শেখ শরীফের তিনটি কবিতা
বুড়িমার চাঁদের গল্প
আশৈশব আশ্চর্যান্বিত হয়ে ভেবেছি চাঁদের শরীরের মিষ্টি গন্ধের কথা। আশ্রয়প্রার্থী সেজে আসমানি গল্প শুনতে একছুটে চলে গেছি গ্রামের ওপারে একলা বুড়িমার কাছে। নিরালায় কাছে বসে যে সতত শোনায় শত বছর আগের আশ্রমী কিংবা বুড়ো পাকুড় গাছের গল্প; বোকার মতো বার বার নকল করতে ইহজীবনে কতবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি বলতে কিন্তু পারিনি! গালে হাত রেখে চাঁদের বুড়ির সুতা কাটার গল্প প্রতিবার শুনেছি নতুনরূপে। মাঝে মাঝে ভেবেছি কতখানি কথার জাদু জানলে কালরাত্রি কালোমেঘের আড়ালের একটুকরা ধলাচাঁদের গল্প বলা যায় এভাবে।
লুইপার আদিবিদ্যা
আয়তাল কুরসির পাঠ নিয়ে মৃত্যু দৌড়ে পালায় মাটির খোলস ছেড়ে উজানের দিকে। রাজদরবারে পৌঁছে গিয়ে নালিশ করে রাজস্ব আদায়ে কতটা রাজদ্রোহী হয়েছে শবদেহের অধিকারী এ শবাত্মা। লোকারণ্যে শক্তিশেল হেনে শূন্যদেশে কতজনকে সটান পাঠিয়েছে সে গ্রহদেবতার কাছে! আসলে মুদ্রাবিজ্ঞানের রহস্য আবিষ্কারে যে পুরুষ মুনিব সেজেছে মুষ্টিভিক্ষা সাজে না তার করে জান্নাতি দরজা। সমাধি ফলকে লিখিত আছে লুইপাদের গুপ্তরহস্যের আদিবিদ্যা ।
সন্ধ্যানী প্রেমিকপুরুষ
সন্ধ্যাভাষায় কথা বলা বারণ সন্ধ্যানী প্রেমিকপুরুষ। সন্ধ্যারাগ সাবলীল ভাবে গাইতে গিয়ে চোখে লাগে লোবানের গন্ধ। শরীর থেকে কামঘ্রাণ কামগন্ধ অঘ্রাণের ধানের শিষের মতো নাকে লাগে। দরখাস্ত হলুদ খামে পৌঁছিবে না জেনেও অপেক্ষারত অপরাধী পুরুষ কুদরতি কায়দায় চেয়ে থাকে। দয়িতা চিঠি দিয়েছে-আসছে ফাল্গুনের উৎসবে ধূপপাত্রে ধূপমুদ্রার নৃত্য তুলে চলে যাবে হাত ধরে অন্য কারো অন্য কোথাও।