অনঞ্জন

ওই নারী, সেই কিশোরী

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

অনঞ্জনের তিনটি কবিতা: “একবার ভেবেছিলাম”,“ওই নারী, সেই কিশোরী”,“নিরুত্তর সত্তা”


একবার ভেবেছিলাম


একবার ভেবেছিলাম আমার ভালোবাসা ফিরিয়ে নেব
ভুলেই গিয়েছিলাম ভালোবাসা তো ফিরিয়ে নেওয়া যায় না
জলে আলো মিশে গেলে পথিকের কী-ই বা করার থাকে
বছর ঘুরলে বড়জোর আবার হাঁটা শুরু করা যায়,
কিন্তু ও আগুনে বিষ তুমি ঢালবে কোথায়?

একবার ভেবেছিলাম আমার ভালোবাসা ফিরিয়ে নেব
শিকড়ের ধাক্কায় ছায়ার কম্পনে নিজেকে দেখব, একাই,
কোলাহলের অন্ধকার আর শরীরের আনন্দ কি এক?
নদী আর রাজকন্যার পেছনে ছোটাছুটির এই শেষ
কিন্তু একবার যে নির্জনতার স্বাদ পেয়েছে…

কক্ষপথ ছাপিয়ে এই যে অজস্র সঙ্গীত, এই মুহুর্মুহু
এই মন কেমন, এই নিভৃত-আঁধার!


ওই নারী, সেই কিশোরী


গাঢ় সুখস্বপ্নের দুপুরে কোথাও চোখের জল ছিল
সব কবিতার মতন এ-নারীরও একটা অতীত ছিল,
রোদ পড়ে যাবার আগেই অকস্মাৎ স্বপ্নে যতি আসে
পুরনো দুঃখী রজনীগন্ধা শিশিরের মতো যায় ভেসে
নারীর অতীত অবাধ্য রোদে চুপচাপ স্পর্শের খেলায়
ভেঙে দেয় নিঝুম দুপুর, নারী দেখে সে–কিশোরীটিকে।

তমসার বিস্তারের মাঝে তৃতীয়ার চাঁদের চুম্বনে
তবু নারী ছটফট করে, জলকণা দেখি চোখের কোণে,
জীবন মেতেছে নারীকে ভেঙে ফেলার বিপুল উৎসবে
নিঃসহায় একলা নিশীথে নারী ডোবে আপন নীলিমায়,
সব কবিতার মতন সব নারীর একটা অতীত থাকে
বিরামহীন নক্ষত্রের রাতে নারী দেখে সে-কিশোরীটিকে।


নিরুত্তর সত্তা


এত রক্তপাতেও আমি অন্ধ হয়ে থাকি
এত আর্তনাদেও বধির,
কুরুক্ষেত্রও আমায় বিচলিত করে না
নিঃসহায় নগরীও নয়।

এ পথের দু-ধারে আছে লোভের আড়ত
আর লোভ-আঁধারী রাজপথ,
শ্মশানের সার-সার চিতারা আছে বলেই
হয়তো একটু আগুন খুঁজতে হয়।

বিচলিত মানুষকে ওরা ব্রাত্য করে দেয়
হৃদয়কে তাই করি নিঃশব্দ,
রাত জেগে লড়াই করি বিদ্রূপের সাথে
আধখানা মানুষ জাগে রাতভর।

কান্না এসে নিঃশ্বাসকে তবু মন্ত্রময় করে
সে দুঃখ আমি সর্বাঙ্গে ধরি
ধূসর নিরুত্তর সত্তা তবু যে নিশ্চল
অশ্রুহীন কুয়াশার ভোর।

 

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu