মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী

অভিমানী জোৎস্না লুকায় ওমের আস্তরণে

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী রচিত তিনটি কবিতা


অভিমানী জোৎস্না লুকায় ওমের আস্তরণে


সন্ধ্যার পরক্ষণে
ভগ্নহৃদয়ের শীত ধেয়ে আসে প্রচণ্ড গতিবেগে
মধ্যরাতের অভিমানী জোৎস্না বেয়ে
মিলিত স্বরের শিশির কণাগুলো
স্বপ্ন ভাঙে নবনীতার–একমুঠো চুল হতে
খসে পড়ে আহ্লাদী খোপা

অথচ–
আমি সারারাত নির্ঘুম কাঁথার আস্তরণে
স্বপ্নকে পাহারা দিয়েছিলাম
রাত পোহাবার আগেই ধূসর ওম
আঘ্রাণের হিমবাতাসে মিলেমিশে হয়েছিল একাকার!

শীতার্ত প্রত্যুষে বিস্তীর্ণ মাঠের সোনালি ধান
আর কুহেলি পুষ্পরাজি ঝলমলে রোদ ছুঁয়ে
কেবল সূর্যের সাথে মুচকি হেসেছিল।


মনপোড়া পাখি


মনপোড়া পাখিরে কইও খবর
কার লাগি সে কাটায় সময়
একলা ডালে–কারে খুঁজে নিঝুম রাতে
নরম স্বর ছাড়ে শিশির ঝরা ব্যাকুল জোছনায়


হেমন্তের অস্তিত্বে সাজে মনের গহীন


হেমন্তে হিম-বাতাসে দোলে মাঠের সবুজ
দোয়েলের শিসে নিস্তব্ধ দুপুরে ফিরে আসে উচ্ছ্বল শৈশব
নতুন ধানের গন্ধে ব্যাকুল মনের চারিদিক করে উচাটন
সোনালি শীষের ছোঁয়ায় উদাসী মন হারায় তন্দ্রাঘোরে।

পড়ন্ত বিকেলে সূর্য ডোবার মোহনীয় দৃশ্যে
পাখিরা দেহ ধুয়ে কলরবে মাতে সুরমা নদীর স্বচ্ছ জলে
দূরন্তপনায় মেতে ওঠে পাতিহাঁস, বুনোহাঁস, সাদা বক
কিশোরী নারীর মতন সাঁতার কাটে ভাবনার ভীড়ে;
মন-পোড়া পৃথিবীর আকাঙ্ক্ষার হাওড়-জলাশয়ের বুকে।

নামে যখন অন্ধকার–ঘনকুয়াশা মাড়িয়ে
হেমন্তের সোনা ঝরা দিনের বাউল নির্জন হয় একতারাতে;
শিশির ভেজা সবুজ পাতারা ছুঁতে চায় পঞ্চদশীর চাঁদ।

আর অভিমানী বৃক্ষেরা শান্তি খোঁজে
নিশ্চুপ সন্ধ্যায়–হাসনাহেনার ঘ্রাণে
নীরব আকাশের শীতার্ত বাতাসে; ঘুঘুর নরম গানের সুরে।

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu