প্রত্যয় হামিদের চার কবিতা
সব মানুষের চোখ থাকে না
সব চোখে তো পায় না আলো
অচিন শহর অচিন মানুষ
কিছু আলো ছড়ায় কালো।
সব আলো তো হয় না ভালো।
এই মনে যে কী আছে, নাই
কী ভেবে রোজ সময় কাটাই!
বাইরে কারোই মন আসে না
যা আসে তা মুখোশ-আলো।
কিছু আলো ছড়ায় কালো।
আলোর সাথে সন্ধি করি
মিথ্যে আলোর বেসাত গড়ি
মুছে দিয়ে ভোর অবেলায়
দিন ফুরালেই রাত্রি ভালো।
সব আলো তো হয় না ভালো।
অচিন শহর অচিন আলো
সেই আলোতে চোখ অচেনা
নিজেই যখন সাজছি কানা
সকল আলোই ছড়ায় কালো।
দিন ফুরালেই রাত্রি ভালো।
সব আলো তো হয় না ভালো।
বহু বহু যুগের সাধিত অর্চনা
অতঃপর আলো হয়ে
প্রতিষ্ঠা পেল এই রাতে…
সে আলো
পূর্ণতা দিল বলে
দিনগুলো পেল দিব্যজ্ঞান
রাতের রন্ধ্রে রন্ধ্রে
বিকশিত এখন আলোর ঘ্রাণ-
পথে পথে সুখমিছিল…
অর্চনা প্রাণ পেলে
মোনালিসা নেমে আসে
মানুষ-অস্তিত্বে।
রঙিন শব্দে মোড়ানো আমার দেশ
চারিদিকে ছড়িয়ে তার
বহু বহু রঙ।
আমি সেসব রঙ শুনতে শুনতে
ঘুরে আসি চর্যাপদেরও আগের সময়।
দেখে আসি
হাতে হাতে নিপুণ শব্দ
গলায় গলায় রঙের সুর
পায়ে পায়ে শব্দের নাচন।
পথে পথে কত কত রঙের সাথে
দেখা হয়ে যায়–
সাদা, গেরুয়া, লাল বা হলুদে
আমি কোনো ফারাক দেখি না
অথচ কী ভীষণ ভিন্ন ভিন্ন রঙ
কী ভীষণ আলাদা সুর
সেসব সুর মিলেমিশে রঙ ছড়ায়
দেশের জল ও জমিনে
আবহকাল…
“আমার সোনার বাংলা” তুমি
শব্দরঙে এক পবিত্র ভূমি!
ভাবো তুমি- শব্দ মাত্র, আর তো কিছু নয়
বদলে গিয়ে শব্দ সে তো অনেক কিছু হয়!
একটিমাত্র শব্দ তোমার, হলে অভিশাপ
কেমনে পাবে তুমি তোমার নিজের কাছে মাফ।
একটিমাত্র শব্দে তুমি খুন করেছ রাত
দিন শুধু নয়, ভালোবাসার পবিত্র দুই হাত।
একটিমাত্র শব্দ তোমার এফোঁড় করে ঘুম
ওফোঁড় করে স্মৃতিগুলো, ভালোবাসা গুম।
একটিমাত্র শব্দ তোমার ক্ষুরের বেশি ধার
ফলা চাবুক ছুরি কিরিচ– সব মেনেছে হার।
একটিমাত্র শব্দ তোমার নিঘুম করে কাল,
শব্দে শব্দে অস্ত্র গড়ো, আমি নীরব ঢাল!