দ্রোহের কবিতা নিয়ে দর্পণের একটি বিশেষ সংখ্যা ‘অগ্নিফুল’, সংখ্যাটিতে প্রকাশিত আশিক আকবরের পাঁচটি কবিতা—
আমার ক্ষুধা,
আমার আলস্য,
আমার বাস্তবের কবিতা,
আপনাকে ক্ষুদ্ধ, বিক্ষুদ্ধ, ক্রোধান্বিত করতে পারে।
করতে পারে কান্না কাতর, বিমর্ষ, দুঃখিত ও ব্যথিত।
আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, ঘেন্না করুন, এবং এবং ভালোবাসা থেকে দূরে থাকুন।
ভালোবাসলে কবি মরে যায়।
ভালোবাসলে কবি আত্মহত্যা করে।
ভালোবাসলে কবিদের পৃথিবী অন্য কারো হয়ে যায়।
তারচে’ কবিকে জেলে পুরে দিন।
তারচে’ কবিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করুন।
তারচে’ তাকে নিরুদ্দেশের শিরোপা দিয়ে নাই করে দিন।
কবি মরুক।
না খেয়ে, না ধেয়ে, না প্রেমে মরুক।
মরুক. অর্থ বিত্ত পদ পদবী পুরস্কারে মরুক।
ত্যাগে
মরুক
কবি,
ভোগেও মরুক।
কবিরা এ পৃথিবীর নয়, অন্য পৃথিবীর।
তারা ওখানেই যাক। তাদের ওখানেই যেতে দিন।
ক্ষুধা থাকুক,
অপ্রেম থাকুক,
থাকুক বাস্তবের চাছাছোলা কবিতা।
একটি আত্মহত্যা,
আকাশের অনেক দরোজা খুলে।
সেটি কবির হলে,
কোকিলেরা ঋতু ভুলে শুরু করে গান।
সৌরভের আত্মহত্যার দায়,
সর্বহারা মাওবাদীরাও কিঞ্চিৎ কাঁধে নিলে,
পেটি বুর্জোয়াপনা বলে পাশ না কাটালে,
আত্মহত্যার আকাশের তারাগুলি খুঁজে খুঁজে বের করলে,
সারবস্তুর সারসংকলের পরেও,
সারফেসের মাথা মোটাদের গালে চটকনা মেরে যদি বলা যেতো,
ওরে বাঞ্চোত মাওবাদী,
তগো কবি আত্মহত্যা করে ক্যান?
চার চারটে বৎসর কবির সাথে মার্চ করে,
তোরা ওকে আত্মহত্যা শিখালি?
বিপ্লবী আত্মদান আকাশের
শাদা মেঘে,
কালো মেঘে ঢাকতে ঢাকতে!
তাহলে আসন্ন আত্মহত্যাকারী কবি ফিরে তাকাতেন,
প্রিয় কলমের মুখ থেকে অজস্র কবিতার গুলি ছুঁড়ে দিতেন,
যাতে কার্ল মার্কস,
আবার জেনির জন্য কবিতা লিখতে পারেন।
এবং স্বগর্বে বলতে পারেন,
গৃহপরিচারিকার কোলের কন্যাটি আমার।
কিচ্ছুই থাকলো না আমার
বাচ্চা কুকুর
কর্ক মুরগী
বিড়াল ছানা
জোড়া খরগোস
বকরির বাচ্চা
অ্যাকোরিয়ামের মাছ
কেনা কবুতর
কেনা পাখি
কোয়েল
অনেক অনেক হাঁস
থাকার মধ্যে পড়ে আছে লোহার খাঁচাটি
যার মধ্যে ঐ না থাকাদের কেউ কেউ থাকতো
আমাদের ঘরে খাবার নেই
আমরা আমাদের রান্না করে খাই
শে আমাকে
আমি তাকে
আগুনে পুড়িয়ে রান্না করে খেয়ে খেয়ে
খাটিয়াতে শুয়ে শুয়ে কবর খানার দিকে যাই
শে আমার খাটিয়া বানায়
আমি তার
পৃথিবীর কাঠুরিয়া আমরা
গাছ কাটি
গাছ
শে একটা হালকা পাতলা সুন্দরী গাছ
আপাততঃ তার ফুসফুসে একটা কোপ মেরে
হৃদপিণ্ডে একটা কোপ খেয়ে
তারার আকাশে যাওয়ার তীব্র অপেক্ষা করছি
আর আর নিজেরা নিজেদের রান্না করছি
যাতে খাওয়া চলে
পেট ভরে
পারিবারিক গোরস্থানের মাটি কয়েক বৎসর ধরে ক্ষুধার্ত
এক কাপ চা
না চা দিও না
এক কাপ ডবল চিনির কফি দাও
কফির দামটা রাখো
আর এই দশ টাকা রাখো চায়ের দাম
এটা চা শ্রমিক আন্দোলনের লড়াকুদের পাঠায়ে দিও
আমার ফোর ফাদার চা পান করেছে
আমার পিতার বাবা চা পান করেছে
চা পান করেছে আমার মৃত পিতা মাতা ভাই
আমি ওদের চায়ের ঠকানো শ্রমিকদের পয়সা পরিশোধ করছি
আমি আন্দোলন টান্দোলনে নাই
আপাততঃ ওদের পিতৃভূমিতে ফিরিয়ে দেবার প্ল্যান করছি
অনেক অনেক ঋণ আমার ওদের কাছে
চা খাবো না
চা পানও করবো না
ডবল চিনির কফি পান করবো
মাঝে মাঝে পান করবো অতি ধীরে গাউআ
চা এখন প্রলেতারিয়েতদের পেয় পানীয়
এখন কফির কাল
নানা দেশের নানান মাজেজার পানির কাল
চলুন চা শ্রমিকদের ভূর্তুকি দিআ ওদের দেশেই ফিরাইআ দিআ আসি
আর আর নিজের আঙ্গিনায় দুই একটা চা গাছের ঝোপ রাখি
নিজের চা পাতা নিজেই তুলি
নিজেই বানায়ে পান করি নিজের গাছের চা
জয় জয় চা হীন মহৎ কবিতার জয়
চা শ্রমিকরাই আমাদের চন্দ্রে নিআ যাবে
গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলতে আমি ও আমরা চা শ্রমিকদের মধ্যে আসছি
আমরা চন্দ্রে যাবো
পুরো ভারতবর্ষ দখল না করা নাগাদ ওখানেই থাকবো
চলো
জন্ম যোদ্ধা ক্ষত্রিয় ও প্রিয় মাঠের জেনারেল
চলো
শ্রমিকদের ভর কইরা চন্দ্রে যাই
ওখানে চাদের কুমারী কন্যার সাথে আমাদের বিয়ে
আসছে ওর রজঃস্বলা কাল
দেশে দেশের ফালতু পতাকা দিআ দিআ ওর মাসিকের তেনা বানাবো
চুদবো না জাতীয়তাবাদ আপাতঃ স্বাধীনতা