ময়ূখ হালদারের তিনটি কবিতা ‘রেসকোর্স’, ‘উপন্যাসের পাতা থেকে’ এবং ‘আগামীর ইতিহাস’
ন’টার সাইরেন বাজে না এখন আর
কলে পড়া ইঁদুরের মতো
কুলি-কামিনের ভোর
বাজারের সবচেয়ে উঁচু আকন্দ গাছটায় বসেছে বিতর্কসভা
কুকুরের চিৎকার
জনশূন্য রেস্তরাঁ এবং সুসজ্জিত কাপ-প্লেট
বিষণ্ণ লিপস্টিকের দাগ মুছে ফ্যালে ঠোঁট
অধরা চন্দ্রবিজয়
তারপর আমরা একসঙ্গে রেসকোর্সের গ্যালারিতে বসি
বাজি ধরি
রূপকথার ঘোড়া সিংহাসনে বসে ডুমুরের ফুল হয়ে যায়
বাগানে বৃষ্টি নামে
পুড়ে যায় আমাদের ভাগ্য
জলজ উপন্যাস
নদী ফুরিয়ে গেলে সরিয়ে রাখি পলি
কাদাজল ছেঁকে তুলে আনি চিংড়ি-কাঁকড়া কিম্বা গেঁড়ি-গুগলি,
বিনিদ্র রাত-ভোর!
ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা আছে এক বালতি
রক্ত!
সাইনবোর্ডে লেখা নমিনির নাম।
রাস্তাটা বেঁকে গেছে বাঁ দিকে–
কলেজ ক্যান্টিন থেকে কৃষ্ণচূড়া
ধূসর বিকেল…
মেঘেদের কান্নায় ভিজে যাচ্ছে উষ্ণতম শহর…
চা ও সিগারেটের কাড়া-নাকাড়া!
অক্ষরের নিক্কণে বাজে ‘ফসিলস’-এর ঝংকার;
পাশাপাশি আমি আর ছায়া
ভালোবাসার পূর্ব-পশ্চিম
নৈঃশব্দ্যের ফুলঝুরি!
নিগূঢ় অন্ধকার
এক জন্ম থেকে আর এক জন্ম
অবিরাম ছুটে চলা কালো গর্ত
প্রকৃতি-পুরুষ এবং ধ্যানমগ্ন ঋষি
অভিশপ্ত আদিম গাছ
বিষাদ ছাড়া যার কিছুই দেওয়ার ছিল না
সবুজ ঘাসের ওপর এক পায়ে দাঁড়িয়ে
লিখে রাখছে আগামীর ইতিহাস
ভাঙাচোরা অক্ষরের মতো নেমে আসছে ঢেউ
রাত জেগে নদীর থেমে যাওয়া দেখেছি
কান্নার ভোর
আমি ঘুমাইনি বহু যুগ
বিস্ফোরণের আশীর্বাদ
এগিয়ে চলেছে চালকবিহীন দ্বিচক্রযান