মাসুদ আনোয়ার

গন্দমের ঘ্রাণ

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

আমি বললাম, ‘মিলা মানে কী?’

সিরাজ দাঁড় টানা বন্ধ করে নৌকোর ভেতর থেকে বাঁশের লগি টেনে নিতে নিতে বলল, ‘মিলা মানি… ইয়া, ফয়জা ভাই, মিলা মানি কী বুঝাই দে তো তালতোরে…’

ফয়েজ আমার দিকে চেয়ে মৃদু হাসলো। সেও তার দাঁড় শানে আটকাতে আটকাতে বলল, ‘মিলা মানি কমু। তয় আগে আমনের দাঁড় শানে আটকান।’

আমি তাদের দেখাদেখি দাঁড় আটকালাম। তারপর গলুই থেকে সরে এসে সিরাজকে লগি ধরার জন্যে জায়গা ছেড়ে দিলাম।

সিরাজ আর ফয়েজ পরস্পর হাসাহাসি করছে। ফয়েজ বলছে, ‘আ মিলাউয়া দৌল অবনে  নে?’

সিরাজ লগির গোড়া পানিতে ডুবিয়ে নৌকোর গতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে করতে বলল, ‘হি দৌল ন অদৌ? চাঙমা মিলানি দৌল ন’ অলে আ কন দৌল অবৌ?’

আমি তাদের কথা বুঝতে পারছি না। কিন্তু ভাবে-গতিকে বুঝছি, ওদের অবস্থা রসে টইটুম্বুর। আর ওদের কথাগুলো শুনতেও ভারী মজার। ‘চাঙমা’ শব্দটাই শুধু বুঝতে পারছি এবং তাতে মনে হচ্ছে তারা বুঝি চাকমা ভাষাতেই কথা বলছে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘ফয়েজ ভাই, মিলা মানে কী বললেন না?’

ফয়েজ বলল, ‘মিলা মানি? তয় হুনেন। মিলা মানি মাইয়া, মাইয়া লোক, বুইজছেন?’

নৌকো টিলার কাছে এসে গেছে। হাল থেকে মমিন চেঁচিয়ে উঠল, ‘লগি ধর, লগি ধর….’

সিরাজ টিলার গায়ে লগি ঠেসে ধরে চাপ দিল। ‘মানি মাল। বুইজছেন, তালতো? মিলা মানি…হি হি হি…’

নৌকো গতি স্থির হয়ে গেল লগির প্রতিবন্ধকতায়। ফয়েজ রশি হাতে লাফ দিয়ে টিলায় নামল। একটা গাছের গোড়ার সাথে বাঁধল রশিটা।

মমিন হাল থেকে নেমে এসে ছৈয়ের ভেতর ঢুকল। সিরাজ আর ফয়েজকে ডাকল সেখান থেকে। একটু পর আবার বলল, ‘তালতো, আমনেও আসেন।’

সিরাজ আর ফয়েজের পিছু পিছু ছৈয়ের ভেতর গিয়ে ঢুকলাম আমিও। মমিন সিরাজকে বলল, ‘তালতোরে বুঝাই ক’।’

সিরাজ আমার দিকে চেয়ে চোখ মটকাল। তারপর  মুচকি হেসে বলল, ‘তালতো, যাইবান?’

আমি বললাম, ‘কোথায়?’

ও বলল, ‘কোথায় আবার? আমরা যেইখানে যাই হেইখানে!’

ব্যাপারটা এতক্ষণেও না বোঝার মতো অবুঝ তো আর আমি নই। ওর চোখ মটকানি দেখে আমার ভেতরেও ততক্ষণে রোমাঞ্চের সাড়া জেগেছে। গোপনীয় কিংবা নিষিদ্ধ কোনো আনন্দ আস্বাদনের যে একটা সহজাত প্রবণতা মানুষের  মনের চেতনে অবচেতনে নিত্য সঞ্চরমান, সে প্রবণতায় আমিও প্রবৃত্ত হতে উন্মুুখ হলাম। মনে হলো, এটা খুবই স্বাভাবিক আর আমার বয়সে এটা হবে সর্বপ্রথম সচেতন অভিজ্ঞতা এবং নতুন তো বটেই। তাছাড়া সব নিষেধের বেড়াজাল ডিঙিয়ে আমার নিজের সিদ্ধান্তেই আমি কাপ্তাই এসেছি। নৌকোর চাকরি নিয়েছি, সেটা যতটা না উপায়ান্তরহীনতায়, তারচে’ বেশি রোমান্টিকতায়। জানতে হবে জীবনকে, বুঝতে হবে মানুষকে। উপলব্ধি করতে হবে বেঁচে থাকার নিগুঢ় রহস্যকে। আর তার জন্যে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার সাথে নিজেকে মিলিয়ে দেয়া আর… ওরা যা করতে যাচ্ছে, এসব কিছুর মানেই তো নিজেকে জীবনের বিশাল প্রান্তরে ছড়িয়ে দেয়া। জীবনের সূক্ষাতিসূক্ষ্ম গ্রন্থির গিঁঠ খোলা। আর এটাতো তারই একটা অংশ। সবচেয়ে উদ্দীপক, উত্তেজক এবং সর্বোপরি সবচেয়ে বেশি রহস্যাবৃত অধ্যায় আবিষ্কারে নিজেকে সচকিত করা। আমার মনে হলো, সতেরো বছর বয়সে আমি নিশ্চয় সব ব্যাপারে নাক গলানোর মতো যোগ্যতা অর্জন করেছি, যার প্রমাণ এরাই। যোগ্য নাহলে এরা নিশ্চয় আমাকে জিজ্ঞেস করত না বরং লুকোতো। সুতরাং তাদের সমকক্ষতা অর্জনের জন্যে আমাকেও যেতে হবে বৈ কী?

তবে এত তাত্ত্বিকতা ছাড়াও প্রথম প্রভাতের প্রথম পাখির গানের মতো, প্রথম সূর্যের সোনালি ছটার মতো আমার অন্তঃস্থল থেকে এক অন্ধ আবেগ ইচ্ছের মোড়কে তীব্র থেকে তীব্রতর গতিতে উৎক্ষিপ্ত হতে লাগল। পঞ্চমুখে সাড়া দিতে চাইল আমার মন, ‘যাবো যাবো, আমিও যাবো…’

কিন্তু কোত্থেকে যে এমন লজ্জা এসে জাবড়ে ধরল আমাকে! আমার কান গরম হয়ে উঠল। চোখ নামিয়ে মৃদু কণ্ঠে বললাম, ‘না, যাবো না…’

মমিন ক্ষুব্ধ হলো ভীষণ। ‘যাইবেন না! তাইলে কিস্তি ধইরলাম কিয়েরলাই?’

সিরাজ হতাশ হয়ে বলল, ‘যাইবেন না কেন? আমরা সবাই তো যামু।’

এদের মধ্যে ফয়েজ একটু কম কথা বলে। সে এবার মাথা নেড়ে বলল, ‘না তালতো। এসব কাজে একজনের হইলে হয় না। সবার আগ্রহ থাকন লাগে। তাছাড়া আমরা সবাই এক বয়সী। থাকি পরবাসে, বিদেশের বাড়িতে। বিদেশের  বাড়িত থাইকতে অইলে মনে ফুর্তি রাখন লাগে। কী, খারাপ কইলামনি? ’

খারাপ কোথায়? আমি তে মনে মনে যেতে রাজি। আমার অন্তরাত্মা শিউরে উঠছে অজানা পুলক হাওয়ায়, রক্তের ভেতর কল্লোলিত হচ্ছে রহস্যের অতলান্ত; কোনো নীতির পীড়ন নেই, সংস্কারের শাসন নেই, বোধের দংশন নেই, উপরন্তু অনুভূতির অতলে অনাস্বাদিতের তীব্র আস্বাদনাকাঙ্ক্ষা— সে তো মিথ্যে নয়। আর সে সত্যের অনুকূলে প্রবাহিত হচ্ছে পৌরুষের ঊষালগ্নে উদঘাটনোন্মুখ আনন্দের থরো থরো পুবালি; সুতরাং এ অবস্থায় অরাজি, এমনকী নিমরাজি হবারও বা অবকাশ কোথায়?কিন্তু তবু কেন মুখ ফুটে ‘হ্যাঁ’ বলার সাহস হচ্ছে না আমার!

আমার চোখের সামনে বসে আমার দিকে চেয়ে আছে সেবক, পারভেজ, পান্না আমার বন্ধুত্বের ভূবনে উজ্জ্বল ত্রিরত্ন, আমাকে কী যেন জিজ্ঞেস করছে রোকেয়া, হেনা, স্বপ্না, সুফিয়া আমার অমল মুগ্ধতার গোলাপ-জবা-হাসনুহেনা; আর অবাক আমার প্রিয় শিক্ষকেরা। আমি এক অদৃশ্য জালে জড়িয়ে গেছি।

আমি মাথা নাড়লাম। ‘না, যাবো না।’

সিরাজ রেগে গেল। ‘যাইবেন না ক্যান?’

আমি ম্লান কণ্ঠে বললাম, ‘ভাল্লাগে না আমার।’

মমিন হেসে উঠল কল কল করে। ‘ভালা লাগে না? আরে মিয়া, চলেন চলেন। ভালা লাগনে লাইগাই তো কিস্তি ধরছি এই জাগায়। কই চলেন?’

আমি ফয়েজের দিকে চাইলাম। সে চেয়ে আছে আমার দিকে। ভাবলেশহীন চোখে। আমি বুঝতে পারছি না কী করব। অস্বীকারের প্রবণতা তো আমার মধ্যে নেই, আমার মনের খবর আমার চেয়ে বেশি আর কে জানে?

চোখের সামনে নাচছে একটা প্রজাপতি, একটা ফুল চেয়ে আছে যেন তাকে ছোঁয়ার অপেক্ষায়। সে ফুল হাসতে জানে, দুলতে জানে, রহস্যের ভেতর আরো রহস্য লুকিয়ে রাখতে জানে গহীনের গহীনে। সে তো আমাকে ডাকছে; আমি তো অজীব নই যে, তার ডাক শুনব না। আমিও তো সাড়া দিতে চাই। কিন্তু পারছি না কেন?

ফয়েজ বলল, ‘তালতো চলেন।’

আমিম  মাথা নাড়লাম। ‘না, আপনারা যান। আমি কিস্তিতে বসি।’

ফয়েজ হেসে বলল, ‘তা কী করে হয়? এক যাত্রায় দুই ফল কেমনে  হবে? দোজখে যাই আর বেহেস্তে যাই, চারজন এক লগে। জানেন না, একের বোঝা, দশের লাডি? না কী বলেন?’

আমি চুপ করে রইলাম। ভেতরে ভেতরে দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে চাচ্ছি।

মমিন মলিন স্বরে বলল, ‘সিরাজ, তাইলে কিস্তি এরি দে। তালতো আমাদের নিরাশ করল আরি! এরকম অইলে হের লগে আমাদের মিল-মিশ হইব না। এক সাথে চলতে গেলে…’ কথা শেষ করল না সে। মুখ গোমড়া করে বসে রইল।

আমার দ্বিধার বাঁধ ভাঙল। আসলে এরকম একটা অজুহাতের অপেক্ষায় ছিলাম যেন। এখন মনকে চোখ ঠারার মোক্ষম পথ পেয়ে গেলাম। ওদের সাথে এক সাথে চলতে হবে আমাকে।

এক সঙ্গে চলতে হবে জীবনের সাথে, জগতের পথে, তাল মেলাতে হবে মানুষের সাথে। ভেঙে ফেলো পুরাতনের জীর্ণ দেয়াল, সংস্কারের বেড়া। কী ছিলাম সেটা বড় কথা নয়, কী হবো সেটাও পরের ব্যাপার। আসলে কেমন আছি সেটাই দেখার বিষয়। বর্তমানের আয়না হতে চেহারা লুকিয়ে চললে আয়নার ক্ষতি বৃদ্ধি কিছু নেই, বরঞ্চ নিজেরই অলাভ। একদিন হয়তো দেখা যাবে নিজের চেহারাই ভুলে গেছি।

আমি বললাম, ‘ঠিক আছে। চলেন।’

মমিনের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। সিরাজ টিটকারি মেরে বলল, ‘মিয়া, যাইবেন তো এত তাল গরেন ক্যা? শুধু শুধু সময় নষ্ট।’

আমরা চারজন নৌকোর গলুইয়ে গিয়ে দাঁড়ালাম। ওদের কথা জানি না, তবে আমার কল্পনায় তখন উলঙ্গ নারী, রক্তে প্রথম বাঁধভাঙার তীব্র টান, মর্মের গভীরে নীরব গর্জন; তবু দু’পা কেমন আড়ষ্ট, গলা শুকিয়ে কাঠ। বারবার ঢোক গিলছি, ঠোঁট ভেজাচ্ছি জিভে চেটে; আর আমার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের গমন-নির্গমণের প্রক্রিয়া সশব্দ, সঘন এবং… উষ্ণ।

মগ কিংবা চাকমা বুড়োটা এতক্ষণ তার ঘরের উঠোনে বসে সম্ভবত আমাদের লক্ষ করছিল। আমার নৌকোর গলুই থেকে টিলায় নামলাম। দেখে সে বসা থেকে উঠে এগিয়ে এল। ওপর থেকে একটু ঝুঁকে টিলা বেয়ে উঠতে থাকা আমাদের দিকে তাকিয়ে হাঁক দিল, ‘ঐ খুড়া, হেই বাঁআল, আ হিত্তি এজত্তে? (এই চাচা, এই বাঙাল, কেন আসছিস তোরা?’)

আমি ভয় পাচ্ছি। বুড়োর কথা বুঝতে পারছি না। তবে মনে হচ্ছে গালাগাল দিচ্ছে। ফয়েজকে ফিস ফিস করে বললাম, ‘কী বলছে বুড়ো?’

ফয়েজ আমার চেয়ে নিচু গলায় ফিস ফিস করে বলল, ‘চুপ চুপ কতা কইয়েন না।’

সিরাজ একটু উঁচু গলায় বলল, ‘আ হিত্তি এজঙর খুড়া। ম’ তাগলান দাঁত্তান ভাঙ্গি যেয়ন বুলি সক্কে উক্কা বানা পড়েত্তে আয়ি। তমা তাগলান দেবা? (আর কী জন্যে আসব, চাচা? আমার দাওয়ের ডাঁটটা ভেঙে গেছে। একটা নতুন ডাঁট লাগাতে হবে। তোমার দাওটা দেবে?)’

সিরাজের কথা শুনে মমিন হাসতে হাসতে টিলা থেকেই গড়িয়ে পড়ে আর কী? সেও ফিসফিস করে বলল, ‘শালা সিরাইজ্যা! কিস্তা এককান বানাইছছ যা অক। দুই দুই খানা দা আছে নৌকোয় নতুন ডাঁট লাগানো। আর কছ কিনা দায়ের ডাঁট ভাঙি গেছে… হি হি হি…’

সিরাজ ধমকে উঠল, ‘চুপ ব্যাডা!’

বুড়ো ওপর থেকে বলল, ‘আ নেবে আয়ি.. (ঠিক আছে নিবি আর কী?)’

আমরা বুড়োর উঠোনে গিয়ে উঠলাম। বুড়ো ডাবা হুঁকো ধরিয়ে আনল। টানতে টানতে চারজনের মুখের দিকে তিন-চারবার করে চোখ বুলিয়ে চেয়ে নিল। এরপর মুখ থেকে হুঁকো নামিয়ে একগাল ধোঁয়া ছেড়ে কাশতে কাশতে বলল, ‘মাছিবা কন? (মাঝি কে?)’

মাঝি মমিন। নিজেকে দেখিয়ে বলল, ‘আমি।’

বুড়ো তার হাতে হুঁকোটা ধরিয়ে দিয়ে বলল, ‘নে, ধুন্দা খা, খুড়া।’

মমিন বিড়ি-সিগ্রেট খায় না। তবু বুড়োর সম্মান রক্ষার্থে ওটা হাতে নিয়ে দুচারটা টান দিয়ে সমানে কাশতে লাগল।

লম্বা একটা গাছের গুঁড়ি পড়েছিল উঠোনে। বুড়ো সেটা দেখিয়ে দিয়ে বল, ‘বছ, মাছি।’ তারপর আমাদেরও বলল, ‘আ তরাঅ’ বছ না খুড়া। বছ বছ।’

আমরা বসলাম। বাচ্চা একটা ছেলে আমাদের কাছে এসে দাঁড়াল। আমি তার দিকে তাকালাম। কুতকুতে চোখে রাজ্যের সারল্য। হলদে রঙের গায়ে সাদা ধুলোর আস্তর। ডিমের মতো ফোলা দুগালে সদ্য ফোটা মুরগীর বাচ্চার মতো তুলতুলে ভাব। আমি  হেসে বললাম, ‘তোমার নাম কী, খোকা?’

ছেলেটা কিছু বলল না। আমি আবার তার নাম জানতে চাইলাম। কিন্তু এবারও কথা বলল না সে। সুতরাং আলাপ জমল না। কিন্তু ওকে যে আদর করতে ইচ্ছে করছে আমার! কী করি?

শেষমেষ চুপ মেরে গেলাম।

এদিকে বুড়ো মমিনের সাথে এক নাগাড়ে কথা বলে যাচ্ছে চাকমা-বাংলায় মিশিয়ে। মমিন মাথা নাড়ছে সমঝদারের ভঙ্গিতে। মাঝে মাঝে খুব উৎসাহের সাথে হুঁ- টুঁও দিচ্ছে।

একটু পরেই একটা মেয়ে বেরিয়ে এল ঘরের পাশের জঙ্গল থেকে। মেয়েটার হাতে কয়েকটা শুকনো গাছের ডাল আর পেছনে একটা শুয়োরের বাচ্চা। ঘোঁৎ ঘোঁৎ করছে অনবরত। আমাদের দেখে এগিয়ে এল ওটা। নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে নাক ফুলিয়ে সমানে ঘোঁৎ ঘোঁৎ চালিয়ে যেতে লাগল। যেন আমাদের পছন্দ হচ্ছে না, তাই অসন্তোষ জানাচ্ছে সরাসরি।

মেয়েটা হাতের লাকড়ি রেখে ঘরের বেড়ার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের দেখতে লাগল। আমি খেয়াল করলাম, সিরাজ তার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপল। মেয়েটা তা দেখে নড়ে চড়ে দাঁড়িয়ে বিড় বিড় করে  কী যেন বলল।

এদিকে বুড়ো মমিনকে বলছে, ‘আ খুড়া, হেই ন’ পাং। উয়াস্যা রয়ন। তমা হাছে চল নেই দুগা? মরে এমমুট চল দেবা? (আহা চাচা, খেতে পাচ্ছি না। উপোস করছি। তোমার কাছে চাল নেই? আামাকে দু’মুঠো দেবে?)’

আমি মেয়েটির দিকে তাকালাম। চৌদ্দ-পনের হবে বয়স। ভরা স্বাস্থ্য। সুন্দর। তার স্বাস্থ্যকে ঢাকতে পারেনি তার পরনের ‘থামি’ কাপড়। দুচোখে অবাক দৃষ্টি। সারল্য যেন উপচে পড়ছে। কিন্তু আমার চেখে তার নগ্ন অবয়ব। শিরায় শিরায় অগ্নি স্রোত। অপেক্ষা করছি কখন… তাকে… কখন…!

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu