মো. রেজাউল করিম
১৯৬৪ সালে কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান-এ স্নাতকোত্তর পর্ব শেষ করেন। শিশু সাহিত্য ও কথাসাহিত্য নিয়ে কাজ করেন। প্রকাশিত উপন্যাসগ্রন্থ: অনাবাসী, আমার বান্ধবীগণ, আয়নাল হক উপাখ্যান।
মো. রেজাউল করিম

উপন্যাসাংশ: “অনাবাসী” // মো. রেজাউল করিম

বার পড়া হয়েছে
শেয়ার :

মো. রেজাউল করিম একজন শিশুসাহিত্যিক এবং কথাসাহিত্যিক। “অনাবাসী” তাঁর তৃতীয় উপন্যাস। রোহিঙ্গাদের জীবন নিয়ে লেখা উপন্যাসটিতে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের নানা কথা উঠে এসেছে। ব্যবহৃত হয়েছে মংডুতে প্রচলিত কিছু বিশেষ শব্দ। লেখক মায়ানমার ভ্রমণের তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে উপন্যাসটির কাহিনি রচনা করেছেন। বিশেষ করে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর মগ-সেনাদের নিপীড়ন  ও তাঁর ফলস্বরূপ রোহিঙ্গাদের জীবনের নিয়তির কথা অনাবাসীতে উঠে এসেছে। উপন্যাসটির কিছু অংশ পাঠকদের জন্য দর্পণে উপস্থাপন করা হলো। উপন্যাসটি রকমারি থেকে আপনারা সংগ্রহ করতে পারবেন।


নিউ আরাকান রেস্তরাঁয় সকালের নাস্তা চলে বেলা দশটা পর্যন্ত। এরপরেই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন শুরু হয়ে যায়। বারোটা থেকেই মধ্যাহ্নভোজের পর্ব শুরু হয়, চলে দুপুর দু’টো পর্যন্ত। রেস্তরাঁর পাচক ইয়াকুব মিয়া ভোর ছ’টা থেকে টানা দুপুর আড়াইটা অবধি কাজ করে। এর পরে বিকেল পর্যন্ত বিশ্রাম। সাঁঝের আঁধার নামতে না-নামতেই রাতের খাবারের যোগাড়-যন্তরে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। রাতের খাবার চলে সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে আটটা অবধি। দুপুর বেলাটা সে রেস্তরাঁর রসুইঘরের এক কোনায় ছোট্ট এক বিছানাতে ঘণ্টা খানেকের জন্য গড়িয়ে নেয়।

ইয়াকুব মিয়ার রান্নার সুখ্যাতি আছে। এ কারণে নিউ আরাকান রেস্তরাঁয় খদ্দেরের কমতি নেই। মালিক জামিল হোসেন ইয়াকুব মিয়ার সমবয়সীই- বয়স ত্রিশের কোঠায়। জামিল হোসেন ইয়াকুব মিয়াকে বেশ সমঝেই চলে। রান্নায় তার সুখ্যাতি, সময়ানুবর্তিতা, আচার-ব্যবহার কোনো কারণেই তাকে অপছন্দ করার কারণও নেই।

রেস্তরাঁর রসুইঘরে দুপুর বেলায় ঘুমিয়ে নেয়া ইয়াকুবের দীর্ঘদিনের অভ্যেস। গরমের সময়ে এ ঘরে ঘুমানো খুবই কষ্টের। তবুও অভ্যেস বলে কথা। গরমের সময়ে অবশ্য মাথার কাছে ছোটো টেবিল ফ্যানটা ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে নেয়।

সবকিছু গোছগাছ করে বিছানায় উঠে বসতেই মালিককে রসুইঘরে ঢুকতে দেখে বিস্মিতই হলো। তাঁর দিকে তাকিয়ে ইয়াকুব আঁচ করল কিছু একটা হয়েছে। জামিল হোসেনের মুখ থমথমে, চিন্তাযুক্ত।

বিছানা থেকে ইয়াকুব মিয়া নেমে দাঁড়িয়ে বলল, ‘ভাইজান কিছু বলবেন?’

‘ইয়াকুব খবরতো সুবিধার না। বুঝতে পারছি না আবার কী হয়?’

‘কেন ভাইজান, আবার কী হলো?’

‘কাল রাতে শহরে শত শত বর্মী সৈন্য এসেছে। শোনা যাচ্ছে ‘রোহিঙ্গা ইনন্ডিপেন্সি ফ্রন্ট’ এর বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবে তারা।

‘ভাইজান, তাদের সাথে আমাদের তো কোনো সম্পর্ক নাই। আমাদের এত চিন্তার কী আছে?’

‘না-রে ভাই, চিন্তা করার অবকাশ অবশ্যই আছে। পুলিশ তো সবসময়ই তাদেরকে খোঁজাখুঁজি করছে। তাতে আমাদের কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এত সৈন্য তো খামাখা আসেনি। শুনছি তারা নাকি গ্রামে-গ্রামে তল্লাশী করবে। কেউ বলছে সৈন্যরা এসেছে আমাদেরকে দেশছাড়া করতে।’

‘বুঝলাম না ভাইজান। দেশ ছেড়ে আমরা কোথায় যাব? আমরা কি লন্ডন, আমেরিকায় চলে যাব; না যাওয়ার ক্ষমতা আছে?’

‘শোনো ইয়াকুব, নিরাপত্তার কারণে সেই ’৪৭ এর পর থেকে বুথিডং-এর অনেক রোহিঙ্গা মঙডু চলে গেছে। নয়-ছয় দেখলে কয়েক কিলোমিটার দৌড় দিয়েই তারা বাংলাদেশে চলে যাবে। কিন্তু আমি পরিবার-পরিজন নিয়ে জন্মভিটায় থাকতে চেয়েছি। সেটাই বোধ হয় ভুল হয়ে গেছে। আজ সন্ধ্যায় রেস্তরাঁয় খাবার বিক্রি হবে না। গ্রামে পরিবারের কাছে চলে যাও। প্রস্তুত থাক। মঙডু চলে যাওয়া লাগতে পারে।

মালিকের নির্দেশ শুনে ইয়াকুব মিয়া কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। মানসপটে ভেসে ওঠে বাপ-দাদার কাছে শোনা রোহিঙ্গাদের ওপরে বর্মী মগদের নির্যাতনের নির্মম-নিষ্ঠুর কত কাহিনী। জ্ঞান হওয়া অবধি বর্মীদের অবিচার-অনাচার-অত্যাচারের মধ্য দিয়েই জীবন অতিবাহিত হয়েছে। আর কত সহ্য করা যায় মাতৃভূমিতে এমনতরো জীবন। বুথিডং শহর থেকে ছয় কিলোমিটার পূর্বে মেপিডং গাঁয়ে তাদের বসবাস, গাঁয়ের প্রায় সকলেই রোহিঙ্গা। অল্প কিছু বৌদ্ধ রাখাইনও আছে। তারা বেশ ধনী। গাঁয়ে কোনো স্কুল নেই। রোহিঙ্গারা নিজেরাই মাদ্রাসা তৈরি করে নিয়েছে। ইয়াকুব সেখানেই যৎসামান্য লেখাপড়া করেছে।

ইয়াকুব আর দেরি না করে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। বাসায় তার ছোটো দু’টো বাচ্চা। বড়োটা ছেলে, হালিম মিয়া। ছোটোটা মেয়ে, ফাতিমা খাতুন। ওরা তো এত ছোটো যে ওদেরকে এসব কথা বলার কোনো অর্থ হয় না। তবে স্ত্রীকে বলল সব কথা, ‘মালিক জামিল জানালেন বর্মী মিলিটারি যখন নেমেছে নিশ্চয় রোহিঙ্গাদের ওপর বড়ো ধরনের হামলা করবে। গোছগাছ করা, টাকা পয়সা যোগাড় করার জন্য আজ রাতটা থাকতে হবে গো। কাল সকালেই মঙডুর উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।’

সেই রাত তাদের জীবনে এল কালরাত হয়ে। হালিমকে ইয়াকুব বলেছিল তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে। খুব সকালে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। ঘুমানোর আগে হালিম ঘর থেকে খানিকটা দূরে পায়খানাতে গেল। তখন বুঝি-বা রাত ন’টা হবে। গোটা গ্রামেই হৈ-হুল্লা শুরু হলো। গুলির শব্দ অবিরাম। গুলির শব্দ আরও নিকটবর্তী হলো। ঘরে তখন বাবা, মা আর ছোটো বোন। হালিম তখনও উঠোনের শেষ মাথায়- পায়খানাতে। তাদের বাড়ি ছিল পুরোটা কাঠের, তবে মেঝেটা ছিল মাটির। তল্লা বাঁশের চাটাই আর কাঠের বন্ধনী দিয়ে বাড়ির চারদিকে বেড়া দেয়া ছিল। সদর দরজাটি ছিল পুরোটাই কাঠের।

কারা যেন দরজায় লাথি দিচ্ছে- কিছুক্ষণের মধ্যেই দরজাটি ভেঙে পড়ল। ভয়ে হালিম পায়খানার মধ্যে হেরিকেনটা নিভিয়ে ফেলল। ক্ষণপরেই সে তার বাবার চিৎকার শুনতে পেল। তাকে বোধহয় পেটাচ্ছে। কারা যেন গুলি করছে। বাড়ির মধ্যেই কি? ছোট্ট হালিম কিছু বুঝে উঠতে পারল না। বাবার আর্তচিৎকার শুনতে পেল। মায়ের কান্না কানে এল। আরও ঘণ্টাখানেক পায়খানাতে বসেই মায়ের গোঙানি শুনতে পেল। ভয়ে হালিমের বাক্শক্তি লোপ পেয়েছে। সে বোধ হয় চেতনাও হারিয়েছিল, নাকি ঘুমিয়ে পড়েছিল- মনে নেই।

অসংখ্য মানুষের কোলাহল কানে এল যখন, তখন পুব আকাশে আলো দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনকার মতোই পাখপাখালি কিচির-মিচির শব্দে তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে।

সাহস করে হালিম পায়খানার দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এল। ছোট্ট হালিমের জন্য অপেক্ষা করছিল ভয়ঙ্কর-ভয়াবহ এক পরিবেশ। বাড়ির উঠোনে দুই হাত, দুই পা ছড়িয়ে পড়ে আছে তার প্রিয় বাবা। বাবার চারপাশ রক্তে সয়লাব। বাবা তার নিতান্তই নিরীহ গোছের মানুষ। শহরে হোটেলে পাচকের কাজ করে। শহরে রেস্তরাঁ আর বাড়ি, এই-ই ছিল মানুষটার পৃথিবী। পৃথিবীর কিছু নীতিভ্রষ্ট-নীলকণ্ঠ মানব নামধারী দানবের নিষ্ঠুরতা-নীচতা একজন নীতিনিষ্ঠ-নিরীহ-নির্বিরোধ মানুষকে নিসর্গের বুকে নীরব-নিস্তব্ধ-নিস্পন্দিত করে দিয়েছে। তার দু’বছরের বোন ফাতিমা বড়ো ঘরের দরজার সামনে হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে আছে। তার শরীরের পাশে ক্ষীণ ধারায় রক্তের প্রবাহ শুকিয়ে জমাট বেঁধেছে।

মা, মা কোথায়? ফাতিমার শরীর ডিঙিয়ে হালিম ঘরে উঠে তাকিয়েছে মাত্র। ঘরে ঢোকা আর হলো না তার। না- ফেরার দেশে চলে যাওয়া মায়ের মুখটাও দেখা হলো না। মা-জননীর শরীরে কাপড়ের লেশমাত্র নাই। সারাটা শরীর ধারাল ছুরির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত-রক্তাক্ত।

হালিম বুঝে ফেলল পালাতে হবে। গাঁয়ের লোকজন বাক্সপেটরা নিয়ে চলে যাচ্ছে- কোথায়, কে জানে? হালিম আর দেরি করেনি। দৌড়ে পাঁচিলের ওপাশে চাচার বাড়িতে চলে গেল। সেখানে কেউ নেই। আবার গাঁয়ের রাস্তায় চলে এল। মাদ্রাসার এক তরুণ হুজুর আবুল হাশিম দৌড়াচ্ছেন। হুজুর জিগ্যেস করেন, ‘তোর বাবা-মা কোথায়?’

‘সবাইকে মেরে ফেলেছে।’

‘আয় আমাদের সাথে। আমরা বাংলাদেশে পালিয়ে যাব।’ সেই প্রথম বাংলাদেশের নাম শুনল হালিম।

হুজুর হাশিম সকলকে নিয়ে রাখাইন এক অটোচালকের অটোতে করে বুথিডং টাউনশিপ* পুলিশ স্টেশনে উপস্থিত হলেন। বোরকা পরা মহিলা দেখেই পুলিশ চিনেছে এরা রোহিঙ্গা। গেটেই তাদেরকে আটকে দিল পুলিশ; বলল, ‘পালাও, পালাও। এখানে আসতে হবে না, মরবে।’

পুলিশ স্টেশনে আর ঢোকা হলো না।

টাউনশিপ: জেলার অধঃস্তন প্রশাসনিক ইউনিট। বাংলাদেশের উপজেলার সাথে তুলনা করা যেতে পারে।

ঐ অটোতে করেই হাশিম সকলকে নিয়ে বুথিডং শহরের কাছে বৌদ্ধ ধর্মশালাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেলুনে ঢুকে দাড়ি কেটে ফেললেন। হাশিম তার স্ত্রীকে বোরকা খুলে ফেলে দেবার নির্দেশ দিলেন। বৌদ্ধ ধর্মশালার প্রধান তিন থেন তাঁর পূর্বপরিচিত। দিনের বেলাটা তাঁর আশ্রয়ে থাকাটাই নিরাপদ হবে বলে মনে হলো হাশিমের।

সকলকে অটোতে বসিয়ে রেখে হাশিম তিন থেনের সাথে দেখা করল। দাড়ি কেটে পাজামা-পাঞ্জাবী ছেড়ে সার্ট ও বর্মী লুঙ্গিতে মাদ্রাসা হুজুরকে চিনতে ভান্তে* তিন থেন-এর কষ্টই হচ্ছিল ঝুঝি-বা।

সব শুনে তিনি বললেন, ‘আমি সরকারের-বিরোধী কোনো কাজ করতে পারব না। তুমি কোথায় যাবে তা তুমিই ঠিক করো। তুমি এখনি চলে যাও।’ তিন থেন আবারও পবিত্র গ্রন্থ পড়তে শুরু করলেন, বুদ্ধের বাণী- ‘ভালো কাজ সবসময় কর। বারবার কর। মনকে সবসময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখ। সদাচরণই স্বর্গসুখের পথ।’

হাশিম কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ধর্মশালা থেকে বের হয়ে এল।

ধর্মশালার সামনে দেখা হলো তাদের গাঁয়েরই জিপচালক উথান-এর সাথে। উথান এখন শহরের কাছেই থাকে। বেশ বয়সী, সন্তানাদি নাই। ধর্মশালার সামনেই সে দাঁড়িয়েছিল ভাড়ার অপেক্ষায়। ক্লান্ত-অবসন্ন-হতাশ চেহারায় ধীর পদক্ষেপে হাশিমকে এগিয়ে আসতে দেখে উথানের মনে হলো ধর্মশালা প্রধান হুজুরকে জায়গা দেননি। বাক্সপেঁটরা নিয়ে যেহেতু অন্যত্র চলে যাবার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছে তার কাছে টাকা-পয়সাও নিশ্চয় রয়েছে।

হাশিম উথানের কাছে এসে এমনভাবে তাকাল যেন সে-ই পারে এখন তাকে উপযুক্ত বুদ্ধি দিতে। বেলা বাড়ছে। শহরে লোক সমাগমও বাড়ছে। এভাবে বউ-বাচ্চা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোটা নিরাপদ না। উথানই আগ বাড়িয়ে জিগ্যেস করল, ‘কোনো ব্যবস্থা হলো?’

হাশিম বলল, ‘না কোনো ব্যবস্থা হয়নি। ধর্মশালায় থাকা যাবে না।’

‘আমি তোমাকে একটা পরামর্শ দেই। তুমি আমার বাসাতেই চলো। আমার তো ছেলেপুলে নেই। একটা অতিরিক্ত ঘর আছে। সেখানে থাকবে। থাকা-খাওয়ার খরচ দিতে হবে। রাস্তাঘাট সুবিধাজনক মনে হলে তোমাকে জানাব। আমার জিপে করে যতদূর দিয়ে আসা যায় দিয়ে আসব। তার আগ পর্যন্ত আমার বাসাতেই লুকিয়ে থাকবে। অবশ্য তুমি যদি আমাকে বিশ্বাস করো।’

হুজুর উথানের দুই হাত চেপে ধরলেন। বললেন, ‘চলো ভাই। আমি আর গ্রামে ফিরতে চাই না। চলো তোমার বাসায়।’ হুজুরের গলা তখন কাঁপছে।

জিপে ওঠার সময় হাশিম খেয়াল করল, হালিম গুটিসুটি মেরে বসে আছে। সকালে হাত-মুখ ধোয়া দূরের কথা, পেসাব-পায়খানাও বোধ হয় করেনি। কারোর পেটেই দানা-পানি পড়েনি। ছেলেটা বাবা, মা, বোনের রক্তস্নাত মৃতদেহ দেখেছে। কেমন উদ্ভ্রান্ত নয়নে তাকিয়ে আছে। বাচ্চা ছেলে, ওর মনে কী ধরনের ঝড় বয়ে যাচ্ছে কে জানে! হাশিমের স্ত্রী একহাতে তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।

বাচ্চাদের আবেগ বোধ হয় কম থাকে। বড়ো মানুষ হলে নিশ্চয় এতক্ষণে অধীর-অস্থির-অশান্ত হয়ে পড়ত। কান্নাকাটি করত। অবোধ শিশুটি ভয়ে এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়েছে যে, কান্নাকাটি করার শক্তিও ওর মধ্যে অবশিষ্ট নেই। বাচ্চা ছেলেটার মনের খবর জানা সম্ভবও না তখন…

ট্যাগসমূহ

magnifiercrossmenu