মুখের বিজ্ঞাপন তোমাকে বিভ্রান্ত করবে, মানুষের মন কিন্তু লোহালক্কড়ে ভরপুর; অতএব শুদ্ধতার খোঁজে তুমি ঢুকে পড়বে যন্ত্রাংশের শরীরে, ওরা তোমার জ্যুসে সন্তরপণে মিশিয়ে দেবে নিদ্রাজনিত সিরাপ। অতঃপর যে হাত তোমার টলতি কোমর ছোঁবে সে হাত, হাত নয়,
গিরগিটির লেজ;
জানবে, প্রতিটি বিজ্ঞাপনই– ভাউতাবাজির ফর্দ।
চোখের কথা– শুনবে না,
কেবল কিছুক্ষণ– দৃষ্টি অন্ধ হও|
তুমি এই কুরসি’তে এসে বসো যা আমার পাঁজর থেকে তৈরী। এসো আমার ক্ষুধার ভেতর নরম পায়ে। তোমার
জন্যই উনসত্তর পাথর ছুঁড়ে আমার বক্ষ থেকে সাতজন্মের সেইসব শয়তান তাড়িয়েছি যা আমকে তোমার থেকে বিচ্যুত করে নিয়ে যায় নটি পাড়ায়, উলঙ্গ যুবতীর নিটল নিতম্বের দিকে ধাবিত করে। যা আমাকে একনিষ্ঠ প্রেমিক হতে দেয় না, সেই আমাকে মৃত্যুবদি দোররা ছুঁড়ে রক্তাক্ত করে আজ আমি–
নিঃষ্পাপ শিশু।
যেহেতু তোমার হামির ভেতর থেকে আমার যৌবনদীপ্ত
পৌরুষের জন্ম,
যেহেতু তোমার পা-এর দিকে গমন করে আমার
সর্বশেষ দৌরত্ব,
যেহেতু আমার হৃদতন্ত্র– চলমান তোমার সভ্যতায়,
সেহেতু জানবে, আমি শুধু জন্মেছি তোমার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। ধ্যানে-জ্ঞানে আমি সম্পূর্ণ সেবাপরায়ণ– তোমার শুশ্রূষায় নিবেদিত প্রাণ। আমি এখন প্রণয়বিভোর– তোমার কপালে নিমগ্ন সজাগ আঙুল। আমি তোমার জন্য সিজদাহয় পড়ব ঈশ্বরের পায়ে। তোমার নাম জপে–
সিদ্ধিলাভ করবো প্রেমিকের;
আমি কি তোমাকে বলিনি মানুষেরা– পুনঃজন্মে ঘাস হবে? আমার পচাগলা গতরের ভেতর তোমার নামের বীজ থেকে মাথাচাড়া দেবে শিমুলগাছ, যদি বাঁচি, বেঁচে থাকতে হয়, অথবা মৃত্যুকে প্রেমিকার ছুরির মতন বুক পেতে দিতেও হয়—
অন্তরে তুমি, রক্তে– শিরা ও উপশিরায়, ভেতর-বাহিরে তুমি, আর কোনো আরাধনা নেই আমার।
আমাকে ওরা কাফের হিসেবে আখ্যায়িত করবে কেন?
প্রেমিককে প্রশ্নের বাণে জর্জরিত হয়ে যীশুর মতন আজীবন দণ্ডে ঝুলিয়ে রাখবে কেন?
ধর্মের বহুআগে কী প্রেমের উত্থান নয়?
বরং ধর্ম এসে পতনের সুর বাজাচ্ছে | প্রেমকে লজ্জার ভূষণ পরাতে চাইছে, অথচ সঙ্গম চিরকালীন সর্বত্ত্ব বিরাজমান…
পাতারা– পাতায় লেখে চুমুর আবেদন
ফুলেরা সঙ্গমলিপ্ত হবে বলে ডাকবাক্স খুলে রেখেছে…
তোমার-আমার মধ্যরাতের মহামিলিত আহবান থেকে বুদবুদ ফুটছে–
একটি ভোর।
বলো ধর্ম নাকি প্রেম– আমি কার পায়ে মাথা নত হবো?