকুর টাকুর পাড়া। ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর। বর্তমানে সরকারি শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে কর্মরত।
সায়মা ইসলাম

কচুরিপানা

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

‘পানি আর পানি! পুরা গেরামটাই য্যান একটা উথাল পাথাল গাঙ।’ কলাগাছের ভেলার উপর বসে গ্রাম ভাসিয়ে নেওয়া এই বানের পানির কোনো কূল-কিনারা পায় না ময়না, ‘এত পানি চৈত মাসে থাহে কই? আশপাশের বিল, পুষ্কুণী, খানাখন্দ ব্যাবাক শুকাইয়া খটখট করে। পানির আকালে জীবনটা য্যান মরুভূমি হইয়া উঠে। সংসারের কামে সারাদিন কত্তো পানি লাগে। মরা গাঙের বুক থিকা কলস ভইরা পানি টানতে টানতে মাঞ্জাটা যায়!’ দুই হাতে বকরির বাচ্চাটাকে বুকে জড়িয়ে অথৈ পানিতে ভাসমান সামনের একচালা বাড়িটার উপর স্থির দৃষ্টি রেখে ময়নার চোখজোড়া থৈ থৈ করতে থাকে। তার ফর্সা ছোট্ট মুখখানি হঠাৎ কুঁচকে উঠে, থেকে থেকে চিনচিনে একটা ব্যাথা গুঁতো দিচ্ছে পেটে। বাপ মায়ের সঙ্গে সঙ্গে সাড়ে সাত মাসের বাচ্চাটাও ময়নার পেটের ভিতর সাঁতার কাঁটতে শুরু করেছে মনে হয়। পেটে হাত রেখে সে কোঁচকানো চোখে তাকায় লতিফ মিয়ার দিকে। বড়ো পিতলের কলসীটা একহাতে পানিতে ভাসিয়ে সাঁতরে ভেলায় উঠল লতিফ। কলসীটা শুইয়ে ভেলার সাথে বেঁধে নিয়ে ছাগীটাকে কোলের কাছে বসিয়ে লগি ধরে ভেজা গায়ে চুপচাপ বসে থাকে। তার শুকনো উদাস দৃষ্টি একটু একটু করে দূরে সরতে থাকা বাড়িটার উপর। পানির উপর ভেসে থাকা ঝকঝকে টিনের চাল, চাল ছেয়ে যাওয়া কুমড়োর লতা, উঠোনের পানিতে মাথা উঁচিয়ে থাকা কিছু বেগুন গাছ, মাঁচায় ঝুলে থাকা কচি ঝিঙেগুলোর সাথে পুরো বাড়িটাও যেন ঢেউয়ের তালে মৃদু মৃদু দুলছে ।

গত শীতের মরসুমে ঘরে বউ এনেছে লতিফ। ময়নাকে ঘরে আনতে কত কাঠ খড়ই না পোহাতে হলো তাকে। বাপ মা মরা মেয়েটা অভাবী মামার ঘরে সারা জীবন কষ্ট করেছে। জমিজমা নাই, ঘরে বেড়া পর্যন্ত নাই, এমন পোলার কাছে এতিম ভাগনিটাকে তুলে দিতে রাজী হচ্ছিল না ময়নার মামা। জেনেশুনে চালচুলোহীন লতিফের কাছে মেয়ে বিয়ে দিবেই বা কোন আহাম্মক?

সরাপাড়া খাঁ বাড়িতে কামলা খাটতো লতিফের বাপ লাল মিয়া। খাঁ সাহেব দরাজ দিলের মানুষ, খুশি হয়ে তার একটুকরো পতিত জমিতে ঘর তুলে থাকতে দিয়েছিল সহায় সম্বলহীন লাল মিয়াকে। নিজ হাতে জঙ্গল সাফ করে, পুকুর কেটে ভিটা উঁচু করে ঘর তুলে বউ-বাচ্চা নিয়ে এসে সেই বাড়িতে সংসার পেতেছিল লাল মিয়া। লতিফ যে বছর সরাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস টু-তে উঠল, সেই বছর তার বাপ মরল। সাপে কেটেছিল তাকে। কবিরাজ এনে বিষ নামিয়ে ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ করা হয়েছিল সাধ্যমতো। লাল মিয়া সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও ধীরে ধীরে পচন ধরল তার পায়ে। সেই পচে যাওয়া পা নিয়ে আটমাস বেঁচে ছিল লতিফের বাপ। চার বছরের লাল্টু, আট বছরের লতিফ, আর এগারো বছরের অনুফাকে নিয়ে তখন অথৈ জলে পড়লো সাতাশ বছর বয়সী সোনাবানু। গায়ের চামড়া ময়লা হলেও বিধবা সোনাবানুর মজবুত জোয়ান শরীরের উঁচু-নিচু বাঁক দশ হাত কাপড়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে চায় না তখন। গাঁয়ের মরদগুলোর নজরখাকি গতরটা ছেঁড়া কাপড় টেনেটুনে কোনোরকমে ঢেকে বাড়ি বাড়ি ধান সিদ্ধ, নাড়া শুকানোর কাজ শুরু করল সোনাবানু। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে দিনভর খেটেও তিন ছেলেপুলের মুখে পেটপুরে দুইবেলা ভাত জোগাড় হয় না। পেটের তাড়নায় ছোট্ট লতিফও তখন স্কুলে যাওয়া বাদ দিয়ে খেতখোলায় কিষান খাটতে লেগে গেল। চারপেট ভাতের ধান্ধায় দিনটা চোখের পলকে পার হলেও রাতে সহজে চোখের পাতা এক করতে পারত না সোনাবানু। ফাঁকা ডাঙার মধ্যে বাড়ি, কাছাকাছি তেমন বাড়িঘর নাই। ঘরের ভাঙা বেড়ার ফাঁকফোকর গলে শিয়াল কুকুরের জ্বলজ্বলে নজরে তার চোখের ঘুম হারাম হয়ে যেত। মাথার কাছে বটিখানা রেখে দুই মেয়েকে দুই হাতে সাপটে বুকে জড়িয়ে সারারাত কাঠ হয়ে পড়ে থাকত দিনের আলো ফুটবার অপেক্ষায়। অনুফা ছোট ভাইটারে নিয়ে বাড়িতে থাকত সারাদিন। শাকপাতা দিয়ে খুদের ভাত খেয়েই মায়ের মাজা রং নিয়ে লাউয়ের ডগার মতো তরতরিয়ে বেড়ে উঠতে লাগল মেয়েটার শরীর। লাল্টু সেইবছর স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে, অনুফার বয়স তখন চৌদ্দ কি পনেরো। পেট ব্যাথা আর বমি বমি ভাব নিয়ে অনুফা চৌকির উপর উপুর হয়ে পড়ে রইল কয়টা দিন। লতিফের চোখের সামনেই তার মা মেয়েটাকে পায়ের নিচে ফেলে চুলের মুঠি ধরে মনের সাধ মিটিয়ে ঝাঁটাপেটা করল দু’দিন। মারের চোটে অনুফা শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদত আর বলতো, ‘ও মা, আমার কোনো দোষ নাই, আমি নিজের ইচ্ছায় কিছু করি নাই…।’ লতিফ তখন এতোকিছু বোঝে না, বোনের ফোঁপানো কান্না দেখে হাঁ করে শুধু চোখের জল ফেলত। বুঝত, খুব খারাপ কিছু একটা হয়েছে অনুফা বু’র। তার ক’দিন বাদে এক সন্ধ্যায়, লতিফের মা উত্তর পাড়ার এক দাদীকে ডেকে নিয়ে এল, তারে হাতে কী সব শেকড় বাকড়। ঘুঁটঘুঁটে আন্ধার সেই রাতে লতিফ আর লাল্টুকে ঘরের দাওয়ায় বসিয়ে, ঘরে খিল দিয়ে কেরোসিন কুপির আবছা আলোয় মা আর দাদী মিলে মধ্যরাত পর্যন্ত অনুফা বু’র উপরে খুব অত্যাচার করল। অনুফার বুক ফাটা চাপা গোঙানির শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছিল লতিফ। তারপর দুই দিন ঘরের মেঝেয় ছেঁড়া শতরঞ্চিটার উপর পড়ে থেকে কোনো শব্দ ছাড়াই মরে গেল অনুফা। খুব করে কাঁদল ক’দিন লতিফের মা। তারপর পাপিষ্ঠা মেয়ের শোক ভুলে পেটের জোগাড়ে নেমে পড়ল। খেতে কাজ করতে করতে গাঁয়ের মানুষ অনুফার মরা নিয়ে খারাপ খারাপ কথা বলত। মরা বোনটার উপর খুব রাগ হতো লতিফের। আবার রাতে বিছানায় শুয়ে অনুফা বু’র মায়া মায়া মুখটা চোখে ভাসতে ভাসতে স্বপ্নের দেশে চলে যেত লতিফ। যেখানে অনুফা’বু লাল টকটকে জামা পড়ে হাসতে হাসতে ফুলের বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বু’র কথা জিজ্ঞেস করলে চোখ বুজে শুয়ে মা তো তাই বলে ঘুম পাড়াতো লাল্টুকে, ‘অনুফা ফুলেফলে ভরা খুব সুন্দর আসমানের দেশে চইলা গেছে। সেইখানে খালি সুখ আর সুখ, তর বু’র এখন আর কোনো কষ্ট নাই।’

তার বছর তিন বাদে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লতিফের বাপের দেয়া ঘরটা সুতাকাটা ঘুঁড়ির মতো হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে মিলিয়ে গেল। মায়ে পুতে মিলে পুরোনো খুঁটির উপর হোগলার বেড়া দিয়ে কোনোমতে আবার জুড়ে নিয়েছিল ঘরটা। তার পরের বছর বানের পানি নেমে যাওয়ার দিনকয়েক পর দুইদিনের ভেদ বমিতে সুখের ধরাধাম ত্যাগ করলো লতিফের মা। মা মরার পর লাল্টুকে সদরে নিয়ে গেল লতিফের এক দুঃসম্পর্কের চাচা। সেখানে চাচার রিকসার গ্যারেজে কাজ করে লাল্টু। প্রথম দিকে দুই চার মাস পর পর গাঁয়ে আসত। বিয়েশাদী করে সেখানেই সংসার পেতেছে লাল্টু। এখন বছরে একবারও গাঁয়ের মুখ দ্যাখে না সে। আসবে কী করতে? বউ বাচ্চা নিয়ে শোবে কোথায়? বাপের ভিটেয় একখান খড়ের চালা ছাড়া আর তো কিছু নেই। বাড়ির চারপাশে ঝোপজঙ্গল আর সাপখোপের আস্তানা। লতিফ একরাত নিজের ভিটেয় থাকে তো সাতদিন এ গাঁয়ে ও গাঁয়ে কিষান খেটে সেখানেই মাথা গুঁজে পড়ে থাকে। মা মরার পর ঘর-সংসার বলে তো আর কিছু নেই তার। সারাদিন পর বাড়ি ফিরে চুলায় আগুন দিয়ে হাত পুড়িয়ে চাল ফুটানোর চেয়ে খেয়ে না খেয়ে এর ওর ঘরের দাওয়ায়, খড়ের গাদায় রাতটা পার করে দিতে পারলেই লতিফের মন্দের ভালো।

বছর দুই আগে সাড়িয়াকান্দির মেম্বরসাবের খেতের ধান কাটতে গিয়েই ময়নার সঙ্গে লতিফের দেখা। ময়নার মামা আইজুদ্দিনও মেম্বরের জমিতে কামলা খাটত। দিনশেষে মেম্বর বাড়ি খেয়ে এসে ময়নার মামার সাথে লতিফ গেছিল রাতটা কাটিয়ে দিতে। বারবাড়িতে বাশের মাঁচায় খোলা বাতাসে গা এলিয়ে আইজুদ্দি তার পূর্বপুরুষের গালগপ্পো করছিল লতিফের কাছে। হাঁক দিয়ে হুঁকোটা চাইতে, ছিপছিপে গড়নের একটা মেয়ে আগুনে ফুঁ দিতে দিতে এসে দাঁড়াল আইজুদ্দির সামনে, ‘মামা, এই যে তোমার তামুক।‘ হুঁকোটা মামার হাত দিয়ে লতিফের দিকে আড়চোখে তাকাল একবার। আবছা চাঁদের আলোয় লতিফের মনে হলো, ঠোঁটের কোণে লুকিয়ে রাখা ছোট্ট হাসিটুকু দিয়ে মেয়েটা তাকে কিছু বলতে চাইল যেন। কাজ শেষে সন্ধ্যায় আইজুদ্দিনের বাড়ি গেলেই ময়নার মামি লতিফের জন্য আখের গুড় দিয়ে লেবুর শরবত পাঠিয়ে দিত ময়নার হাতে। ময়নার মামির যত্ন-আত্তিতে পাঁচটা রাত খোয়াব দেখতে দেখতে বেশ আরামেই কাটিয়ে দিল লতিফ।

সেই খোয়াবের মধ্যেই একরাতে ময়না এল বারবাড়ির চালার নিচে। লতিফ ঘুমজড়ানো চোখে মাথার কাছে দাঁড়ানো পাতলা নারী শরীরটাকে দেখল। ময়না ফিসফিসিয়ে কিছু একটা বলতে চাইছিল বোধহয়, তার আগেই স্বপ্ন বা ঘুমের ঘোরে মধ্যে লতিফ হ্যাঁচকা টানে বুকে টেনে নিল তাকে। ময়না সাপের মতো পিছলে এক ছুটে বেরিয়ে গেল লতিফের উষ্ণ, ঘর্মাক্ত বেষ্টনী থেকে। সেইরাতের ঘটনাটা বাস্তব না খোয়াব, এখনও ঠিক দিশা পায় না লতিফ। বিয়ের পর লতিফ অনেকবার জানতে চেয়েছে, ঐ রাতে ময়না সত্যি সত্যি এসেছিল কি না লতিফের কাছে। ময়না কোনো উত্তর দেয় না, শুধু ঠোঁট টিপে হাসে। ময়নার মামির ইচ্ছে ছিল, গাঁটের কড়ি খরচা না করেই ময়নাকে যদি কারো হাতে তুলে দেয়া যায়। লতিফও তখন এক পায়ে খাড়া। কিন্তু লতিফের ঘরদোরের অবস্থা দেখে বাদ সাধল আইজুদ্দিন। সেই ঘরদুয়ার ঠিক করতেই লতিফের বছরখানেক সময় লেগে গেল । খেয়ে না খেয়ে কিছু পয়সা জমিয়ে আর দশ হাজার টাকা সুদে ধার নিয়ে পুরোনো খুঁটির উপর ঝকঝকে নতুন টিনের চাল দিয়ে ঘর তুলল। ময়না বউ হয়ে এসে ঘরের সামনে পিছনের মাথাসমান জংলা সাফ করে বেগুন, কাঁচামরিচ, ঢেড়সের পালান করল। জাংলায় তরতরিয়ে উঠে গেল পুঁই, ঝিঙের ডগা। কুমড়োর লতায় ছেয়ে গেল ঘরের চাল। নিজের সংসারের চেহারা দেখে লতিফের বুকে সুখের কোকিল ডাকে। ঘরে ফিরলে নতুন বউ এর হাতের কাঁচের চুড়ির টুংটাং, চুলায় ফেনা ওঠা গরম ভাতের ধোঁয়ায় রাত নামার আগেই লতিফের চোখদুটো বুজে আসতে থাকে।

ঘোলা স্রোতের টানে সংসারের টুংটাং শব্দ একটু একটু করে মিলিয়ে যেতে থাকে, মাথার উপরের বিশাল ছাইরঙা আকাশটা গরম ভাতের ধোঁয়ার মতো ভারী হয়ে নিচে নেমে আসতে লতিফের দৃষ্টি ঘোলা হয়ে আসে। বড়ো বড়ো বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে শুরু করলে হঠাৎ ময়নার মৃদু গোঙানিতে ঘোর কাটে লতিফের। ময়না দুই হাত দিয়ে তার ঢোলের মতো ফোলা পেট চেপে ভেলার উপর শুয়ে পড়েছে। হাত থেকে লগি ফেলে ছুটে গিয়ে ময়নার মাথাটা কোলে তুলে নেয় লতিফ। নিজের মাথার আড়াল দিয়ে পোয়াতি বউয়ের ফ্যাকাসে ছোট্ট মুখটা বৃষ্টির ফোটা থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে। ময়না চোখদুটো বড়ো বড়ো করে ব্যথায় কাতরাতে থাকে, ‘আফনে যান, লগিটা ধরেন। জলদি আমারে ডাঙায় লইয়া যান। আর সহ্য করতে পারতেছি না আমি।’ ময়নার দাঁতে দাঁত চাপা গোঁ-গোঁ শব্দে ভড়কে যায় লতিফ। উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র কম করে হলেও ঘন্টা দেড়েকের পথ। প্রাইমারি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতেও ঘন্টাখানেক সময় দরকার। শরীরের সব শক্তি দিয়ে লগিটা জোর বাইতে থাকে লতিফ। কাছাকাছি কোনো নৌকা, মানুষজনের চিহ্ন নাই। অঝোর ধারায় কাঁদতে থাকা আসমানের পানে মুখ তুলে কচুরিপানার সাথে ভাসতে ভাসতে ভেজা কন্ঠে বিরবির করে উঠে লতিফ, ‘হে মাবুদ, জীবন মরণের মালিক! তোমার বান্দারে রক্ষা করো তুমি।’

সোয়ামির মুখটা শেষবারের মতো দু চোখ ভরে দেখতে পাথরের মতো ভারী হয়ে আসা চোখের পাতাদুটো প্রাণপন চেষ্টায় খুলে রেখে লতিফের মুখপানে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে ময়না।

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu